ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ বিডি ডট কম,নিজস্ব প্রতিনিধি,১১ ফেব্রুয়ারি : কুমিল্লার দাউদকান্দিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ হলো মেধাবী ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসির বাল্যবিয়ে। এলাকার সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, স্বপ্ন পূরণ হবে তো এই মেধাবী ছাত্রী জান্নাতের?
১০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকালে দাউদকান্দি উপজেলার পূর্ব পেন্নাই (প্রহলদ্দীপাড়) গ্রামের এক কিশোরীর বিয়ে বন্ধ করে দেন স্থানীয় প্রশাসন। জানা যায়, উপজেলার পূর্ব পেন্নাই গ্রামের ওমান প্রবাসী মোঃ হান্নান মিয়ার নাবালিকা কন্যা গৌরীপুর ইউনিটি ইন্টাঃ স্কুলের ৮ম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসি (১৩)’র সঙ্গে একই গ্রামের মালেক ব্যাপারীর পুত্র প্রবাস ফেরত ইসমাইল হোসেন (৩০)’র সহিত আজ ১০ ফেব্রুয়ারি বিবাহের আয়োজন করে উভয় পক্ষের অভিভাবকর। এই খবর পেয়ে উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা শামীমা সুলতানা স্থানীয় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটিকে দ্রুত এ বিয়ে বন্ধের নির্দেশ প্রদান করেন। তৎক্ষণাৎ সরেজমিনে উপস্থিত হন বৃহত্তর দাউদকান্দি উপজেলা ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ ও যৌতুক প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক মো. আলী আশরাফ খান, মহিলা উন্নয়ন কর্মী সাংবাদিক মালীনা আক্তার মিলি, সাংবাদিক জসিম উদ্দিন জয়, এফবিনিউজ এডিটর রাশেল মুন্সী, তরুণ সমাজসেবী অনিক ইসলাম ও মোঃ রাজিব। তারা স্থানীয়দের সহযোগিতায় এই বিয়ে বন্ধ করতে সক্ষম হন।
উভয় পক্ষের অভিভাবকগণ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে লিখিত অঙ্গিকারনামায় এই মর্মে স্বাক্ষর দেন যে, এ মেয়ের বয়স ১৮ পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তারা বিবাহ হতে বিরত রাখবেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, মোঃ নূরুল ইসলাম ফকির, মোঃ জসিম উদ্দিন, মোঃ জহিরুল ইসলাম, মোঃ জামাল হোসেন প্রমুখ। এব্যাপারে দাউদকান্দি উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা শামীমা সুলতানা বলেন,‘যেসব ব্যক্তি-পরিবার বাল্যবিয়ের মত অপরাধকে উৎসাহিত করবে তাদেরকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। আর যদি কোন কাজী ভূঁয়া জন্মসনদ কিংবা সঠিক বয়স না হওয়ার পরেও বিবাহ নিবন্ধন করেন, তাকেও আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে’। স্থানীয় সমাজসেবী নূরুল ইসলাম ফকির, জসিম উদ্দিন ও জহিরুল ইসলাম বলেন,‘এমনি এমনি-ই আমাদের এলাকার ছোট ছোট মেয়েদের বিয়ে দিতে বাধ্য হয় না অভিভাবকরা। স্কুলপড়–য়া ছাত্রীরা প্রতিদিনই ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে এই এলাকায়। বিশেষ করে গৌরীপুর বাজার হতে পেন্নাই (প্রহলদ্দীপাড়) এ রাস্তাটিতে কিছু বখাটে ছেলেপেলে স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় ছাত্রীদের নানাভাবে টিজ করে এবং হুমকি-ধামকিও দিয়ে থাকে। যার ফলে উপায়ন্তর না পেয়ে সম্মান রক্ষার্থে অল্প বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দিতে বাধ্য হয় তাদের বাবা-মায়েরা।’ উল্লেখ্য যে, জান্নাতুল ফেরদৌসি পিইসিতে জিপিএ-৫ এবং কাসে রীতিমত সকল শিক্ষকদের প্রিয় একজন মেধাবী ছাত্রী। লেখাপড়া শিখে বড় হয়ে সে একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা হতে চায়।