ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,১২ এপ্রিল : উচ্চ আদালত প্রাঙ্গণের সামনে স্থাপিত গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরানোর পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এটা এখানে থাকা উচিত নয়।’ তিনি আরও বলেছেন, এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বসবেন। তাকে এটি সরানোর অনুরোধ করবেন।
মঙ্গলবার রাতে গণভবনে আলেমদের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন। কওমি মাদ্রাসা সনদের স্বীকৃতি ঘোষণা করতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আলেমদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরানোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী তার ওপর ভরসা রাখতে আলেমদের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের হাইকোর্টের সামনে গ্রিক থেমেসিসের এক মূর্তি লাগানো হয়েছে। সত্য কথা বলতে কি, আমি নিজেও এটা পছন্দ করিনি। কারণ গ্রিক থেমেসিসের মূর্তি আমাদের এখানে কেন আসবে। এটাতো আমাদের দেশে আসার কথা না। আর গ্রিকদের পোশাক ছিল একরকম, সেখানে মূর্তি বানিয়ে তাকে আবার শাড়িও পরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটাও একটা হাস্যকর ব্যাপার করা হয়েছে। এর কী মানে!
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা কেন করা হলো, কারা করল, কীভাবে—আমি জানি না। ইতিমধ্যেই আমাদের প্রধান বিচারপতিকে আমি এই খবরটা দিয়েছি এবং খুব শিগগিরই আমি ওনার সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে বসব। আলোচনা করব এবং আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এটা এখানে থাকা উচিত নয়।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি আপনাদের বলব আপনারা ধৈর্য ধরেন। এটা নিয়ে কোনো হই চই নয়। একটা কিছু যখন করে ফেলেছে সেটাকে আমাদের সরাতে হবে। সেটার জন্য আপনারা একটুকু ভরসা অন্তত রাখবেন যে, এ বিষয়ে যা যা করার আমি তা করব।
এর আগে আলেমদের প্রতিনিধি যারা বক্তব্য দেন সবাই আদালত প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরানোর দাবি জানান। তারা বলেন, এটা আমাদের বাংলাদেশি সংস্কৃতির সঙ্গে যায় না।
গত ডিসেম্বরে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে একটি দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়। সুপ্রিম কোর্টে মূলভবনের সামনে ফোয়ারার মধ্যে এটি স্থাপন করা হয়। ভাস্কর্যটি নির্মাণ করছেন ভাস্কর মৃণাল হক।
প্রসঙ্গত, ভাস্কর্যটি একজন নারীর। তিনি দাঁড়িয়ে আছেন। তার ডান হাতে তলোয়ার বাম হাতে দাঁড়িপাল্লা। তলোয়ারটি নিচের দিকে নামানো। দাঁড়িপাল্লা উপরে ধারণ করে আছেন। মৃণাল হক বলেন, ‘সারা বিশ্বেই এটি বিচার বিভাগের প্রতীক। তবে অন্যান্য দেশে স্থাপিত ভাস্কর্যর সাথে আমাদের দেশের ভাস্কর্যের একটু পার্থক্য রয়েছে। অন্যান্য দেশে ভাস্কর্যের গায়ে স্কার্ফ পরা থাকলেও এখানে শাড়ি পরানো হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য দেশে পায়ের নিচে সাপ থাকলেও এখানে এটি বাদ দেয়া হয়েছে।
এই ভাস্কর্যটি স্থাপনের পর থেকেই এটাকে ‘মূর্তি’ আখ্যায়িত করে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে ধর্মভিত্তিক দলগুলো। তাদের দাবি, যে দেশের ৯০ ভাগ মুসলমান সে দেশে গ্রিক দেবীর মূর্তি কখনো ন্যায়বিচারের প্রতীক হতে পারে না। তারা এটা অপসারণ করে কোরআনের ভাস্কর্য বসানোর দাবি জানান।