পোপ ফ্রান্সিসের শারীরিক অবস্থা ‘সংকটজনক’: ভ্যাটিকান (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি), আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি,রোববার   ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ||  ফাল্গুন ১০ ১৪৩১ :

বিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মের সর্বোচ্চ নেতা পোপ ফ্রান্সিসের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউরোপের দেশ ভ্যাটিকান। শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা নিয়ে কয়েকদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

হাঁপানি, নিউমোনিয়াসহ আরও বেশকিছু শারীরিক জাটিলতা নিয়ে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য তাকে ‘উচ্চমাত্রায়’ অক্সিজেনও দিতে হচ্ছে। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আল জাজিরা। শনিবার এক বিবৃতিতে ভ্যাটিকান জানায়, “পবিত্র পিতার অবস্থা এখনও সংকটজনক। পোপ বিপদমুক্ত নন”।

এছাড়া প্লাটিলেট কমে যাওয়ায় পোপকে রক্ত দিতে হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। যদিও এতো অসুস্থতার মধ্যেও ৮৮ বছর বয়সী এই ধর্মগুরু সজাগ রয়েছেন। এমনকি তিনি চেয়ারেও বসতে পারছেন। তবে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য তাকে ‘উচ্চমাত্রায়’ অক্সিজেন দিতে হচ্ছে।

এর আগে পোপ ফ্রান্সিসের ফুসফুসে ‘জটিল সংক্রমণ’ ধরা পড়েছিল। বর্তমানে তিনি ইতালির রাজধানী রোমের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, নিউমোনিয়া ও ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রোমের জেমেলি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই হাঁপানিজনিত শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় শনিবার তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়।

এর পাশাপাশি, পোপের শ্বাসনালীতে পলিমাইক্রোবিয়াল সংক্রমণও পাওয়া গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পোপ ফ্রান্সিসের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ এবং তিনি কোনোভাবেই বিপদমুক্ত নন। ফ্রান্সিসের শরীরে সেপসিসের (গুরুতর রক্ত ​​সংক্রমণ) আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।

Advertisement

 

যদিও পোপের মেডিকেল টিম জানিয়েছে, শুক্রবার পর্যন্ত ফ্রান্সিসের শরীরে সেপসিসের কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি এবং চিকিৎসায় ইতিবাচক সাড়া মিলছে।

রোমের জেমেলি হাসপাতালের মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. সার্জিও আলফিয়েরি বলেন, পোপ ফ্রান্সিসের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হচ্ছে- তার সেপসিস হওয়ার আশঙ্কা। সেপসিসের ফলে অঙ্গ বিকল হয়ে পড়তে পারে এবং তার মৃত্যুও হতে পারে।

গত শুক্রবার ডা. আলফিয়েরি আরও জানান, পোপের শ্বাসকষ্ট এবং বয়সের কারণে তার সেরে ওঠা সত্যিই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, পোপ ফ্রান্সিস ২০১৩ সালে রোমান ক্যাথলিক চার্চের ২৬৬তম পোপ হন। তিনি পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টের উত্তরসূরি নির্বাচিত হন। গত ১০০০ বছরে পোপ ফ্রান্সিসই প্রথম ব্যক্তি যিনি ইউরোপীয় না-হওয়া সত্ত্বেও ক্যাথলিক ধর্মের সর্বোচ্চ পদে পৌঁছেছেন।

প্রসঙ্গত, ভ্যাটিকান সিটির আয়তন মাত্র ০.৪৪ বর্গকিলোমিটার। এটি ইতালির রোম শহরের মধ্যস্থলে প্রাচীরবেষ্টিত একটি এলাকা। ভ্যাটিকান সিটির অভ্যন্তরে কোনও প্রাকৃতিক জলাশয়ই নেই। শহরটি মূলত একটি ছোট পাহাড়ের ওপর অবস্থিত, যার নাম ভ্যাটিকান পাহাড়।

Advertisement

ভ্যাটিকান সিটি ১৯২৯ সালে অস্তিত্ব লাভ করে। পোপ (বাংলায় ধর্মযাজক বা পাদ্রি) এখানকার রাষ্ট্রনেতা এবং তারা রাষ্ট্র শাসন করেন। ভ্যাটিকান সিটি সারাবিশ্বের রোমান ক্যাথলিকদের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি রোমান ক্যাথলিক গির্জার বিশ্ব সদর দপ্তর হিসেবে কাজ করে।

ছবি সংগৃহীত