পদত্যাগ চেয়ে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে ছাত্র (ভিডিও)

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),কুমিল্লা প্রতিনিধি ,শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ :

আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন এবং বিদ্যালয়ের টাকা দিয়ে বিপুল সম্পদ গড়েছেন, এমন অভিযোগ তুলে কুমিল্লায় একটি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করেছেন কিছু শিক্ষার্থী। তবে আলোচনায় এসেছে অন্য একটি বিষয়। সেটি হলো- ওই শিক্ষক বিদ্যালয় ত্যাগের পর তার চেয়ারে বসে পড়ে এক ছাত্র। সেখান থেকে ছবি তুলে পোস্ট দেয় ফেসবুকে। লিখে, আমাদের সু-সন্মানিত আলমগীর স্যার কোথায়।’

Advertisement

ঘটনাটি জেলার দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে ওই ছাত্রের ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রচুর সমালোচনা হয়।

প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসা ছবি পোস্ট করা ছাত্র ওই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের দশম শ্রেণিতে পড়ে।

এদিকে ওই শিক্ষার্থীর এমন কাণ্ডে বেজায় চটেছেন অভিভাবকসহ নেটিজেনরা। সোশ্যালে উগড়ে দিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায়। আর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি জানিয়েছে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি। ক্ষুব্ধ প্রশাসনও।

ভাইরাল ওই ছবিতে দেখা যায়, টেবিলের ওপর থাকা প্রধান শিক্ষক কাজী আলমগীর হোসেনের নেম প্লেট সামনে রেখে সাদা পোশাকে বসে আছে এক ছাত্র। এসময় ওই কক্ষে আর কাউকে দেখা যায়নি। ওই ছবি নিজের ফেসবুকেই আপলোড করে ওই ছাত্র লেখে, ‘আমাদের সু-সন্মানিত আলমগীর স্যার কোথায়।’

বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানায়, বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে। পরে প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগ করেন ও বিদ্যালয়ের অর্থে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। তাই স্বেচ্ছায় তাকে পদত্যাগ করতে হবে।

Advertisement

খবর পেয়ে প্রথমে দেবিদ্বার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং পরে দুপুরের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়টির সভাপতি নিগার সুলতানা সেনাবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। পরে বিকাল সাড়ে চারটার দিকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ না করেই বিদ্যালয় ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে ওই ছাত্র বলে, সবাই অফিস কক্ষ ত্যাগ করার পর আবেগে চেয়ারে বসে ছবি তুলি। এটা আমার ঠিক হয়নি, সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমার ফেসবুক থেকে তা মুছে দিয়েছি।

প্রধান শিক্ষক কাজী আলমগীর হোসেন বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। কোথাও ওই দলের সদস্য পদও নাই। দেবিদ্বারে নাকি আমার দুটি বাড়ি আছে, তাও তাদের প্রমাণ দিতে বলেছি। ওরা প্রমাণ দিতে পারেনি।

প্রধান শিক্ষক বলেন, ওরা হয়তো কারও ইন্ধনে ভুল বুঝে আন্দোলনে নেমেছে। অভিযোগ তদন্তের আগেই পদত্যাগে বাধ্য করা দেশে এখন যেন একটি রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিগার সুলতানা বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে আমরা বিধি মোতাবেক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো। কিন্তু প্রধান শিক্ষক অফিস থেকে বের হওয়ার পর তারই ছাত্র চেয়ারে বসে ফেসবুকে ছবি পোস্ট দেওয়ার ক্ষমাহীন ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেবো। এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।