ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),রাজনীতি প্রতিনিধি,শনিবার ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ || মাঘ ১৯ ১৪৩১ :
আওয়ামী লীগ আমলে জঙ্গি তকমা পেয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের তরুণ আইনজীবী ব্যারিস্টার সাকিলা ফারজানা। রিমান্ডে তাকে কতটা নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছিলো! তা যেনো বর্ণনারও অতীত।
Advertisement
১০ মাসের কারাজীবন পারিবারিক ও রাজনৈতিক জীবনকে পুরোই উলট-পালট করে দিয়েছিল। জেল জীবনে আমি অমনানবিক নির্যাতন সহ্য করেছি। যা অবর্ণনীয়। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ছাত্র আন্দোলনের মধ্যেমে।
ব্যারিস্টার সাকিলা ফারজানা বলেন, একদিন রাতে প্রায় দুইশ/আড়াইশ অফিসার আমার ঘরে ঢুকে যায়। তারপর আমাকে কালো একটি মাইক্রোবাসে করে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা সবাই কালো কাপড় পরা ছিল। একটা সময় আমাকে একটা রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। উপরে ছিলো টিনশেড। তারপর তারা বললেন, আপনি বসেন। আমরা আসছি। তারা বাহির থেকে এসে বললেন আপনাকে গ্রেফতার করা হলো।
তিনি বলেন, আমি তাদের প্রশ্ন করলাম, আপনারা আমাকে কেন গ্রেফতার করেছেন। তারা বলেন, আপনি জঙ্গিতে অর্থায়ন করেছেন। রিমান্ডের নির্যাতনের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ওরা আমাকে লাথি থেকে শুরু করে সবই করেছেন। যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
Advertisement
ফারজানা বলেন, আমাকে যে রুমে রাখা হয়েছিল। আমি যখন টয়লেটে যেতাম, তখন বাহির থেকে দেখা যেত। আমাকে বেশির ভাগ সময় একজন পুরুষই নির্যাতন করেছেন। অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করেছেন।
তিনি বলেন, খুব রুডলি চেহারার লোকদের দিয়ে আমাকে ভয় দেখানো হতো। তিনি মুখের মধ্যে সব সময় কিছু ব্লেড নিয়ে আমার সামনে আসতেন। আমি যখন ঘুমিয়ে থাকতাম। তখন তিনি আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতো। আমার ঘুমই ভাঙতো তাদের গালি-গালাজ শুনে।
ব্যারিস্টার সাকিলা ফারজানা
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বাঁশখালীর লটমনি পাহাড়ের জঙ্গি প্রশিক্ষণ আস্তানা থেকে জঙ্গি সরঞ্জাম, অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারের ঘটনায় র্যাব সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দুটি মামলা দায়ের করে। এসব মামলায় বিএনপির নেত্রী ব্যারিস্টার সাকিলা ফারজানাকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলায় শাকিলার বিরুদ্ধে হামজা ব্রিগেডকে অর্থায়নের অভিযোগ আনে র্যাব।
Advertisement
এদিকে মামলার শুরু থেকে বিএনপির দাবি, আওয়ামী সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাকিলা ফারজানাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সাকিলা ফারজানার বাবা বিএনপির সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলম হাটহাজারী সংসদীয় আসনের জনপ্রিয় এমপি ছিলেন। পিতার অবর্তমানে সাকিলা ফারজানার জনপ্রিয়তা পেতে থাকেন। এতে করে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে সরকার তাকে এ মামলায় অভিযুক্ত করে। এরপর ২০১৫ সালের ১৮ আগস্ট ব্যারিস্টার সকিলা ফারজানাকে গ্রেফতার করা হয়।