ঢাকা: না পরিবার, না দল। কারও সঙ্গে নয়। মন্ত্রীর ঈদের সঙ্গী ছিলো সড়ক! তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ঈদের আগের রাতে সশরীরে রাস্তা দেখে মেঘনা থেকে ঢাকায় ফিরলেন। রাতের ঘুম শেষে সকালে ঈদ। সে সময় আবার ছুটলেন সড়কে। গন্তব্য তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী। সেখান থেকে আবার রওনা দিয়ে রাতে চট্টগ্রামে। ভোরে সড়ক দেখতে দেখতে পৌঁছালেন বান্দরবানে।
এখন সেখান থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত এসেছেন। সড়ক দেখে দেখেই ফিরছেন ঢাকায়- এভাবেই ঈদের আগের দিন, ঈদের দিন এবং পরের দিনও সড়কেই রয়ে গেলেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বললেন, ‘ঈদ আর করতে পারলাম না, সড়কেই সময় চলে গেলো’।
শুক্রবার (০৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় মন্ত্রী যখন বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন তিনি বান্দরবান থেকে মাত্র চট্টগ্রামে ফিরেছেন।
বললেন, ‘ঈদের দিন খারাপ লাগলেও রাস্তা থেকে শত শত সিএনজি চালিত অটোরিকশা দেখা মাত্র সরিয়ে দিয়েছি। গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে অটোরিকশা আটকে অভিযান চালিয়েছি। এসব সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ’।
একইভাবে কক্সবাজার-চকরিয়া সড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে অভিযানের কারণে ঈদের পরের ব্যস্ততম সময়ে কক্সবাজার-পটিয়া সড়কে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো প্রশ্রয় দিলেই খারাপ নজির হবে। এ কারণে ঈদের দিনও প্রশ্রয় দেইনি। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে স্ট্রিকলি সরিয়ে দিয়েছি’।
তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন নিজ নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীতে স্থানীয়দের সঙ্গে দু’টি মতবিনিময় সভা করেছি। তারপর ঈদের রাতেই চট্টগ্রামে চলে গেলাম। ভোরে ঘুম থেকে উঠেই বান্দরবানে পৌঁছালাম। ঈদের দিন সড়কের ইঞ্জিনিয়ারদের ৬ ঘণ্টা ছুটি দিয়েছিলাম। তারপর আবার রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছি। সমস্যা যেখানে দেখেছি, সঙ্গে থাকা ইঞ্জিনিয়ারদের সেখানে নামিয়ে দিয়েছি। সাসপেন্ডের ভয়ে তারা কেউ রাস্তা ছাড়েননি’।
আরেকটি বিষয়ে ওবায়দুল কাদের তার পর্যবেক্ষণ জানিয়ে বলেন, ‘মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেটসহ চলাচল বাধ্যতামূলক। এ নিয়ম ঢাকায় প্রায় ৯০ শতাংশ মানা হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে এক হাজার জনে একজনও হেলমেট পরেন না। দু’জন নিয়ে চলছেন, এমনটাও খুব রেয়ার। ৯৮ শতাংশ মোটরসাইকেলে তিনজন ওঠেন। এদের অধিকাংশ ইয়াং এবং আরো ইন্টারেস্টিং হলো যে, অধিকাংশই রাজনৈতিক নেতাকর্মী। তারা পুলিশকেও তোয়াক্কা করেন না’।
‘এ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি। এটা ঠিক হতে একটু সময় লাগবে’ বলেও বাংলানিউজকে জানান ওবায়দুল কাদের।
মন্ত্রী জানান, বান্দরবানে গিয়ে তিনি সীমান্ত সড়কের ঘোষণা দিয়েছেন। রামগড় থেকে উখিয়া পর্যন্ত ৫ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৩২ কিলোমিটার সীমান্ত সড়কের কাজ সেনাবাহিনী আগামী বছর থেকে শুরু করবে।
অন্যান্য ঈদের চেয়ে এবার যে একটু হলেও স্বস্তিতে ঈদযাত্রা হয়েছে। তার আগে সক্রিয় ভূমিকায় নেমেছিলেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দুর্ঘটনা আর যানজট স্পট ধরে একের পর এক সভা করে রাস্তায় নামিয়েছিলেন তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের।
প্রথমবারের মতো এমন উদ্যোগে যাত্রা আগের যেকোনো বারের চেয়ে ভালো ছিলো বলেও জানান সড়ক ও সেতুমন্ত্রী।