হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্য টি-টোয়েন্টি সিরিজেও

SHARE

bd teamঢাকা: সফরকারী জিম্বাবুয়ের সঙ্গে স্বাগতিক বাংলাদেশের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের পর শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) শুরু হচ্ছে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি  মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার বিকেল ৫টায়।

ওয়ানডে সিরিজে এলটন চিগম্বুরা বাহিনীকে অনায়াসে ‘ধবলধোলাই’ করার পর টি-টোয়েন্টিতেও একই লক্ষ্যে মাঠে নামবে মাশরাফি বিন মুর্তজা বাহিনী। ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) টিম হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেই ঘোষণাই দিয়েছেন টাইগার অধিপতি।

তবে, ঘোষণা দিয়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিলেও টি-টোয়েন্টি নিয়ে ততটা নিশ্চিন্ত থাকার সুযোগ দিচ্ছে না টাইগারদের এ ফরম্যাটের অতীত পরিসংখ্যান। টি-টোয়েন্টিতে উন্নতি করতে লাল-সবুজের পতাকাধারীদের অনেক বেশিই সংগ্রাম করতে হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৪৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের জয় মাত্র ১২টিতে। হার ৩১টিতেই। একটি মাত্র ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাত্র তিনটি ম্যাচ খেললেও হারতে হয়েছে একটিতে। দু’টি জয়ের একটি আসে ২০০৬ সালে, খুলনায়। আরেকটি জয় আসে সাত বছর পর ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের মাটিতে।

তবে, পরিসংখ্যান ভুলে ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজের শিরোপাও হাতে তুলতে দৃঢ়প্রত্যয়ের কথা বলছেন মাশরাফি। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতে আমরা  বেশ আত্মবিশ্বাসী। সেই আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়েই সফরকারীদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজটিতেও জয় পেতে চেষ্টা করবো।’

তবে, টি-টোয়েন্টি সিরিজে যে কোনো দলই পিছিয়ে থাকবে না, সে কথা বলতেও দ্বিধা করলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক। বললেন; ‘ক্রিকেটের অন্য দুই ফরম্যাট টেস্ট ও ওয়ানডেতে ছোট দল-বড় দলের বিষয় থাকলেও টি-টোয়েন্টিতে এ রকম কোনো বিষয়ই নেই। টি-টোয়েন্টি এমন একটি খেলা, যেখানে বল ঠেকানোর কোনো সুযোগ নেই। সবসময়ই একটি আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে থাকতে হয়। তাই আগে থেকেই ভবিষ্যদ্বাণী করা মুশকিল’।

দলের এখনকার উইনিং কম্বিনেশন নিয়েই জিম্বাবুয়ের মোকাবেলা করবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দেন বাংলাদেশ অধিপতি। তবে, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতি অনুভব করার কথাও বলেন তিনি।

মাশরাফি জানান, বর্তমান স্কোয়াডের তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, নাসির হোসেন ও সাব্বির রহমানের মতো ব্যাটসম্যানদের নিয়ে সেরা স্কোয়াডটি নিয়ে পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করেই জয় পেতে চাইছেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি তার বোলিং আক্রমণের পরিকল্পনার কথাও জানিয়ে দেন। তিনি নিজে, কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান, আলামিন হোসেন, আরাফাত সানি ও নাসির হোসেনকে নিয়ে বোলিং স্কোয়াডের চূড়ান্ত বিবেচনায় রেখেছেন। পাশাপাশি প্রতিপক্ষের সার্বিক দুর্বলতা বিবেচনা করে এই ম্যাচে নবাগত কামরুল ইসলাম রাব্বিকেও মাঠে নামাতে পারেন।

অবশ্য, মাশরাফির দলের জন্য ভালো খবরও আছে উল্টো দিক থেকে। টি-টোয়েন্টিতে প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে শিবিরের চিত্র আরও অসন্তোষজনক। দলটি এ পর্যন্ত ৪০টি-টি টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছে মাত্র সাতটিতে, হেরেছে ৩২টিতে আর বাকি ম্যাচটি টাই হয়েছে।

তারপরও ওয়ানডে ফরম্যাটে ক্রমে উন্নতি করা বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতে না পারলেও অন্তত টি-টোয়েন্টি সিরিজে জয় পেতে মরিয়া সফরকারী দলটি। বুধবার (১১ নভেম্বর) তৃতীয় ওয়ানডের পর ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সে কথাই জানালেন সফরকারীদের অধিনায়ক চিগম্বুরা। তিনি বলেছিলেন, ‘টি-টোয়েন্টি এমন একটি খেলা, যেখানে যে কেউই ভাল খেলতে পারে। এখানে  অভিজ্ঞতার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, ম্যাচের দিন কারা কীভাবে তাদের পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে।’ বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে চিগুম্বুরা আরেকটু যোগ করে বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আসলে সত্যিকার অর্থে ধারালো ব্যাটিং প্রয়োজন হয়। যেহেতু সীমিত ওভারের খেলা, তাই ম্যাচে যারা সেরাটি দিতে পারবে তারাই জিতবে।’

জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক ইঙ্গিত দেন, টি-টোয়েন্টিতে চামু চিবাবা, রেগিস চাকাবা, ক্রেইগ আরভিন, শন উইলিয়ামসদের নিয়ে গড়া তার দলের ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আসতে পারে। আর বোলিংয়ে থাকবেন অধিনায়ক নিজেসহ তিনাসে পানিয়াংগারা, তাউরাউ মুজারাবানি, লুক জংওয়ে ও গ্রায়েম ক্রেমার।

অতীত, নিকট ‍অতীত, পরিসংখ্যান আর বাস্তবতার বিচারে মাশরাফি-চিগম্বুরারা যে লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিলেন, ক্রিকেটপ্রেমীরা নিশ্চয় শুক্রবার সে লড়াই-ই দেখতে উদগ্রীব থাকবেন।