ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি), মৌলভীবাজার প্রতিনিধি, শনিবার ১২ এপ্রিল ২০২৫ || চৈত্র ২৯ ১৪৩১ :
মৌলভীবাজারে আইনজীবী সুজন মিয়াকে হত্যার ঘটনার ৩ দিন পর পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। সুজন মিয়াকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়নি, বরং ভুল করে তাকে হত্যা করে ভাড়াটে খুনি। উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় একটি ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী মিসবাহকে হত্যা করা, যার চেহারার সাথে মিল থাকায় সুজনকে ভুল টার্গেট হিসেবে শনাক্ত করে হত্যা করা হয়।
Advertisement
ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বাসুদেবশ্রী এলাকার নজির মিয়া ওরফে মুজিব। তার সঙ্গে ব্যক্তিগত বিরোধ ছিল মিসবাহ নামের ওই নিরাপত্তাকর্মীর। প্রতিশোধ নিতে মুজিব রাজনগরের লক্ষণ নাইডুর মাধ্যমে কয়েকজন ভাড়াটে দুষ্কৃতিকারী নিয়োগ করেন। মুঠোফোনে মিসবাহের ছবি পাঠানো হলে, তারা ৫ এপ্রিল মৌলভীবাজারের বানিজ্য মেলায় আইনজীবী সুজন মিয়াকে মিসবাহ ভেবে চিহ্নিত করে। ভিডিও কলে নিশ্চিত হওয়ার পর মুজিব সুজনকে হত্যা করার নির্দেশ দেন।
পরিকল্পনা মতো সুজনের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। নিহতের ভাই এনামুল হক সুমনের দায়ের করা মামলার (নং-১৫, তাং-০৮/০৪/২০২৫) ভিত্তিতে প্রযুক্তি ও তথ্যের সহায়তায় পুলিশ এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে।
Advertisement
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৩নং কামালপুর ইউনিয়নের বাসুদেবশ্রী এলাকার সামছুল হকের ছেলে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী নজির মিয়া ওরফে মুজিব (২৫), রঘুনন্দনপুর এলাকার মৃত সিজিল মিয়ার ছেলে মোঃ
আরিফ মিয়া (২৭), দিশালোক ইটা সিংকাপন এলাকার আনসার মিয়ার ছেলে হোসাইন আহমদ ওরফে সোহান (১৯), রাজনগর উপজেলার মাথিউড়া চা বাগানের মনা নাইডুর ছেলে লক্ষণ নাইডু (২৩), নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার কাশিপুর পূর্বপাড়া এলাকার মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে আব্দুর রহিম (১৯)।
পুলিশ সুপার এম.কে.এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, এই হত্যাকাণ্ডকে পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার পেছনের রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে। পলাতক আসামিদেরও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
Advertisement
এই ঘটনা মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। ভুল টার্গেটের বলি হয়ে প্রাণ দিতে হলো একজন নিরপরাধ আইনজীবীকে, যার পরিবার এখন বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অপেক্ষায়।