হঠাৎ করে রাস্তার ওপর ঘর, চলাচলের দুর্ভোগে ১০০ পরিবার

SHARE

২০ বছর ধরে ব্যবহৃত একটি রাস্তার মাঝখানে ছাপড়া ঘর তুলে চলাচলে বাধা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। ছবি: ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),পাবনার চাটমোহর  প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার   ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ৩০ ১৪৩১ :

পাবনার চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের খড়বাড়িয়া কিন্ডারগার্টের উত্তরপাশের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন উপজেলার হরিপুর ইউনয়িনের কাতুলী গ্রামের জন রোজারিওর ছেলে কমল রোজারিও।

Advertisement

অভিযোগে জানা গেছে, চাটমোহর-পাবনা সড়কের খড়বাড়িয়া কিন্ডার গার্টেন স্কুলের উত্তরপাশে একটি সরকারি রাস্তা রয়েছে। রাস্তাটির দৈর্ঘ্য প্রায় দেড় কিলোমিটার। এলাকাবাসী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচলের স্বার্থে অন্তত ২০ বছর আগে রাস্তাটি করা হয়। নিজেরাই জমি দিয়ে রাস্তাটি করেন স্থানীয়রা। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় ওই রাস্তাটিতে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। সর্বশেষ দুই বছর আগে সরকারি প্রকল্প থেকে ৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকার মাটির কাজের একটি প্রকল্প ওই রাস্তায় বাস্তবায়ন করা হয়।

কিন্তু এত বছর পর এসে দশ-বারো দিন আগে রাস্তার দক্ষিণপাশে কিন্ডারগার্টেন স্কুল সংলগ্ন জমির মালিক কমল রোজারিও রাস্তাটির উপর একটি টিনের ছাপড়া ঘর তুলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। এতে করে ভাদড়া বেড়পাড়া গ্রামের অন্তত একশটি পরিবারের মানুষের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। জমির মালিক বলেছেন আগে তিনি জমি দিয়েছিলেন রাস্তার জন্য। এখন তিনি দেবেন না। তাই ঘর তুলেছেন।

ভাদড়া বেড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা গোলজার হোসেন ও আব্দুর রহমান বলেন, ‘এতবছর ধরে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। কখনও কেউ বাধা দেয়নি। এই রাস্তা দিয়ে আমরা স্কুল, কলেজ, হাট-বাজারে যাতায়াত করি। ভ্যান সাইকেল চলাচল করে। কিন্তু রাস্তার মাঝখানে ঘর তুলে তিনি খুব খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এতগুলো মানুষকে কষ্ট দিয়ে তিনি কি সুখ পাচ্ছেন।’

সুশীল গমেজ ও শেলী কস্তা বলেন, ‘আমরা এখানে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে একসাথে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে যুগের পর যুগ বসবাস করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করে রাস্তার মাঝখানে ঘর তুলে আমাদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করা মেনে নেয়া যায় না। আমরা বিষয়টির সমাধান চাই।’

Advertisement

একই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ মিয়া বলেন, ‘যিনি এই কাজটি করেছেন জমির মালিক বলে সেই কমল রোজারিও এখানে বসবাসও করেন না। থাকেন আরেকটি ইউনিয়নের অন্য একটি গ্রামে। অথচ তিনি এখানে এসে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। ঘটনার পর আমরা কোনো উপায় না পেয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে যাই। তিনি ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসে এসি ল্যান্ডের কাছে অভিযোগ দিতে বলেন। পরে আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়ে আসছি। কিন্ত এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কমল রোজারিও বলেন, ‘দেড় বছর আগে স্থানীয় চেযারম্যান মেম্বারদের নিয়ে বসেছিলাম। রাস্তাটির বেশিরভাগ জায়গা আমার জমির উপর দিয়ে। আমিতো সব জায়গা দিতে পারিনা। মানবিক বিবেচনায় এক দেড় ফিট দিতে পারি। পাশের জমির মালিক যদি দেয় আমিও দেব।’

তাহলে এতদিন পর এসে রাস্তার উপর ঘর তুললেন কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

চাটমোহর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল বলেন, ‘যদি লিখিত অভিযোগ দিয়ে থাকে তাহলে তহশিলদার কে বলে দেওয়া হয়েছে। ওখানে গিয়ে দেখতে হবে বিষয়টা কি। সকল বিষয়গুলো জানার পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

Advertisement

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাছের চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি সরেজমিনে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এসিল্যান্ডকে বলা হয়েছে। আমি আবার বলে দিচ্ছি যাতে তিনি বিষয়টি দেখেন।

২০ বছর ধরে ব্যবহৃত একটি রাস্তার মাঝখানে ছাপড়া ঘর তুলে চলাচলে বাধা সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। ছবি: ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)