প্রতিক
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিপ্লব সিকদার মেঘনা থেকে,শুক্রবার ১১ অক্টোবর ২০২৪ || আশ্বিন ২৬ ১৪৩১ :
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার বড়কান্দা ইউনিয়নে সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই অবনতির দিকে। গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে এসেছে এমনই চিত্র। গত বুধবার বড়কান্দা এলাকায় একইদিনে ৩ পরিবারে চুরির খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে কান্দারগাও এলাকার বাসিন্দা এক যুবতী বড়কান্দা এলাকার একটি বেসরকারি মাইক্রো ফিন্যান্স কোম্পানি থেকে দুই লাখ টাকা উত্তোলন করে উপজেলা সদরে অবস্থিত জনতা ব্যাংকে অটোরিকশা করে যাওয়ার পথে ভাওরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ ভবন সংলগ্ন এলাকায় এলে আগে থেকে পিছু নেওয়া বড়কান্দা এলাকার একদল সন্ত্রাসী যুবতীর অটোরিকশার গতিরোধ করে ভ্যানিটি ব্যাগ টানাটানি অশ্লীল ভাষায় গালমন্দসহ ছিনতাই চেষ্টা কালে আকস্মিক টহলরত পুলিশ সামনে পরে গেলে যুবতীটা বড় ধরনের দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়।
Advertisement
টহলরত পুলিশ একজনকে আটক করতে পারলেও বাকীরা পালিয়ে যায় তবে সব যুবকই বড়কান্দা এলাকার। যুবতীসহ, এক সন্ত্রাসী, ও যুবতীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। বিষয় টি বড়কান্দা এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শর্তসাপেক্ষে থানা থেকে তাদের ছাড়িয়ে নেন। শর্ত ছিল গতকাল শুক্রবার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ,স্থানীয় ইউপি সদস্যরা এসে সংঘবদ্ধ চক্রের সকল সদস্য ও তাদের অভিভাবকদের এনে শালিস করে সমাধান করতে হবে। যেই কথা সেই কাজ থানার গোল ঘরে বড়কান্দা ইউনিয়নের বড় কান্দা এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ স্থানীয় ইউপি সদস্যরা থানা পুলিশের সহায়তায় এক শালি সি’তে বসে। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত যুবতীকে সন্ত্রাসী কায়দায় পিছন থেকে অটোরিকশাযোগে এসে দিনেদুপুরে যুবতীর অটোরিকশা গতিরোধ করে যারা সর্বনাশ বা ছিন্তাই করতে চেয়েছে তাদেরসহ অভিভাবকরা এসে যার যার সন্তানকে পিটিয়ে সালিসে ক্ষমা ও অপরাধ না করার মর্মে মুচলেকা দিয়ে যায়। গত বুধবারের পুরো ঘটনাটি তুলে ধরার কারণ হলো প্রান্তিক পর্যায়ের সমাজে এভাবে দিনেদুপুরে দুই লাখ টাকাসহ যুবতীর উপর সন্ত্রাসী কায়দায় আক্রমণ যদি টহল পুলিশ আকস্মিক ঘটনা চক্রে সামনে না পরতো তাহলে এইটুকু অনুমান করা যায় বড় ধরনের দূর্ঘটনার স্বীকার হত।
Advertisement
একইদিন, একই এলাকার তিনটি ঘরে চুরি সংঘঠিত হওয়া,সংঘবদ্ধ চক্রটিও একই এলাকার। অপরাধ দমনে এভাবে থানায় বসে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সমাধান করাটা কতটা যৌক্তিক? আগেই বলে রাখা ভালো এ বিষয়ে মেঘনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জলিল বলেন আমরা অভিযোগ করতে বলেছিলাম কিন্তু ঐ ভিকটিম অভিযোগ করতে রাজি নন। পুলিশের বক্তব্যটাও নিয়ে কিছু প্রশ্ন চলে আসে গণ অভ্যুত্থানের পর মেঘনার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রাজনৈতিক দলের অস্থিতিশীলতা সহ নানা কারণে উত্তপ্ত। এই পরিস্থিতিতে একই এলাকার তিনটি ঘরে চুরিসহ সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকি এত বড় সংঘবদ্ধ চক্রের সকল সদস্য গুলোর প্রতি আইনী পদক্ষেপ কঠোর হতে পারতোনা? কেউ অভিযোগ করেনি এই অজুহাতে এভাবে এতগুলো ফৌজদারি অপরাধ একইসাথে একই এলাকায় ঘটেছে,সামাজিক ভাবে থানায় বিচার না করে আইন অনুযায়ী তাদের জিজ্ঞাসাবাদে চুরিসহ অন্যান্য অপরাধের তথ্য নেওয়া কি উচিত ছিলনা? গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর শান্তিপূর্ণ বসবাস করার জন্য যথাযথ আইনের প্রয়োগ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কি দায়িত্বশীরা দ্বায় এড়াতে পারে? অপরদিকে শারদীয় দুর্গাপূজা চলমান। একটি এলাকায় আইনের সঠিক ব্যবহার হলে উপজেলার অন্য এলাকা গুলো স্বাভাবিক ভাবেই অপরাধ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতো। দায়িত্বশীলদের এখনো সময় আছে যেহেতু মুচলেকায় অপরাধীদের বিচার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আবারও আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধের তথ্য পাওয়া সম্ভব যদি দায়িত্বশীলদের সুমতি হয়। গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশে পুলিশের ভুমিকা নতুন উদ্যেমেই দেখতে চায় সাধারণ মানুষ। পতীত সরকারের ফ্যাসিবাদ আচরণের একটি অংশ পুলিশের উপর ভর করে গুরুপাপে লঘুদণ্ড অথবা এর বিপরীত। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে বর্তমান সরকারকে বিতর্কিত বা ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে কিনা ভেবে দেখার বিষয়।