জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহতদের জন্য মানবাধিকার বিবেচ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
“যারা আত্মঘাতী; যারা বোমা মেরে নিরীহ মানুষকে হত্যা করে, তাদের জন্য মায়াকান্না কেন? তাদের জন্য আবার কিসের মানবাধিকার?”
গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার প্রেক্ষাপটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাম্প্রতিক অভিযান নিয়ে বিএনপির প্রশ্ন তোলার প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক আলোচনা সভায় একথা বলেন আশরাফ।
মাদারীপুরে কলেজ শিক্ষককে কুপিয়ে আহত করার পর ঘটনাস্থলে গ্রেপ্তার এক যুবক কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিএনপি।
সরকারের বিরুদ্ধে গুম-খুনের অভিযোগ করে আসা বিএনপি কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে নয়জনের নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো জঙ্গিদের হামলার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তুলে তার সমালোচনাও করছে।
তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ নাকচ করে জঙ্গি দমন অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের দেশগুলোতে সন্দেহভাজনদের মারা পড়ার উদাহরণ দিয়ে আসছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় সায় দিয়ে বৃহস্পতিবার ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রাঙ্গণে শোকের মাসে স্বেচ্ছাসেবক দলের আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে আশরাফ গুলশান হামলার কথাও বলেন।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম (ফাইল ছবি)
“গুলশানে যে ঘটনা ঘটল, সে ঘটনাকে একেবারে তিলকে তাল বানিয়ে সব জায়গায় প্রচার করা হয়েছে। একদিকে যারা নিহত হয়েছেন তাদের জন্য মায়াকান্না; আবার যারা হত্যা করেছে, যারা টেরোরিস্ট-জঙ্গি, তাদের জন্যও মায়াকান্না।”
“আবার কেন হামলা হল, কেন তাদের রক্ষা করতে পারল না, কেন তাদেরকে বিনা বিচারে হত্যা করা হল, তাদের মানবাধিকার রক্ষা হল না- এটা নিয়েও মায়াকান্না।”
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহতদের মানবাধিকার রক্ষার দাবির মধ্যে ‘দ্বিচারিতা’ দেখছেন বলেও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
“এই যে কিছু সংখ্যক বাঙালির চরিত্র। আমি তো মাঝে মধ্যে টক শো দেখি, সবগুলো পত্রিকাও পড়ি। আমার লজ্জা হয় এই ধরনের ডুপ্লিমেসি দেখে।”
“হয় বাংলাদেশের নাগরিকের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করুন, না হয় এদেশ ছেড়ে ইরাক-সিরিয়া চলে যান,” বলেন আশরাফ।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাউছারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ নাথও বক্তব্য রাখেন।