ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ভয়েস অব মেঘনার সৌজন্যে, বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪ || কার্তিক ২২ ১৪৩১ :
বর্তমান সময়ে রাজনীতির অঙ্গনে একটি বিষয় স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে-নেতাদের প্রতি অন্ধ ভক্তি এবং অতিরিক্ত তেলবাজির প্রবণতা। কিছু অনুসারী এমনভাবে নেতা-ভক্তিতে মগ্ন হয়ে যান যে, নেতাকে প্রায় তাঁদের জন্মদাতা পিতার মতো করে পূজা করতে শুরু করেন। এই চাটুকারিতা এবং অতিভক্তির কারণে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং রাজনীতির সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যাচ্ছে।
Advertisement
এমন পরিস্থিতিতে বিপরীত মতাবলম্বীরা অনেকেই এই চাটুকারদের নিয়ে নানা তির্যক মন্তব্য করেন। কেউ বলেন, এরা “দালাল,” কেউবা বলেন “তেলবাজ”। আবার কিছু মানুষ তাঁদেরকে নিয়ে আরও সরাসরি এবং কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন। এমন চাটুকার ও আত্মত্যাগী কর্মী একসময় ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকদের মধ্যেও দেখা যেত, যারা অন্ধভাবে নেতা এবং দলের প্রতি নিবেদিত ছিল। কিন্তু এদের কর্মকাণ্ডই আজ রাজনীতি এবং সমাজকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
এভাবে নেতার প্রতি অন্ধ ভক্তির কারণে কর্মীরা প্রায়শই যেকোনো প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করতে প্রস্তুত থাকেন, এমনকি সামাজিক শিষ্টাচারও ভুলে যান। তেলের ভান্ডার ভরিয়ে নেতা-ভক্তির এই সংস্কৃতি আদতে নেতাদেরও ভুল পথে চালিত করে। নেতারা প্রকৃত সমর্থনের আড়ালে একধরনের ‘হ্যাঁ-বাবা’ ভক্তদের দ্বারা ঘিরে থাকেন, যা তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং সমাজের প্রকৃত অবস্থা থেকে তাঁদের বিচ্ছিন্ন করে।
রাজনীতির উদ্দেশ্য হওয়া উচিত জনগণের কল্যাণ এবং সামাজিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা।
Advertisement
তবে অন্ধ সমর্থন এবং অতি-ভক্তির কারণে অনেক সময়ই এই লক্ষ্যের পরিবর্তে ব্যক্তি-ভক্তি এবং স্বার্থপরতাই প্রাধান্য পায়। ফলে রাজনীতি হয়ে পড়ে নেতার স্বার্থ রক্ষার মাধ্যম। এই প্রবণতা সমাজের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সামাজিক মূল্যবোধকে প্রভাবিত করছে।
প্রকৃত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একজন রাজনীতিককে ভালোবাসার আগে উচিত সমাজ এবং দেশের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া। প্রতিবেশী এবং সমাজের সকল মানুষের প্রতি দায়িত্ব পালন, মতপার্থক্যকে সম্মান করা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করা উচিত। কেবল নেতা-ভক্তিতে নিজেকে নিমজ্জিত না করে সমাজের প্রকৃত কল্যাণে কাজ করাই সত্যিকারের রাজনৈতিক আদর্শ।
এই সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হলে রাজনৈতিক কর্মীদের নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনতে হবে এবং নেতার প্রতি অন্ধ নয়, বরং বাস্তবসম্মত ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে। তবেই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে সৌহার্দ্য বজায় থাকবে।