ফাঁসির জন্য দিন গুনছে ওসি প্রদীপ, দেখতে আসে না পরিবার (ভিডিও)

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিশেষ প্রতিনিধি, শনিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪ ||  কার্তিক ২৫ ১৪৩১  :

 

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিয়ে কারাগারে রয়েছেন প্রদীপ কুমার দাশ। ওই হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই আলোচনায় ছিলেন একের পর এক বিভিন্ন অপকর্মের জন্য। টেকনাফে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা। বর্তমানে মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিয়ে কারাগারের নির্জনে সময় পার করছেন ওসি প্রদীপ। তবে তাকে দেখতে আসছেন না কোনো আত্মীয়স্বজন।

Advertisement

মৃত্যুদণ্ডাদেশ মাথায় নিয়ে কারাগারে দিন পার করছেন ওসি প্রদীপ এবং পরিদর্শক লিয়াকত আলী। রাত-দিন অনেকটা শুয়ে-বসেই দিন কাটছে তাদের। তবে এত অপকর্মের পরেও অনুতপ্ত নন ওসি প্রদীপ, যদিও ফাঁসিতে ঝুলতে হবেই, এমন শঙ্কাও আছে তার। তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন না পরিবারের কেউ।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ওসি প্রদীপ গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারেই রয়েছেন। একই কারাগারে রয়েছেন পরিদর্শক লিয়াকত আলীও। প্রথমে জেল কোড অনুযায়ী, ওসি প্রদীপ ডিভিশন সুবিধা পেতেন। তবে রায়ের পর অর্থাৎ ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি মৃত্যুদণ্ডাদেশের পর থেকে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় ডিভিশন সুবিধা বাতিল হয়ে যায় প্রদীপের। বর্তমানে সাধারণ কয়েদিদের মধ্যে থাকছেন ওসি প্রদীপ।

এদিকে, প্রদীপের দুর্নীতির টাকা রক্ষা করতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন তার স্ত্রী চুমকিও। দুর্নীতির মামলায় ২১ বছর দণ্ডিত হয়ে তিনিও কারাগারে। কারা সূত্র বলছে, মৃত্যুদণ্ডাদেশ মাথায় নিয়ে কারাগারে দিন পার করছেন ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলী। রাত-দিন অনেকটা শুয়ে-বসেই দিন কাটছে তাদের। তবে এত অপকর্মের পরেও অনুতপ্ত নন প্রদীপ, যদিও ফাঁসিতে ঝুলতে হবেই, এমন শঙ্কাও আছে তার। তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন না পরিবারের কেউ কিংবা কোনো স্বজন।

Advertisement

দুর্নীতি ও নানা অপকর্ম করে স্ত্রী-সন্তানের জন্য সম্পদের পাহাড় গড়েছিলেন প্রদীপ কুমার দাশ। ক্ষমতার জোরে সৎবোন রত্না বালা প্রজাপতির বাড়ি পর্যন্তও দখল করে নিয়েছিলেন তিনি। প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির নামে একাধিক বাড়ি, ফ্ল্যাট, ব্যবসাসহ সম্পদের পাহাড় গড়ার তথ্য পায় দুর্নীতি দমন কমিশন। পরে এই মামলায়ও ফেঁসে যান প্রদীপ দম্পতি। এছাড়াও ২০২০ সালের ৩১ জুলাই প্রদীপের পরিকল্পনায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ।

জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে পুলিশে যোগ দেন প্রদীপ কুমার দাশ। চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় কর্মরত থাকার সময় ২০০৪ সালে এক নারীর জমি দখলের ঘটনায় বরখাস্ত হয়েছিলেন তিনি। পরে কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় উপপরিদর্শক হিসেবে কাজ করেন। এরপর জেলার মহেশখালীতে ও সর্বশেষ টেকনাফের ওসি হিসেবে দায়িত্ব পান।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রদীপ টেকনাফের ওসি থাকাকালীন ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছে কমপক্ষে ১৪৫ জন মানুষ। সিনহা হত্যার ঘটনার পর ২০২০ সালের আগস্টে কারাগারে যাওয়ার পর ওই বছরের ১২ আগস্ট থেকে পরবর্তী এক মাসের মধ্যে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের আদালতে ১২টি মামলায় ১৫টি হত্যার অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। ক্রসফায়ার নিয়ে সংবাদ করায় এক সাংবাদিককে ব্যাপক নির্যাতনের অভিযোগেও মামলা হয় প্রদীপের নামে।

Advertisement

৩০ সেপ্টেম্বর সেনাসদরে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সিনহার মা ও বোন। এ সময় তারা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং দ্রুততার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের শাস্তি কার্যকর করার দাবি জানান। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদানের অঙ্গীকার করেন।