ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিশেষ প্রতিনিধি, মঙ্গলবার ০৮ অক্টোবর ২০২৪ || আশ্বিন ২৩ ১৪৩১ :
বছর ঘুরে কিন্তু থামে না অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা। এসব এজেন্সি বিদেশে ভালো চাকরি ও বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে নিঃস্ব করে চলেছে বিদেশ যেতে আগ্রহী অনেককে। সরকারের দুর্বল নজরদারিতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া এজেন্সিগুলোর আছে অনলাইন- অফলাইন ফাঁদ। এদেরই একজন নারায়ণগঞ্জের স্কুল শিক্ষিকা রোকেয়া আক্তার।
Advertisement
অস্ট্রেলিয়ার অভিজাত হোটেলে লাখ টাকা বেতনের চাকরির আশায় তিনি মায়ের একমাত্র জমি বেচে সংগ্রহ করেন বিদেশ যাওয়ার টাকা। তাকে দিয়ে খোলানো হয় একটি ব্যাংক একাউন্ট, দেয়া হয় ভুয়া ওয়ার্ক পারমিট। ফলে সেই আশায় গুড়ে-বালি পড়ে। বর্তমানে একটি ট্রাভেল এজেন্সিকে ৮ মাস আগে সাড়ে ৬ লাখ টাকা দিয়ে এখন চেক জালিয়াতির মামলার আসামি তিনি এবং তার পরিবার।
চ্যানেল 24-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রোকেয়া আক্তার বলেন, আমাদেরকে বলা হয় আপনি যদি অফিসে টাকা নিতে আসেন তবে আপনার নামে তো দেবই আপনার স্বামীর নামেও মামলা দেব। শুধু তাই নয়, অন্য কাউকে যদি অফিসে নিয়ে আসেন তবে তাদের সবার আমে মামলা দেব।
তিনি আরও বলেন, আমাদেরকে সহজ সরল পেয়ে তারা টাকাগুলি হাতিয়ে নিয়েছে। আমাদের যেহেতু কোনো কাগজ ইস্যু করতে পারেনি সেহেতু আমাদের বিদেশ যাওয়াও হচ্ছে না।
Advertisement
উন্নত জীবনের আশায় দুই যুগ ধরে সৌদি আরব প্রবাসী রোকেয়া আক্তারের স্বামী তাজুল ইসলাম চাকরি ছেড়ে দেশে ফেরেন। কিন্তু এখন বেকার দিন কাটছে তার।
চ্যানেল 24-কে তাজুল ইসলাম বলেন, আমি বেকার। অর্থনৈতিকভাবে একদম দুর্বল হয়ে পড়েছি। বলা যায় পুরো নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমরা যারা কর্মঠ তারা বেকার থাকতে পারি না, কিন্তু এই বরকতুল্লাহর কারণে আমি এখন পর্যন্ত বেকার।
রোকেয়া আক্তার এবং তার স্বামীর সঙ্গে এমন প্রতারণা করে জাবির কনসালটেন্সি ট্রাভেল এজেন্সি। কোনো রিক্রুটিং লাইসেন্স না থাকার পরও কীভাবে তারা বিদেশে কর্মী পাঠানোর কার্যক্রম চালাচ্ছে, জানতে চাইলে এ বিষয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির মালিক বরকত উল্লাহ্র সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে মেলেনি কোনো সদুত্তর।
Advertisement
মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কীভাবে দিনের পর দিন প্রতারণা করছে এসব প্রতিষ্ঠান? এমন প্রশ্নের উত্তরে অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বিএমইটি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়- এদের প্রতিনিয়ত এ বিষয়গুলো মনিটর করা দরকার। আমাদের দেশের পাশাপাশি যেসব দেশে এই ধরণের অবৈধ চক্রগুলো কাজ করে সেইসব দেশের দূতাবাসগুলোরও অনলাইনে চেক করা উচিত।
চ্যানেল 24 এর সগে রোকেয়া আক্তারের স্বামী তাজুল ইসলাম, বামে প্রতারক বরকতুল্লাহ
একটি টাস্কফোর্সের মাধ্যমে অনুমোদনহীন ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর পরামর্শ এই বিশ্লেষকের।