ইউপি চেয়ারম্যানকে হত্যা: সাড়ে ৩ মিনিটেই শেষ কিলিং মিশন (ভিডিও)

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),কুষ্টিয়ার দৌলতপুর প্রতিনিধি,বুধবার ০৯ অক্টোবর ২০২৪ ||  আশ্বিন ২৪ ১৪৩১ :

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চরাঞ্চলে সন্ত্রাসী বাহিনী দমনে ভুমিকা রাখার কারণেই ইউপি চেয়ারম্যান নঈমুদ্দিন সেন্টুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে, এমনটাই দাবি তার পরিবারের। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় সন্ত্রাসীরা ফের সংগঠিত হয়ে চেয়ারমানকে হত্যা করেছে বলে জানান তারা।

Advertisement

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে চেয়ারম্যান সেন্টুর জানাজা ও দাফন শেষে পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী এমনটাই দাবি করেন। পুলিশ বলছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের এরই মধ্যে চিহ্নিত করা গেছে। অচিরেই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।

স্থানীয়রা বলছে, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর দৌলতপুর উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে মাথাচাড়া দেয় বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। ইউপি চেয়ারম্যান নঈমুদ্দিন সেন্টু এলাকায় শান্তি ফেরাতে তার ভাই বিশিষ্ট শিল্পপতি আরমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাকের মাধ্যমে তদবির করে ফিলিপনগর এলাকায় একটি র‌্যাব ক্যাম্প স্থাপন করেন। এরপর র‌্যাব এলাকায় শান্তি ফেরাতে কাজ শুরু করে। ওই সময় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী নিহত হয়। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই দেশে পট পরিবর্তনের পর ফের সংগঠিত হয়ে বিক্ষুদ্ধরা চেয়ারম্যান সেন্টুকে হত্যা করেছে।

নিহত সেন্টুর মেয়ে মৌটুসি জানান, তারা বাবা এলাকার মানুষের জন্য সারা জীবন কাজ করে গেছেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিজ কার্যালয়ে দাপ্তরিক কাজ করছিলেন। কিন্তু এই ভালো মানুষটাকে ওরা বাঁচতে দিল না। এলাকার কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী তার বাবাকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করেছে।

এ সময় নিহত চেয়ারম্যানের স্ত্রী নাসরিন তার স্বামী হত্যার বিচার দাবি করেন। নিহতের একমাত্র ছেলে কনক জানান, কারা বাবাকে হত্যা করেছে তা এলাকাবাসী জানেন। ওরা চিহ্নিত সন্ত্রাসী ওদের দৃষ্টান্তুমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

Advertisement

নিহতের বড় ভাই আরমা গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান, এলাকায় শান্তি ফেরাতে আমি এবং আমার ভাই কাজ করেছি দীর্ঘদিন। তখন এলাকা সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে জিম্মি ছিল। সেই পরিস্থিতি থেকে এলাকার মানুষকে স্বস্তি দিতে পেরেছিলাম। এমন কাজই হয়ত ভাইয়ের জীবন নাশের কারণ হয়েছে। তবে কারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এলাকার মানুষ সবাই জানেন। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও বিষয়টি জেনেছে। আমার শুধু এটুকুই চাওয়া ওরা যেন শাস্তি পায়।

ঘটনার দিন ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পাশেই ছিলেন ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ। তার বর্ণনামতে, হঠাৎ ৬/৭জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে ইউনিয়ন পরিষদের পেছনে ও ভেতরে ঢুকু চেয়ারম্যানকে গুলি করে। এ সময় উপস্থিত সবাই আতঙ্কিত হয়ে প্রাণভয়ে পালাতে থাকেন। তিনি আরও জানান, ৩ থেকে সাড়ে ৩ মিনিটের মধ্যে সন্ত্রাসীরা চেয়ারম্যানকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এ সময় তাদের সবার হাতেই অস্ত্র ছিল।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক জানান, হত্যাকারীরা চিহ্নিত হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। দ্রুতই তারা আইনের আওতায় আসবে। এ নিয়ে কুষ্টিয়া পুলিশের বেশ কয়েকটি ইউনিট কাজ করছে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে নিজ কার্যালয়ে একদল অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নঈমুদ্দিন সেন্টু। মঙ্গলবার সকালে ফিলিপনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় প্রয়াত এ চেয়ারম্যানকে।

ইউপি চেয়ারম্যান নঈমুদ্দিন সেন্টু। ছবি: সংগৃহীত