আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিতে চান না আইভী

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি) ,নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি , শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ :

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগকে বিভক্ত ও দুর্বল করার জন্য এ গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছে।

Advertisement

এ অবস্থায় সেলিনা হায়াৎ আইভী জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার কোনো মানসিকতা তার নেই। নেতৃত্ব দেওয়ার মতো দলে যোগ্য অনেক নেতা আছেন। এছাড়া মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তিনি। রাজনীতি করতে আর ইচ্ছে করে না তার।

টানা সাড়ে ১৫ বছর শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার পরও স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেননি আওয়ামী লীগের এই নেত্রী। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারাদেশে দলটির সংসদ সদস্য ও স্থানীয় সরকার বিভাগের জনপ্রতিনিধিরা পালিয়ে গেলে আইভী যাননি। নারায়ণগঞ্জের বাইরে নিজেকে ভাবতে পারেন না তিনি।

মেয়র পদ হারানোর পর সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন আইভী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাগো নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সাইফুল হক মিঠু

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী দল। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে দলটি কোনো একটা ভাবে আছে। তারা তাদের অবস্থান নিয়ে আছে। নেতৃত্ব নেবো, এ ধরনের কোনো মানসিকতা আমার নেই। আমি আওয়ামী লীগের একজন ছোট কর্মী ছিলাম, বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি। দীর্ঘ ২০-২২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমি ছোট কর্মী হিসেবে থেকেছি। বড় কিছু হওয়ার খায়েশ আমার নেই। নারায়ণগঞ্জের বাইরে নিজেকে কখনো চিন্তা করিনি। ভবিষ্যতেও করবো না। যেখানে আছি, সেখানেই থাকবো। জনসেবা করতে পারলে করবো, না পারলে না করবো, এমন কিছুর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: না, আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি।

জাগো নিউজ: আওয়ামী লীগের ইমেজ সংকট রয়েছে। অন্যদিকে আপনি নারায়ণগঞ্জ তথা সারাদেশে সবার কাছে ক্লিন ইমেজের ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। সেক্ষেত্রে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আপনাকে সামনে আনতে চান, তাহলে কী বলবেন?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: এ ধরনের কোনো সম্ভাবনা নেই। সম্ভাবনা থাকলেও কোনো দিনও পসিবল নয়। এখনও আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা। দলটিতে অনেক নেতা আছেন, যাদের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো প্রচণ্ড যোগ্যতা আছে। আমি এখানে কিছু নই। এ নিয়ে কথা বলতে চাই না।

আমি মানুষের সেবা করি। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে দলবাজি করিনি। এটা আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্য। এটা থেকে যেহেতু বের হতে পারবো না, সেহেতু আমি নারায়ণগঞ্জের বাইরে কোনো কিছুর সঙ্গে যুক্ত হতে চাই না।

জাগো নিউজ: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তো এটা নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: আমি দেখেছি। যারা যোগাযোগ করেছে, তাদের বলেছি এটা ইমপসিবল। কে বা কারা এটা করছে, আমি জানি না।

জাগো নিউজ: মেয়র যখন ছিলেন, তখন আপনাকে নিয়ে নানান কথা হয়েছে। এখন মেয়রের দায়িত্বে নেই, তাও আপনার নাম জড়িয়ে নানান কথা সামনে আসছে। এটা কেন?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: এটা আমার বিরুদ্ধে নতুন কোনো ষড়যন্ত্র কি না সেটাও বুঝতে পারছি না। আমি সব সময় কোনো না কোনো ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হয়েছি। আমার দল যখন ক্ষমতায় ছিল, তখনও আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিরোধী দলে গেলেও মামলা হয়, এখন তো আমার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। সব সময় একটা ষড়যন্ত্রের মাঝখান দিয়ে যাচ্ছি। কারণ আমি সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলি। আমি সব আমলেই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়ও আমার বিরুদ্ধে কত অভিযোগ ছিল। নারায়ণগঞ্জ শহরে আমার বিরুদ্ধে যত মিছিল-মিটিং হয়েছে, অন্য কোনো দলের বিরুদ্ধেও এত কিছু হয়নি। নারায়ণগঞ্জে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাফেরা করেছে অন্যদের সঙ্গে। যেটা আমার ক্ষেত্রে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আমি যেন আরেকটি বিরোধী দলের কেউ। স্বাচ্ছন্দ্যে কোনো কাজ ঠিকমতো করতে পারিনি।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিতে চান না আইভী

জাগো নিউজ: স্থানীয় আওয়ামী লীগের সহায়তা পাননি। কেন্দ্রীয়ভাবে অসহযোগিতা পেয়েছেন কি?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো জিনিস পাওয়ার চেষ্টা করিনি। স্থানীয়ভাবে সমস্যা দূর করার চেষ্টা করেছি। যখন একেবারেই পারতাম না, একটা জিনিস নিয়ে অনেকবার আমাকে ঝামেলা করা হচ্ছে, তখন হয়তো সরাসরি দলীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি।

জাগো নিউজ: আপনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সরকারি জায়গা দখল করে পার্ক নির্মাণ, ভাইদের ঠিকাদারি দেওয়া, আপনার সহযোগীরা শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসাটা স্বাভাবিক। যারা অভিযোগ করে তাদের টার্গেট ছিল আমাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। ২০১১, ২০১৫ ও ২০২২ সালে আমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে গেছে। এমন কোনো পত্রিকা নেই যেটা আমার বিরুদ্ধে লিখেনি। এই অভিযোগগুলো শামীম ওসমানই করেছে। ২০১৬-১৭ সালে দুদক আমার বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে, আমাকে ক্লিনচিট দিয়েছে।

শামীম ওসমানের নেতৃত্বে আমার বিরুদ্ধে অনেক মিছিল-মিটিং হয়েছে। ২০১৬ সালে শহরে আমার কুশপুতুলে আগুন দেওয়া হয়েছে৷ আমার বিরুদ্ধে নতুন কোনো অভিযোগ এলে সেগুলো তদন্ত করা হোক। কাজ করেছি, হয়তো ভুল-ত্রুটি হতে পারে। কিন্তু এক টাকার দুর্নীতির সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা কেউ দেখাতে পারবে না।

আমি অনেক কাজ করেছি। কাজে ভুল-ত্রুটি হতে পারে। রাস্তাঘাট ভেঙেছি। সিটি করপোরেশনের প্রায় ৯৫ শতাংশ জায়গা উদ্ধার করেছি। এগুলো ভবিষ্যতে অথবা আগে কেউ করতে পারবে বা পেরেছে?

জাগো নিউজ: পরিচিত ঠিকাদারদের দিয়ে কাজ করিয়েছেন। ভাই ও ব্যক্তিগত সাহচর্যদের নিয়ে তৈরি করেছেন বলয়?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: এখানে পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করানোর কোনো সুযোগ নেই। এখন ই-টেন্ডার হয়। যাকে খুশি তাকে কাজ দেওয়া যায় না। শামীম ওসমান বলতেন আমি ঘুরে ফিরে চার-পাঁচজনকেই কাজ দেই। সিটি করপোরেশনে খোঁজ নিলে দেখতে পারবেন এখানে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার ঠিকাদাররা কাজ করেছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সবাই এখানে নির্দ্বিধায় নির্ভয়ে কাজ করেছেন।

Advertisement

জাগো নিউজ: শামীম ওসমান আপনাকে সব সময় চাপে রেখেছে?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: আমি পৌর মেয়র থাকার সময় থেকেই কোনো কিছুতে কম্প্রোমাইজ করতাম না। কারণ আমার শত্রু অনেক বড়। শামীম ওসমান যেভাবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে আমার সঙ্গে শত্রুতা করেছে, একভাবে আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার কাজ সঠিকভাবে করার জন্য শামীম ওসমান আমাকে ব্যস্ত রেখেছে।

জাগো নিউজ: শামীম ওসমানের মতো জাদরেল নেতার সঙ্গে লড়াই করে আপনাকে টিকে থাকতে হয়েছে। কখনো ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন কিংবা ভয় পেয়েছেন?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: ভয় আমি কখনোই করিনি। নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য কথা বলতাম।

জাগো নিউজ: শামীম ওসমানের পরিণতি দেখেছেন। কীভাবে মূল্যায়ন করবেন।

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: তার অনেক ভালো গুণ ছিল, সেগুলো যদি ভালো কাজে লাগাতেন তাহলে খুব ভালো হতো। তিনি নারায়ণগঞ্জ শহরের মানুষকে আপন করতে পারেননি। শামীম ওসমানকে ঘিরে কিছু লোকজন ছিল। তারা শামীম ওসমানকে কেন্দ্র করেই শক্তির মহড়া করেছেন। উনার ভালো গুণাবলি ছিল, তিনি পজিটিভলি কাজ লাগাননি। ১/১১ পর তার শোধরানোর প্রয়োজন ছিল। আমি জানি না কেন তার পরিবর্তন হয়নি।

