‘আমার হাজবেন্ড কি কুরবানির গরু’ লাইভে ক্ষোভ সাজ্জাদের স্ত্রীর (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),চট্টগ্রাম প্রতিনিধি,বুধবার   ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ||  চৈত্র ২৬ ১৪৩১ :

চট্টগ্রামে জোড়া খুন মামলার আসামি সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী মহড়া দেওয়ায় আবারও লাইভে এসে পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝাড়লেন তার স্ত্রী তামান্না শারমিন। তিনি বলেছেন, ‘আমার হাজবেন্ড কি কুরবানির গরু যে তাকে রশিবেঁধে মাইকিং করে রাস্তায় রাস্তায় ঘোরাতে হবে। তাকে এতো অপমান-অপদস্থ করতে হবে। ওসি আরিফ চাইলেই তো তাকে গুলি করে মারতে পারে। এত অপমান-অপদস্থ করার কী দরকার। এতে কী মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে না’- এমন প্রশ্ন ছুড়ে দেন তামান্না।

Advertisement

চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী, একাধিক হত্যাসহ এক ডজনেরও বেশি মামলার আসামি ছোট সাজ্জাদকে পুলিশ গত মাসে বসুন্ধরা সিটি থেকে গ্রেফতার করে। এর আগে সাজ্জাদ ফেসবুক লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফকে ল্যাংটা করে পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন। লাইভে এসে একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর ওসিকে হুমকি দেওয়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তোলে। সৃষ্টি করে চাঞ্চল্যের।

মূলত এরপর থেকেই সিএমপি ছোট সাজ্জাদকে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে। একপর্যায়ে তাকে গ্রেফতারও করে। সাজ্জাদকে গ্রেফতারের পর ফেসবুক লাইভে এসে সাজ্জাদের বেপরোয়া স্ত্রী দম্ভ করে বলেন- কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে তিনি তার স্বামীকে জেল থেকে বের করে আনবেন। তার সেই বক্তব্যও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তার সাহস ও দম্ভ দেখে সাধারণ মানুষ নানা প্রশ্ন তোলেন।

এরই মধ্যে সাজ্জাদকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেওয়ার ‘অপরাধে’ তার প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের আরেক সন্ত্রাসী সরওয়ার হোসেন বাবলাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন কারাবন্দি সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না। পরিকল্পনা অনুযায়ী সাজ্জাদের অনুসারীরা ঈদের একদিন আগে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রকাশ্যে ধাওয়া করে প্রাইভেটকারে ব্রাশফায়ার করলে মানিক ও আবদুল্লাহ নামে দুইজন নিহত হন। দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। তবে প্রাইভেটকারে টার্গেট ব্যক্তি সাজ্জাদ থাকলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। এ ঘটনায় বাকলিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এতে সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী তামান্নাকে হুকুমের আসামি করা হয়।

Advertisement

এদিকে ছোট সাজ্জাদকে নিয়ে সোমবার বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় সন্ত্রাসবিরোধী মহড়া দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী; বিশেষ করে সন্ত্রাস করলে কী পরিণতি হয় অন্য সন্ত্রাসীদের কাছে সেই বার্তা দিতে এবং এলাকার মানুষজনের কাছ থেকে সাজ্জাদ ভীতি দূর করতেই এমন মহড়ার আয়োজন করা হয় বলে জানান সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ। রশিবাঁধা ও হ্যান্ডকাপ পরানো ও মাথায় হেলমেট পড়া সাজ্জাদকে হাঁটিয়ে বেশ কিছু এলাকায় ঘোরানো হয়।

এ সময় মাইকিং করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সন্ত্রাসীদের ব্যাপারে নির্ভয়ে যেকোনো ধরনের তথ্য দেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। মূলত এ ঘটনার পরই সাজ্জাদের স্ত্রী তার ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে  ক্ষোভ ঝাড়েন।

লাইভে সাজ্জাদের স্ত্রী বলেন, ‘আমার সাজ্জাদকে যেমন ইচ্ছে তেমন করতেছে প্রশাসন। আসলে ওর কোনো ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড নাই। কথা বলার লোক নাই। আমি একজন মেয়ে মানুষ। আমাকেও দুই তিনটা মামলা দিয়ে বসে আছে। আমি কী করব। ওসি আরিফ আমার হাজবেন্ডকে অ্যারেস্ট করে নাই। শূচি অ্যারেস্ট করাইছে। বসুন্ধরা সিটিতে ঘুরতে গিয়ে অ্যারেস্ট হয়। আমিও একসঙ্গে অ্যারেস্ট হয়েছি। ওসি আরিফ বা কমিশনার অ্যারেস্ট করে নাই। আমার হাজবেন্ডকে এত অপমান না করে গুলি করে মারতে পারছেন না ওসি আরিফ?’

Advertisement

তামান্না আরও বলেন, ‘কোথাও কি এমন নজির আছে- এভাবে রশিবেঁধে জিরো টলারেন্সের নামে হ্যারাজ করার। ওই টলারে কি আর কোনো জায়গা নেই অন্য কোনো ক্রিমিনালকে হ্যারাজ করার। একজন রিমান্ডের আসামিকে এলাকাভিত্তিক ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে যেমন ইচ্ছা তেমন করছে। এখন আমি একজন মেয়ে মানুষ। আমি আপনাদের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। আমার হাজবেন্ডকে কেন অপমান করা হচ্ছে। অপরাধী হলে বিচার আদালত করবে। এতে কী মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে না’- এমন প্রশ্নও তোলেন তামান্না।

 

সূত্র: যুগান্তর