গুলশান হামলা: চট্টগ্রামে ঈদ জামাতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা

SHARE

ctg-eidচট্টগ্রাম: গুলশান হামলার বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে এবার ঈদুল ফিতরের জামাতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ।  নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের তালিকায় আরও আছে নগরীর আবাসিক এলাকা এবং সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক ও অফিস।

নগর পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, ঈদুল ফিতরের সার্বিক নিরাপত্তায় চট্টগ্রামে এবার অতিরিক্ত প্রায় আড়াই হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (০৫ জুলাই) থেকে তারা দায়িত্ব পালন শুরু করেছে।  এর মধ্যে রিজার্ভ পুলিশ, থানা ও ফাঁড়ির সদস্য, শিল্প পুলিশ, এপিবিএন, ট্যুরিস্ট পুলিশ আছে।  একইসঙ্গে যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবিকেও প্রস্তুত থাকার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, যেহেতু গুলশানে একটা ঘটনা ঘটেছে সেটাকে মাথায় রেখেই এবার আমরা ঈদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা করেছি।  ঈদ জামাতে এবার আমাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকবে।  পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকবে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্তাবধানে নগরীতে এবার ১৫৪টি স্থানে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

সিএমপি সূত্র জানায়, প্রতিটি ঈদ জামাতের নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকবে কমপক্ষে ৪৮ জন পুলিশ সদস্য।  তিনজন এস আই, ১৫ জন এসএএফ, ৩০ জন পিওএমসহ মোট ৪৮ জন বিভিন্ন জামাতে স্ট্যান্ড বাই থাকবেন।  এর পাশাপাশি প্রতিটি ঈদ জামাত ঘিরে দুভাগে বিভক্ত হয়ে নগর পুলিশের টহল টিমও থাকবে।  সাদা পোশাকে থাকবেন ৩৯ জন সদস্য।  এর মধ্যে আছেন একজন অতিরিক্ত উপ কমিশনার, একজন সহকারি কমিশনার, একজন পরিদর্শক, ২ জন এস আই এবং ৩৪ জন ওয়াচার।

এছাড়া নগরজুড়ে উপ-কমিশনার ৫ জন, ৪ জন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার, ৪ জন সহকারি কমিশনার, ১৬ জন পরিদর্শক, ৩৩ জন উপ-পরিদর্শক ও সহকারি উপ-পরিদর্শক, ৩৭ জন এসএএফ সদস্য, ৬৩ জন পিওএম সদস্য, বন্দর পুলিশ লাইনের ১০ সদস্য, থানা-ফাঁড়ি থেকে ৬৬ জন সহ মোট ২৪৮ জন টহলে থাকবে।

গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর গুলশানে একটি বিদেশি রেস্তোঁরায় জঙ্গিরা জিম্মি করে দেশি-বিদেশি ২২ জনকে হত্যা করে।  পরবর্তীতে যৌথবাহিনীর অভিযানে ছয় জঙ্গি মারা যায়।

গুলশান হামলার প্রেক্ষাপটে ঈদুল ফিতরের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপি কমিশনার মো. ইকবাল বাহার বাংলানিউজকে বলেন, গুলশানে হামলার পর এ মুহুর্তে আর কোন হুমকির কথা আমি জানিনা।  কোন ধরনের রেড অ্যালার্টও নেই।  তবে একটা ঘটনা যেহেতু ঘটেছে আর ঈদ জামাতে যেহেতু প্রচুর লোকসমাগম হবে আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি।  মাঠ পর্যায়ে পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার কথা বলা হয়েছে।

সিএমপির বিশেষ শাখা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবারও বিভিন্ন মার্কেট-শপিংমলে অতিরিক্ত পুলিশ আছে।  রেলস্টেশন-লঞ্চঘাটেও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা আছে।  ঈদের দিন থেকে নগরীর অলিগলি, আবাসিক এলাকায় ফুট পেট্রল, হোন্ডা পেট্রল টিম নির্দিষ্ট বিরতিতে টহল দেবে।  ব্যাংকপাড়ায় সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য বাংলানিউজকে বলেন, বাসাবাড়ি, ব্যাংক, অফিস, জনসমাগম বেশি হবে এমন স্থান যেগুলো আমাদের দৃষ্টিতে নিরাপত্তার জন্য স্পর্শকাতর মনে করছি সবগুলোতেই পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে।

ঈদের দিন বিকেলে এবং পরদিন সকাল থেকে পতেঙ্গা ও পারকি সমুদ্র সৈকত এবং ফয়সলেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে বলে জানান তিনি।