জাগো নিউজ: আপনি কি নারায়ণগঞ্জ শহরে শামীম ওসমানের সাম্রাজ্য গুঁড়িয়ে দিতে পেরেছেন?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: আমি তাকে নিয়ে কোনো দিন চর্চা করিনি৷ এই শহরের মানুষ তার সাম্রাজ্য গুঁড়িয়ে দিয়েছে। মানুষ জেগে উঠেছে। আমি সাহসের সঙ্গে কথা বলেছি। শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ শহরে যে ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিলেন সেটা আমি ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। মানুষ আমার সঙ্গে ছিল।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিতে চান না আইভী

জাগো নিউজ: শামীম ওসমানের বাড়িঘর ভাঙা হয়েছে, এটা কীভাবে দেখছেন।

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: সারাদেশেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। প্রেক্ষাপটটা এমন ছিল।

জাগো নিউজ: আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মী আত্মগোপনে রয়েছেন। তবে আপনি নিজ বাসায় রয়েছেন? কোনো হুমকি পেয়েছেন?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: কোনো হুমকি পাইনি। আমি আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ কেউ না। আমাকে মেয়র হিসেবে দুবার মনোনয়ন দিয়েছে। আমি মানুষের সমর্থন নিয়ে কাজ করেছি। সিটি করপোরেশনে দলবাজি করিনি। ২০০৩ সালে নিউজিল্যান্ড থেকে এসে পৌরসভা ভোট করেছি। আমি বাবার (স্বাধীনতার পর নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম মেয়র প্রয়াত আলী আহাম্মদ চুনকা) পদাঙ্ক অনুসরণ করার চেষ্টা করেছি। আলী আহম্মদ চুনকা সর্বদলীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আমি সবার সঙ্গে মিলে কাজ করার চেষ্টা করেছি। অন্যরা পালিয়েছেন, আমি আছি। কারণ আমি বাবার মতাদর্শ ধারণ করার চেষ্টা করেছি। এজন্য আমার প্রতি সাধারণ মানুষের হিংসাত্মক মনোভাব নেই।

Advertisement

জাগো নিউজ: আগামীতে সিটি করপোরেশন নির্বাচন করবেন?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: এই মুহূর্তে এটা বলতে পারছি না। মানসিকভাবে এখনও বিপর্যস্ত। রাজনীতি করতে আর ইচ্ছা করে না। রাজনীতি করার মানসিকতা একদমই নেই।

জাগো নিউজ: এটা কি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নেই এ কারণে?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: না, বিভিন্ন কারণে। পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে এটা মনে হচ্ছে। আমাকে মার্ডার কেসের আসামি হতে হয়েছে। আমি সব সময় খুনের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এই অপরাজনীতির কারণে আমার ছোট ভাই উজ্জ্বল যার কেবল পদবি আছে। সে কোনো দিন মানুষের ক্ষতি করেনি। তার বিরুদ্ধেও তিনটি মামলা হয়েছে।

যাদের আমি খুনি বলে ডাকি, তাদের সঙ্গে একই কাতারে যখন আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়; তখন কষ্ট লাগে। মেয়র ভোট নিয়ে এই মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবো না। জনগণ যেটা সিদ্ধান্ত নেবে; সেটাই মাথা পেতে নেব।

জাগো নিউজ: এখন আপনার আয়ের উৎস কী?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: ভাইদের সঙ্গে রয়েছি। আমার একটা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ছয়-সাত লাখ টাকা আছে মেয়রের সম্মানী বাবদ। সেটা দিয়ে আরও তিন-চার মাস চলতে পারবো। তারপরে হয়তো আমার চাকরি খোঁজা লাগবে।

জাগো নিউজ: ৫ তারিখের আগে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন আঁচ করতে পেরেছিলেন কি?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: আমি জাতীয় রাজনীতি নিয়ে একটু কমই চিন্তা-ভাবনা করি। এ রকম হবে আঁচ করতে পারিনি। হঠাৎ করে এমন হয়ে যাবে। আমার মনে হয় বাংলাদেশের কম সংখ্যক মানুষই আঁচ করতে পেরেছে।

জাগো নিউজ: রাজনীতিতে আসার উদ্দেশ্য কী ছিল?

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: বাবাকে দেখেই রাজনীতিতে এসেছি। তিনি মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থেকেছেন সারাজীবন। বাবা বলতো, মানবকল্যাণে কাজ করতে হবে। ২০০৩ সালে পৌরসভার নির্বাচন করি।

জাগো নিউজ: আপনাকে ধন্যবাদ।

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী: জাগো নিউজকেও ধন্যবাদ।