হাজারীবাগে চাঞ্চল্যকর চিকিৎসক হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার তিন। ছবি:ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),রাজধানীর হাজারীবাগ প্রতিনিধি, শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪ || অগ্রহায়ণ ১৫ ১৪৩১ :
রাজধানীর হাজারীবাগে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিক ডা. এ কে এম আব্দুর রশিদের চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির হাজারীবাগ থানা পুলিশ। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) খুলনার ডুমুরিয়া ও ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকা হতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
Advertisement
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. নাইম খান (২২), মো. জাহিদুর রহমান রিফাত (২০) ও মো. আবু তাহের শিকদার ওরফে শাওন (২২)। এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত মো. নাইম খানের দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ধারালো চাকু উদ্ধার করা হয়।
হাজারীবাগ থানা সূত্রে জানা যায়, ঘটনার ভিকটিম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিক ডা. এ কে এম আব্দুর রশিদ বছরের অধিকাংশ সময় যুক্তরাজ্যে অবস্থান করতেন। মাঝেমধ্যে তিনি বাংলাদেশে আসতেন। গত ১৫ নভেম্বর হাজারীবাগ থানার পশ্চিম ধানমন্ডির রোড ভিকটিমের বাসায় রাত আড়াইটায় অজ্ঞাতনামা ৩ থেকে ৪ জন দুষ্কৃতকারী প্রবেশ করে। প্রবেশের পর নিহত ডা. এ কে এম আব্দুর রশিদের সঙ্গে দুষ্কৃতকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। পরিস্থিতি আচঁ করতে পেরে তার স্ত্রী সুফিয়া রশিদ পাশের কক্ষ থেকে এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে একজন দুস্কৃতকারী তার মুখ চেপে ধরে বাধা প্রদান করে। একপর্যায়ে দুস্কৃতকারীরা ধারালো চাকু দিয়ে ডা. এ কে এম আব্দুর রশিদের বুকে একাধিকবার আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
Advertisement
এসময় তার স্ত্রীর চিৎকারে দুস্কৃতকারীরা দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত ডা. আব্দুর রশিদকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ভিকটিমের চাচাতো ভাই মো. রেজাউল করিম বাদী হয়ে গত ১৫ নভেম্বর হাজারীবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্তকালে ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ বিশ্লেষণ, ঘটনার পূর্বের বিভিন্ন সময়ে উক্ত বাসায় মেস হিসেবে বসবাসকারী ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ২৯ নভেম্বর খুলনার ডুমুরিয়ার শাহপুর বাজার এলাকা থেকে নাইম খান ও জাহিদুর রহমান রিফাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। হাজারীবাগ থানার অপর একটি টিম ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আবু তাহের শিকদার ওরফে শাওনকে গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক তদন্ত ও গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত নাইম খান ও জাহিদুর ভিকটিমের বাসার একটি ফ্ল্যাটে মেস করে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করত। বকেয়া ভাড়া নিয়ে ভিকটিমের স্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন সময় তাদের মনোমালিন্য হতো। এতে তারা ভিকটিম ও তার স্ত্রীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়। নাইম খান ও জাহিদুর রহমান রিফাত বাড়ির মালিক এর বাসায় প্রবেশ করে টাকা পয়সা নেয়ার পরিকল্পনাসহ উক্ত টাকা পয়সা ব্যবহার করে রেষ্টুরেন্ট ব্যবসার পরিকল্পনা করে।
Advertisement
পরিকল্পনা মোতাবেক গত ১৫ নভেম্বর গভীর রাতে আবু তাহের শিকদার ওরফে শাওনকে সঙ্গে নিয়ে ভিকটিমের বাসার সীমানা প্রাচীর টপকে টাকা পয়সা লুট করার জন্য বাসায় প্রবেশ করে। এসময় ভিকটিম ডা. আব্দুর রশিদ তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার জন্য উঠলে গ্রেপ্তারকৃতদের উপস্থিতি টের পান। ডা. আব্দুর রশিদ তাদের বাধা দিতে গেলে তার সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃতদের ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে ধারালো চাকুর আঘাতে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ভিকটিম নিহত হন। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
হাজারীবাগে চাঞ্চল্যকর চিকিৎসক হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার তিন। ছবি:ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি)