ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),মাদারীপুর প্রতিনিধি, রোববার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ :
মাদারীপুরে অতিরিক্ত মদপানে নাচানাচির পর সাগরিকা আহমেদ (২০) ও পারুল আক্তার (২৫) নামে দুই নারীর মৃত্যুর ঘটনায় তিনজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। রোববার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে নিহত সাগরিকার মামা বাবু মিয়া (৪৫), মা সাবিনা ইয়াসমিন পান্না (৪৫) ও ডালিয়া আক্তার (৪২) নামে এক নারীকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
Advertisement
এর আগে শনিবার দিবাগত (১৪ অক্টোবর) রাত আড়াইটার দিকে মাদারীপুর পৌরসভার কলেজ রোড এলাকায় লুৎফর রহমান মোল্লার বাসার ৪ তলায় অতিরিক্ত মদপানে ওই দুই নারীর মৃত্যু হয়। অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তিনজনকে। মারা যাওয়া দুইজন সম্পর্কে বান্ধবী। নিহত সাগরিকা মাদারীপুর শহরের বটতলা এলাকার মজিবুর রহমানের স্ত্রী ও পারুল ডাসার উপজেলার বালিগাঁও এলাকার ইয়াদ আলী মাতুব্বরের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত ১ অক্টোবর সাবিনা ইয়াসমিন পান্না তার মেয়ে সাগরিকা ও ভাই বাবু মিয়াকে নিয়ে কলেজ রোড এলাকায় লুৎফর রহমান মোল্লার বাসার ৪ তলায় ওঠেন। শনিবার রাতে ওই বাসায় আসেন অপরিচিত আরও ৪-৫ জন নারী। পরে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে হঠাৎ চিৎকার চেঁচামেচি শুনে তাদের রুমে ছুটে যান বাসার কেয়ারটেকার হেলাল সরদার। এ সময় তিনি ফ্লোরে সাগরিকাকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এছাড়া অসুস্থ অবস্থায় সাগরিকার বান্ধবী পারুল, মা পান্না, মামা বাবু ও ডালিয়া নামে এক নারীকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পারুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
মাদারীপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এনায়েত হোসেন মৃধা বলেন, সকালে চেঁচামেচি শুনে লুৎফর মোল্লার বাড়িতে এসে শুনি মদ খেয়ে দুই মেয়ে মারা গেছে। বাকিরা হাসপাতালে ভর্তি। কিছু দিন আগে এই বাসায় ভাড়া উঠেছে পান্না নামে এক নারী। তারা তিনজন বাড়িতে থাকতো। মাঝে মাঝে কিছু লোকজনও আসা-যাওয়া করতো এই বাসায়। সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জানাই।
Advertisement
আনিস নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, তারা দুই মাস পরপরই বাসা পরিবর্তন করে। তারা ভালো কাজ করলে তো তাদের এভাবে বাসা পরিবর্তন করা লাগে না।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রিয়াজ মাহমুদ বলেন, গভীর রাতে আমাদের এখানে ৪-৫ জন নারীকে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে দুজন আগেই মারা গেছেন আর দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ময়নাতদন্তের পর বাকি বিষয়গুলো জানা যাবে।
মাদারীপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, অতিরিক্ত মদপানের কারণে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি তারা খারাপ প্রকৃতির লোক ছিল। তারা প্রতিনিয়ত লোকজন নিয়ে মদপান ও নাচ-গান করে বেড়াতেন। দেশি-বিদেশি মদ খেয়ে বাসার সকলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বিষক্রিয়ায় ঘটনাস্থলে সাগরিকা মারা যান। অন্যদের হাসপাতালে নেওয়ার পর পারুলও মারা যান।
Advertisement
ওসি বলেন, গত ১ অক্টোবর মা, মেয়ে ও মামা ওই ভাড়া বাসায় ওঠেন। শনিবার রাতে বাসায় আসে অপরিচিত আরও ৪-৫ জন নারী। তারা মদ খেয়ে নাচানাচি করার পর এ ঘটনা ঘটে। এরপর অপরিচিতদের আর কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আপাতত তিনজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।