১১/০৮/২০১৬
ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের নান্দাইলে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত আত্মস্বীকৃত জঙ্গি শফিউল ওরফে শরীফুল ওরফে সাইফুল ওরফে ডন তাকে ডাকতেন ‘স্যার’ নামে।
দেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় পুলিশের চেকপোস্টে বর্বরোচিত হামলার আগে শক্তিশালী হাতবোমা, পিস্তল ও চাপাতি তুলে দেন ওই স্যারই।
তার নির্দেশ ও পরিকল্পনায় ওই কিলিং মিশনে অংশ নেন জঙ্গি শফিউল ও আবির। হামলার তিনদিন আগে শোলাকিয়ায় অবসরপ্রাপ্ত এক খাদ্য কর্মকর্তার বাড়িতে তাদের সঙ্গে ওঠেন ‘স্যার।’
সেখানেও মগজ ধোলাই, হামলার কৌশল থেকে শুরু করে পালানোর পথ বাতলে দেন ‘স্যার’ নামের আড়ালে পুরস্কার ঘোষিত তামিম চৌধুরী।
বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার আগে র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানিয়েছেন জঙ্গি শফিউল।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম চৌধুরীকে ধরিয়ে দিতে ইতোমধ্যেই ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন আইজিপি শহীদুল হক।
গত ৭ জুলাই ঈদ দিন সকালে শোলাকিয়ায় পুলিশের চেকপোস্টে হামলা চালালে জঙ্গি আবির ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত অবস্থায় ধরা পড়েন জঙ্গি শফিউল ওরফে ডন ওরফে শরীফুল।
এরপর প্রায় এক মাস ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া পাহারায় চিকিৎসাধীন ছিলেন শফিউল।
ওই সময় দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন আত্মস্বীকৃত এ জঙ্গি। কথিত ‘স্যার’ যে তামিম চৌধুরী এ সম্পর্কেও তথ্য দেন। তখন থেকেই আলোচনায় উঠে আসেন কথিত ‘স্যার’ নামের এ ভয়ানক জঙ্গি।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, শফিউলসহ ৭ জঙ্গিকে গাইবান্ধার অজ্ঞাত স্থানে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন তামিম চৌধুরী। শোলাকিয়ায় হামলা চালানোর তিনদিন আগে ভাড়া বাসায় শফিউল ও আবিরদের সঙ্গে ওঠেন তিনি।
এরপর ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তাদের দু’জনের হাতে অস্ত্র ও হাতবোমা তুলে দিয়ে ওই বাসা থেকে চম্পট দেন ‘ধুরন্ধর’ তামিম।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে শরীফুল জানিয়েছে, শোলাকিয়ায় তাদের প্রধান টার্গেট ছিল ইমাম ফরিদ উদ্দিন মাসুদের ওপর হামলা। কিন্তু ব্যর্থ হওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা চালানো হয়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪’র কমান্ডিং অফিসার (সিও) লে. কর্নেল শরীফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে শফিউল।
পুরস্কার ঘোষিত জঙ্গি তামিম চৌধুরীই সেই ‘স্যার’ বলে জানান র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘শোলাকিয়া হামলা সফল হলে শফিউল ও আবিরকে দিয়ে আরো বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন তামিম চৌধুরী।’
এর আগে গত ১৫ জুলাই বাংলানিউজে হামলা হয় ‘স্যার’র কথায়! বলেছে শফিউল, শিরোনামে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ প্রকাশিত হয়।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ‘স্যার’ সম্পর্কে শফিউলের দেওয়া অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রথমবারের মতো উঠে আসে ওই প্রতিবেদনে। বাংলানিউজের প্রকাশিত ওই খবরটি তখন ছিল বেশ আলোচিত।