ঢাকা: রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার কোনো প্রভাব মেট্রোরেল প্রকল্পে পড়বে না বলে মনে করছে সরকার সংশ্লিষ্টরা। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে আসা জাপানিদের মৃত্যু এ প্রকল্পের ইতিহাসে গভীর ক্ষতচিহ্ন হয়ে থাকবে বলেও মনে করেন তারা।
সরকারের একাধিক প্রভাবশালী সূত্রের সঙ্গে কথা বলে তাদের এ মনোভাব জানা গেছে। সম্পর্কের উন্নয়নের মাধ্যমে জাইকা বা জাপান সরকারের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলেও মনে করেন ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালীরা।
প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বুধবার (০৬ জুলাই) এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, এ ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনায় একটা প্রকল্প এই পর্যায়ে এসে বন্ধ হতে পারে না। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশে এই হামলা এবারই প্রথম ঘটেছে। বারবার ঘটছে না।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের চলে যাওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা হতেই পারে। এত বড় একটা ঘটনা ঘটেছে, তাদের এতজন সহকর্মী মারা গেলেন। সবার পরিবার পরিজন আছে। সবাই সবার জন্য চিন্তা করেন। এ কারণেই তারা গেছেন। করণীয় নির্ধারণে তারা তাদের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন পরবর্তী কাজের কৌশল নিয়ে। এটা বড় কিছুই না। দেখতে হবে আগামী তিন মাসের মধ্যে তারা ফিরে আসেন কি না।
এর আগে মঙ্গলবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের জানান, জাপানের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইতালীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে তারা দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়েছেন এই হামলা দুই দেশের চলমান সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
এদিকে বুধবার জাইকা প্রধানও এক বিবৃতিতে যেকোন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পাশে থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
ঢাকার বহু প্রতীক্ষিত মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে জাইকার সঙ্গে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ সরকার।
জাইকা প্রধান শিনিচি কিতাওকা বলেন, হতাহতরা বাংলাদেশে জরিপ কাজের আগে জাইকার হয়ে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছেন এবং প্রত্যাশা ছিল আগামীতেও তারা সে অবদান রাখবেন।
জাইকার অর্থায়নে রাজধানী ঢাকায় ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার মেট্রোরেল রুট-৬ প্রকল্পে জাইকা সহায়তা দিচ্ছে ১৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
পাশাপাশি আরও দুটি রেলরুট নির্মাণের প্রস্তুতি শুরুর কথা ইতিমধ্যে জানিয়েছে সরকার। ৪২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রুট-১ হচ্ছে গাজীপুর থেকে ঝিলমিল প্রকল্প পর্যন্ত। মহানগরীর পূর্ব-পশ্চিমে সংযোগ বাড়াতে চূড়ান্ত করা হয়েছে মেট্রোরেল-৫ এর রুট।