ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,বগুড়া প্রতিনিধি,০৩ মার্চ : বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসককে আপা বলে ফ্যানের সুইচ কোথায় জানতে চাওয়ায় এক রোগীর স্বজনকে মারধর, কান ধরিয়ে ওঠবস এবং পায়ে ধরাতে বাধ্য করার ঘটনায় ৪ ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানান, চার অভিযুক্তের ইন্টার্নশিপ স্থগিত থাকবে ছয় মাসের জন্য। এরপর তাদের প্রত্যেককে আলাদা ভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষানবিশ সময়কাল শেষ করতে হবে।
এর মধ্যে ডা. নূরজাহান বিনতে ইসলাম নাজকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ডা. মো. আশিকুজ্জামান আসিফকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, ডা. মো. কুতুবউদ্দিনকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ডা. এমএ আল মামুনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ শেষ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মারধরের শিকার হন সিরাজগঞ্জ সদর থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আলাউদ্দিন সরকার নামে এক রোগীর ছেলে রউফ সরকার।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে আপা ডাকা নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড বেঁধে যায়। বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী সিরাজগঞ্জ থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আলাউদ্দিন সরকার নামে এক রোগীর ছেলে রউফ সরকার ওই নারী চিকিৎসককে আপা বলে জানতে চান ফ্যানের সুইচটা কোথায়। এতে তাকে অপমান করা হয়েছে অভিযোগ তুলে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা একজোট হয়ে ওই রোগীর স্বজনকে বেদম পারপিট করেন। তারা তাকে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে ধরে নিয়ে পিটুনির পাশাপাশি, কান ধরে উঠবসও করায়। পরে তাকে পুলিশে দেয়া হয়।
এরপর আবার ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে যায়। এর মধ্যেই মারা যান আলোচিত সেই রোগী আলাউদ্দিন। পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন।
এই ঘটনার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের পর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো উপাচার্য (প্রশাসন) শারফুদ্দিন আহমেদ ও স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালকের কার্যালয়ের মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড এইচএমপিচির পরিচালক এম এ রাশেদ। ওই কমিটি তাদের প্রতিবেদনে চার শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে।