ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),আইন আদালত প্রতিনিধি , মঙ্গলবার ১৫ অক্টোবর ২০২৪ || আশ্বিন ৩০ ১৪৩১ :
মোহাম্মদপুরে ডাকাতিতে ব্যবহৃত গাড়িটি ভাড়া করা হয় র্যাব পরিচয়ে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ডাকাতির ঘটনায় র্যাবের কয়েকজন সদস্য জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের আটক করে নিজেদের হেফাজতে রেখেছে র্যাব। এর মধ্যে তিনজন র্যাব-৪-এর সদস্য এবং দুজন অন্য দুটি বাহিনীর সাবেক সদস্য।
Advertisement
আটক র্যাব সদস্যরা হলেন মোস্তফা, আরিফ ও ইমাম। তাঁদের বিভিন্ন বাহিনী থেকে র্যাবে পদায়ন করা হয়েছিল। মিরপুরে র্যাব-৪-এর ব্যাটালিয়ন অফিসের আশপাশের অপরাধীদের সঙ্গে নিয়ে তাঁরা মোহাম্মদপুরে ওই ডাকাতিতে অংশ নেন।
র্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে আটক আটজন ডাকাত র্যাব-৪-এর কয়েকজনের নাম বলেছে। সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। যাচাই-বাছাই শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।’
গত শুক্রবার ভোররাতে মোহাম্মদপুরে আবু বক্কর নামের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে সেনা ও র্যাবের পোশাকে ডাকাতি করে একটি দল। এ ঘটনায় শনিবার সকালে আবু বক্কর অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার তদন্ত করছে ডিএমপির ডিবির সাইবার ও স্পেশাল ক্রাইম টিম। ডিবির পাশাপাশি র্যাবও এ ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। তাঁরা গত শনি ও রোববার ডাকাতির ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করে বলে গণমাধ্যমকে জানান। তবে গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে তিনজনকে ডিবিতে হস্তান্তর করে বাকি পাঁচজনকে নিজেদের হেফাজতে রাখে র্যাব।
Advertisement
র্যাব যে তিনজনকে ডিবির কাছে হস্তান্তর করেছে তাঁরা হলেন শাহ আলীর আরিফুল ইসলাম তালুকদার, ঝিনাইদহের জাহিদ হাসান এবং মুন্সিগঞ্জের আব্দুস সালাম। একই ঘটনায় ডিবিও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন মিরপুর পাইকপাড়ার জাকির হোসেন, শরিফুল ইসলাম তুষার ও কাফরুলের মাসুদুর রহমান। তাঁদের মধ্যে মাসুদুর রহমান বিজিবির চাকরিচ্যুত সদস্য। তিনি ২০০০ সালে বিজিবিতে চাকরি শুরু করেন। ২০১০ সালে তিনি চাকরিচ্যুত হন। বাকি পাঁচজন সাধারণ অপরাধী। পুলিশ তাঁদের গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করে। শুনানি শেষে ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেন তাঁদের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ডিবি সূত্র জানিয়েছে, র্যাব সদস্যদের সঙ্গে সাধারণ অপরাধীদের পূর্বপরিচয় ছিল। মোহাম্মদপুরের এক সোর্সের মাধ্যমে তাঁরা ওই বাড়িটির বিষয়ে তথ্য নেন, পরে বাড়িটি ডাকাতির জন্য নির্বাচিত করেন। এরপর তাঁরা র্যাব ও সেনাবাহিনীর পোশাক পরেই ডাকাতি করতে আসেন। ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস জব্দ করেছে ডিবি। সেটিও বিভিন্ন সময় একটি সরকারি সংস্থার সদস্যরা ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, গত আগস্টে সরকার পতনের পর রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হলে দ্রুত টাকাপয়সার মালিক হওয়ার লক্ষ্যে ডাকাতি ও বিভিন্ন ব্যক্তিকে অপহরণের পরিকল্পনা করেন গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা। তাঁরা সম্প্রতি আরও তিনটি ডাকাতির চেষ্টা করেন। তবে সেসব বাড়ির মালিকেরা গেট না খোলায় তাঁরা ঢুকতে পারেননি।
Advertisement
এ বিষয়ে গোয়েন্দা-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ-উত্তরের উপপুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘মামলাটি তদন্তাধীন। অনেক তথ্য আমরা পাচ্ছি, সবকিছু যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’