হাসিনা হাসপাতালে গিয়ে বলেছিলেন ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’: চিফ প্রসিকিউটর (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিশেষ প্রতিনিধি,রোববার   ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ||  ফাল্গুন ১০ ১৪৩১ :

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পতনের কিছুদিন আগে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের দেখতে গিয়ে চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর প্রমাণ প্রসিকিউশনের হাতে এসেছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম।

Advertisement

 

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পূর্বনির্ধারিত বিষয়ে শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন অফিসের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এ কথা জানান চিফ প্রসিকিউটর।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমরা রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) বা পঙ্গু হাসপাতালে যখন পরিদর্শনে গিয়েছিলাম, তখন সেখানে চিকিৎসারত আহত রোগী ও তাদের স্বজনরা আমাদের জানিয়েছিলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে একবার হাসপাতাল পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে বলেছিলেন, ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’। অর্থাৎ, কর্তব্যরত চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আহতদের কোনো চিকিৎসা না দিতে এবং কাউকে এখান থেকে বাইরে না যেতে দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।’’

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘‘রোগীদের পাশাপাশি এই নির্দেশাবলির কথা সেখানকার ডাক্তাররাও আমাদের জানিয়েছেন। এর তথ্য প্রমাণাদি আমাদের হাতে আছে, আমরা সেটাই আজ আদালতকে জানিয়েছি।’’

Advertisement

 

 

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থান চলাকালে আমাদের যে সন্তানেরা শহীদ হয়েছেন, তাদের মৃতদেহ প্রশাসনের নির্দেশে সুরতহাল করতে দেওয়া হয়নি, কাউকে কাউকে ডেথ সার্টিফিকেটও দেওয়া হয়নি। এমনকি, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে যাওয়ার পর যারা সেখানেই শহীদ হয়েছেন, তাদের ডেথ সার্টিফিকেটে গুলিতে মারা গেছে—এই কথাটিও লিখতে দেওয়া হয়নি। শ্বাসকষ্ট কিংবা জ্বরে মারা গেছে—এ ধরনের কথা লিখতে বাধ্য করা হয়েছে। আন্দোলনে শহীদের লাশ দাফন করতে যাচ্ছে জানতে পারলে রাস্তায় পুলিশ তাদের পরিবারের ওপর হামলা–আক্রমণ করেছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘আদালত আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, শহীদদের সুরতহাল প্রতিবেদন বা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য এবং কেন সেগুলো নেই? আমরা আদালতকে জানিয়েছি, সেই মুহূর্তে মানবতাবিরোধী অপরাধের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, দ্রুত শহীদদের লাশ দাফন করতে বাধ্য করা হয়েছে। তাই এ কারণে তাদের কোনো পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেওয়া হয়নি। ঘটনাটি কোনো স্বাভাবিক বিষয় নয় বরং তা মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি জাজ্বল্যমান প্রমাণ। এটিই প্রমাণ করে, কী ধরনের নিষ্ঠুরতার সঙ্গে জুলাই-আগস্টে হত্যাকাণ্ডগুলো চালানো হয়েছিল!’’

Advertisement

শেখ হাসিনার এমন নির্মমতার প্রমাণগুলো যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যাচাই–বাছাই ও ফরেনসিক করার পর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী মামলার প্রমাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে আদালতের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।

গত ২৭ জুলাই রাজধানীর নিটোরে আন্দোলনে আহতদের দেখতে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া