ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি,শনিবার ২৬ অক্টোবর ২০২৪ || কার্তিক ১০ ১৪৩১ :
শ্বাসকষ্টজনিত কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পরিসংখ্যান বিভাগের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। তবে এ মৃত্যুর কারণ হিসেবে চবি মেডিক্যাল সেন্টারের চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
Advertisement
ওই ছাত্রীর নাম নাঈমা নির্মা। তিনি পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট এলাকার একটি বাসার দুই তলায় থাকতেন ওই ছাত্রী। শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে বাসার অন্য দুইজনের সহযোগিতায় তাকে চবি মেডিক্যাল সেন্টারে নেওয়া হয়। পরে দুপুর ২টার দিকে অক্সিজেন দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক সান্তনু মজুমদার। কিন্তু মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে এক নম্বর গেইট এলাকায় গেলে সিলিন্ডারের অক্সিজেন শেষ হয়ে যায়। পরে হাটহাজারী থেকে একটি সিলিন্ডার কিনে পুনরায় চমেক হাসপাতালের উদ্দেশে যান তারা। সেখানে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাঈমাকে মৃত ঘোষণা করেন।
Advertisement
নাঈমার সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম নিথি বলেন, নাঈমার অ্যাজমার সমস্যা ছিল। শুক্রবার এ সমস্যা গুরুতর হলে তাকে চবি মেডিক্যালে নেওয়া হয়। তার জরুরি অক্সিজেনের প্রয়োজন ছিল। তবে চবি মেডিক্যালে গাফিলতি কারণে অক্সিজেন দিতে দেরি হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সান্তনু মজুমদার বলেন, ‘যে দুইজন ওই ছাত্রীকে নিয়ে মেডিক্যালে এসেছিল, তারা বাসার মধ্যেই অজ্ঞান অবস্থায় পেয়েছিল। সিড়ি দিয়ে নামার সময়ও কোনো রেস্পন্স পায়নি বলে জানায় তারা। নিয়ে আসার পর করিডর থেকে চেক করে ভেতরে নিয়ে প্রেশারসহ সবকিছু চেক করে কোনো রেস্পন্স পাইনি। তবুও ফারদার ম্যানেজমেন্টের জন্যই মেডিক্যালে চেকাপের জন্য পাঠানো হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তার সঙ্গে যারা ছিল, আমি ইনডিরেক্টলি তাদের বলেছি, তার আব্বা-আম্মাকে খবর দিতে। কারণ, ইসিজি বা নিশ্চিত না হয়ে সরাসরি কিছু বলা যায় না। আমরা তাকে ১০ লিটারের হাই ফ্লো সিলিন্ডারটাই দিয়েছিলাম। এটা ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট চলার কথা।’
চবি মেডিক্যালের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব বলেন, ‘প্রশাসন থেকে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। চিকিৎসকের যদি কোনো গাফিলতি থাকে, অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Advertisement
এদিকে, চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ এনে শুক্রবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা চবি মেডিকেলে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় মেডিকেলের উন্নয়নে ১০ দফা দাবি পেশ করেন তারা। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন, ওষুধ সরবরাহ ও অ্যাম্বুলেন্স সংখ্যা বৃদ্ধি, সাইকিয়াট্রিস্ট ও ফিজিওথেরাপিস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি ও নাঈমা নির্মার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।