অসাধু সমবায় সমিতির খপ্পরে নিঃস্ব গ্রাহক, দেখার নেই কেউ!

SHARE

নিজের জমানো টাকা ফেরত পেতে সমবায় সমিতির গেটে ভুক্তভোগীরা। ছবি ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিশেষ প্রতিনিধি,মঙ্গলবার   ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ||  মাঘ ৭ ১৪৩১ :

স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে প্রথমে বিশ্বাস অর্জন, তারপর লাভের আশা দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়া। রাজধানীর পুরান ঢাকায় সমবায় সমিতির নামে এমন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান শতকোটি টাকা নিয়ে উধাও। দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মালিকের হদিস পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। মামলাতেও প্রশাসনের গড়িমসি। অনুমোদনকারী সংস্থা সমবায় অধিদফতরও নিশ্চুপ।

Advertisement

প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা লাভের আশায় মেয়ের বিয়ের জন্য জোগাড় করা ১১ লাখ টাকা দি নিউ বেসিক এমসিএস-এ বিনিয়োগ করেছিলেন আবুল বাসার। টাকা তুলতে এসে দেখেন কোম্পানি লাপাত্তা।

 বাসাবাড়িতে কাজ করে ২ লাখ টাকা জমান মনি আক্তার। লাভের আশায় বিনিয়োগ করেন রূপালী সঞ্চয় ঋণদান সমিতিতে। টাকা তুলতে এসে দেখেন তালা ঝুলছে সমিতির দরজায়।
 
এভাবে রাজধানীর অলিতে-গলিতে সমবায় সমিতির নামে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন প্রতারণার প্রতিষ্ঠান। যাদের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেক গ্রাহক। তারা বলেন, কষ্ট করে উপার্জিত অর্থ সমিতিতে জমা দিলেও সে অর্থ নিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।
 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে মিলে এমন ব্যাংকের লোগো নকল করে প্রতারণা করছে এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিরা। এর মধ্যে মধুমতি, রুপালী, সোনালি ও বেসিকের চেয়ারম্যান এবং এমডি’র সঙ্গে যোগাযোগ করলে নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। এদের মধ্যে আছে পারিবারিক সম্পর্কও।
 
রূপালীর চেয়ারম্যান আজিজ খানের বাসায় গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা বলছেন, আজিজের মেয়ে ও রূপালির এমডি ওয়াহীদুজ্জামান মুন্সীর ভাই, দুজনই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তাদের হস্তক্ষেপেই প্রতারণার মামলাগুলো আগাচ্ছে না।

Advertisement

 
ফোনে যোগাযোগ করলে কথা বলতে রাজি হননি আজিজ খানের মেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লাবনী। অন্যজন ব্যস্ততার অজুহাতে এড়িয়ে যান।
 
গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করা ভুঁইফোড় সমিতির অনুমোদন দেয়া সমবায় অধিদফতরের মহাপরিচালক জানান, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 
সমবায় অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান হয়ত নানা সমস্যার কারণে সময়মতো টাকা ফেরত দিতে পারছে না। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 
গ্রাহকের কান্নার রোল আর আর্তনাদ সীমাবদ্ধ থাকে কান্নাতেই। শত চেষ্টার পরেও মেলে না জমাকৃত অর্থ। তাহলে কি সবসময়ের মতো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবে এসব লুটেরা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা, নাকি তারা আইনেরও ঊর্ধ্বে, এমনটাই প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের।
 
দেশে সমবায় সমিতির সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ৭১টি।

Advertisement