১১/০৮/২০১৬
অর্থ পাচারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা দুই মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমিন ও ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেনের জামিন স্থগিতের মেয়াদ বাড়িয়েছে আপিল বিভাগ।
তাদের জামিন মঞ্জুর করে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদকের করা এক আবেদনের শুনানি আগামী ১৮ অগাস্ট পর্যন্ত মুলতবি করে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
তিনি জানান, ওই দুই কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী চেয়ে দুদকের দেওয়া নোটিসের ভিত্তিতে পদক্ষেপ না নিতে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশও একই সময় পর্যন্ত স্থগিত করেছে আপিল বিভাগ।
ওই নোটিসের ভিত্তিতে পদক্ষেপ না নিতে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদকের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ এসেছে।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আপিল বিভাগ তাদের জামিন স্থগিতের মেয়াদ বাড়িয়েছেন। ১৮ অগাস্ট বিষয়টি আবার আসবে। এই সময়ের মধ্যে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছে।”
অর্থ পাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেনের বিরুদ্ধে কলাবাগান থানায় আলাদা দুটি মামলা করে দুদক। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পাচার ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
মামলায় রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেন ২০১২ সালের ১১ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত তা না মঞ্জুর করে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেয়।
পরবর্তীতে নিম্ন আদালতে তাদের জামিন নামঞ্জুর হলে তারা হাই কোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০ জুলাই হাই কোর্ট নিম্ন আদালতে পাসপোর্ট জমা রাখার শর্তে দুইজনের জামিন মঞ্জুর করে।
এই আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩১ জুলাই আপিল বিভাগ ১১ অগাস্ট পর্যন্ত জামিন স্থগিত করে দেয়। এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে।
‘নোটিসের কার্যক্রম চলবে’
গত জুনে রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেনের সম্পদের বিবরণী দাখিল করতে নোটিস দিয়েছিল দুদক। তারা হিসাব দাখিলের জন্য ১৫ দিন সময় চেয়ে আবেদন করলে দুদক ৭ দিন সময় দেয়; যা শেষ হয় গত ১৪ জুলাই।
এ অবস্থায় সম্পদ বিবরণী দাখিলে দেওয়া ওই নোটিসের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ডেসটিনির ওই দুই কর্মকর্তা পৃথক রিট করেন।
এসব আবেদনের শুনানি নিয়ে ২ অগাস্ট হাই কোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেয়।
রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই নোটিসের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে বলা হয় দুদককে।
এই আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদক পৃথক আবেদন করে, যা চেম্বার বিচারপতির আদালত হয়ে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।
প্রধান বিচারপতি সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ হাই কোর্টের ওই আদেশ স্থগিত করে ১৮ অগাস্ট পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
এ বিষয়ে আইনজীবী খুরশীদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুদক নোটিসের কার্যক্রম স্থগিত করে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছে আপিল বিভাগ। ফলে এখন নোটিসের ভিত্তিতে কার্যক্রম চলতে আইনগত বাধা নেই।
“১৮ অগাস্ট বিষয়টি আবার আসবে। এই সময়ের মধ্যে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছে।”
জামিন ও নোটিস নিয়ে মামলায় ডেসটিনির দুই কর্তার পক্ষে লড়েন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।