ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),রাজধানীর মোহাম্মদপুর প্রতিনিধি, সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫ || বৈশাখ ৮ ১৪৩২ :
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের অসহনীয় যানজট ও জনভোগান্তি নিয়ে চ্যানেল 24 এর অনলাইনে নিউজ প্রকাশের পর উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে যৌথবাহিনী। সোমবার (২১) এপ্রিল বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদপুর-বসিলা সড়কের পাশে থাকা শতশত অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের মোহাম্মদ জোনের সহকারী কমিশনার ( এসি ) মো. আসলাম সাগর চ্যানেল 24 অনলাইনকে বলেন, বিকেল থেকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ট্রাফিক পুলিশের মোহাম্মদপুর জোন ও মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ যৌথভাবে এই অভিযান চালিয়েছে। এসময় সড়কের পাশে থাকা অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখন থেকে নিয়মিতই এই সড়কে মনিটরিং করা হবে। আর কোনো অবৈধ দোকান বাসার সুযোগ দেয়া হবে না।
যৌথবাহিনীর এই উচ্ছেদ অভিযানে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন মোহাম্মদপুরের বাসিন্দারা। কাঁটাসুর এলাকার বাসিন্দা ও মোহাম্মদপুর সুপার মার্কেটের ব্যাবসায়ী মো. জামাল বলেন, শুধু একবার উচ্ছেদ করলেই হবে না। আশা করবো এখন থেকে নিয়মিত বিষয়টি দেখভাল করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যাতে আর কখনোই সড়কটিতে অবৈধ দোকান বসতে না পাড়ে।

উচ্ছেদ অভিযানের পর সড়কের পাশের ফাঁকা জায়গা : ছবি চ্যানেল 24
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল চ্যানেল 24 এ ‘মোহাম্মদপুরে এত যানজটের কারণ কী, সমাধান কীভাবে’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, সড়ক অবৈধভাবে দখল করে রাখায় যানজটের কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয় মোহাম্মপুরে বসবাসকারী সবাইকে। মোহাম্মদপুরে অসহনীয় যানহজটের কারণ জানতে চাইলে কাঁটাসুর এলাকার বাসিন্দা ও মোহাম্মদপুর সুপার মার্কেটের ব্যাবসায়ী মো. জামাল বলেন, এই এলাকায় যানজটের সবচেয়ে বড় কারণ সড়কে বসানো অস্থায়ী ও অবৈধ দোকান। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বেঁড়িবাধ পর্যন্ত মাত্র ৫০০ ফিট জায়গাতেই সড়কের পাশে কম করে হলেও হাজারখানেক অবৈধ দোকান গড়ে উঠেছে। প্রশস্ত এই সড়কে ৩-৪ সারিতে অস্থায়ী দোকান বসানো হয়, আর গাড়ি চলে এক লেনে। তাহলে যানজট হবে না তো কী সড়ক ফাঁকা থাকবে?
Advertisement
তিনি বলেন, এছাড়াও বেঁড়িবাধ ৪ রাস্তার মাথায় সবদিকের সড়ক দখল করে বসে থাকে অবৈধ অটোরিকশা, ইজিবাইক। তাদের আটকানোর যেন কেউ নেই। আর বাসচালকরাতো মোহাম্মদপুরের রাজা। তারা যেখানে মন চায় সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে। একদম রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলেন বাসচালকরা। পেছনে শতশত গাড়ি আটকা পড়লেও বাসচালকের কোনো ভ্রুক্ষেপ থাকে না।
মোহাম্মদপুরের মোহাম্মাদিয়া হাউজিং লিমিটেডের বাসিন্দা যুবায়েদ আল মাসুম বলেন, মোহাম্মদপুরে যানজটের আরেকটা বড় কারণ হলো আসাদগেট ও ইকবাল রোডে থাকা সরকারি-বেসরকারি স্কুল। ওই এলাকায় কম করে হলেও ২০-২৫টা স্কুল-কলেজ আছে। তাই স্কুল শুরু ও ছুটির সময় পুরো মোহাম্মদপুরই যেন স্থবির হয়ে যায়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের মোহাম্মদ জোনের সহকারী কমিশনার ( এসি ) মো. আসলাম সাগর চ্যানেল 24 অনলাইনকে বলেন, মোহাম্মদপুরে যানজটের সবচেয়ে বড় কারণ অটোরিকশা ও ইজিবাইকগুলো। চালকরা পুলিশের কোনো কথাই শুনেন না। সড়কের ওপর এলোমেলোভাবে বসে থাকেন। তাদের সড়ক ছাড়তে বললে উল্টো তারা আমাদেরই দেখে নেয়া হুমকি দয়ে। অটোরিকশা আটকাতে গিয়ে এরই মধ্যে আমার একজন টিআইয়ের হাত ভেঙেছে। আমি নিজেও একবার ব্যাথা পেয়েছি।
Advertisement
তিনি বলেন, এছাড়াও মোহাম্মদপুরের যানজটের আরেকটা কারণ আসাদগেট এলকায় থাকা স্কুলগুলো ও টাউনহল বাজার। সকালে স্কুলটাইমে খুব চাপ হয়ে যায়। এসব স্কুলের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী অটোরিকশা ব্যবহার করে। এছাড়া টাউনহলের মতো এত বড় একটি বাজার থাকায় মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে আসাদগেট সড়কে অটো চলাচল বন্ধও করা যাচ্ছে না। মোট কথা মোহাম্মদপুরে অটোরিকশাগুলো আমাদের আউট অব কন্ট্রোল। তাদের কিছু বললেই দলবেঁধে আমাদের ওপর হামলা চালাতে আসে। ট্রাফিকদের বারবার থ্রেট দেয় দেখে নেবে বলে।
মোহাম্মদপুরে যৌথবাহিনীর উচ্ছেদ অভিযান -ছবি চ্যানেল 24