কোন পথে হাঁটছেন আজমেরী হক বাঁধন? (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি) ,বিনোদন প্রতিনিধি ,রোববার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭ ভাদ্র ১৪৩১ 

আজমেরী হক বাঁধন (জন্ম: ২৮ অক্টোবর ১৯৮৩; যিনি পর্দায় বাঁধন নামে পরিচিত) একজন বাংলাদেশী অভিনেত্রী ও মডেল। তিনি ২০০৬ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার সুন্দরী প্রতিযোগিতায় রানার-আপ হওয়ার মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেন।[২] পরবর্তীতে, তিনি ইলিয়াস কাঞ্চন এবং চম্পার সাথে ২০১০ সালে নিঝুম অরণ্যে নামাক একটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন ।[৩] তিনি বেশ কয়েকটি টিভি নাটকেও অভিনয় করেছেন।[৪] ৭৪তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের “আন সার্টেন রিগার্ড” বিভাগে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত প্রথম বাংলাদেশী চলচ্চিত্র রেহানা মরিয়ম নূর– এ তার প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি তার সাফল্য অর্জন করেন । তিনি “সেরা অভিনেত্রী” বিভাগে ১৪ তমএশিয়া প্যাসিফিক স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ডস (এপিএসএ) এবং নিউ ট্যালেন্ট বিভাগে হংকং এশিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল পুরস্কার জিতেছিলেন।[৫]

প্রাথমিক জীবন

Advertisement

[সম্পাদনা]

বাঁধন ১৯৮৩ সালের ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকায় জন্ম গ্রহণ করেন।[৬] তার পৈতৃক নিবাস মুন্সীগঞ্জ (বিক্রমপুর) জেলার শ্রীনগর উপজেলার সলোঘরে। তার পিতা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তা ছিলেন।

শিক্ষাজীবন

[সম্পাদনা]

বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে রাজবাড়ীভোলাসহ বিভিন্ন জেলার ৭টি স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। ২০০০ সালে, তিনি ঢাকার মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ২০০২ সালে, শহীদ আনোয়ার গার্লস স্কুল থেকে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তিনি ২০০২-০৩ সেশনে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। প্রথম বর্ষের মেডিকেল পরীক্ষায় সে ৪র্থ স্থান পেয়েছে। ২০০৯ সালে, তিনি ডেন্টাল সার্জারিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বিএমডিসির একজন নিবন্ধিত চিকিৎসক।

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

বাঁধন ২০১০ সালে জানুয়ারি মাসে মাশরুর সিদ্দিকী সনেটকে বিয়ে করেন। ২০১০ সালের ৮ই সেপ্টেম্বর এই দম্পতির কন্যা সায়রা জন্মগ্রহণ করে। ২০১৪ সালের ২৬শে নভেম্বর বাঁধন ও সনেটের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।[৭]

২০১৮ সালে বাঁধন

Advertisement

দাম্পত্য সংকট ও আইনি লড়াই

[সম্পাদনা]

২০০৫ সালে দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালিন সময়ে ২০০৫-২০০৬ সালে প্রথম বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। নানান শারীরিক ও পারিবারিক নির্যাতনের জন্য মনস্তাত্বিক সংকটের কারণে তিনি ২০০৫ সালে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। ২০০৬ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুন্দরী প্রতিযোগিতায় তিনি অংশ নেন। ২০১০-২০১৪ সময় তিনি মাশরুর সিদ্দিকী সনেটের সঙ্গে সংসার করেন। ২০১০ সালের ৬ই অক্টোবর বাঁধনের কন্যা সায়রা জন্মগ্রহণ করে। ২০১৪ সালে মাশরুর সিদ্দিকী সনেট মামলা করেন চাঁদাবাজি, প্রতারণা ও চরিত্রহীনতার অভিযোগে। প্রাক্তণ স্বামী মদ্যপ অবস্থায় মারধর করেন বাঁধনকে। ২০১৭ সালে কন্যা সায়েরার বয়স যখন ৬ বছর, তখন নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মামলা করেন। মেয়ের অভিভাবকত্ব দাবি করেন। ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতের রায়ে মেয়ের অভিভাবকত্ব পান।

সক্রিয়তা

[সম্পাদনা]

তিনি সামাজিকভাবে বিভিন্ন অ্যাক্টিভিজমের সঙ্গে যুক্ত আছেন। নারী অধিকার, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে তিনি সোচ্চার ভূমিকা পালন করছেন। ব্রিটিশ কাউন্সিল আয়োজিত ওয়াও ফেস্টিবলে তিনি নারী অধিকার ও সামাজিক পরিবর্তন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তুলে ধরেন। ইউএন উইমেনের সামাজিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তিনি ম্যারিটাল রেপ বা বৈবাহিক ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার বক্তব্য রাখেন।

‘আমি আক্ষরিক অর্থেই ধ্বংসস্তূপ থেকে ভাঙাচোরা অবস্থায় উঠে আসা এক মানুষ। যে জায়গা থেকে আমি এসেছি, আমার আশেপাশে কাউকে সে রকম জায়গা থেকে ফিরে উঠে দাঁড়িয়ে লড়ে বিজয়ী হতে দেখিনি। আমার জীবনে যা কিছু ঘটেছে, এরপর আমার আর হারানোর কিছু নেই। এ জন্যই হয়তো আমার ভেতর একটা ভীষণ মনোবল কাজ করে। আমি যা করি, মরিয়া হয়ে করি।’ (দৈনিক প্রথম আলোকে বাঁধন)

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

বাঁধন ঢাকায় বাংলাদেশ ডেন্টাল কলেজে অধ্যয়ন করেন এবং কলেজ থেকে ডেন্টাল সার্জারিতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। বাঁধন মিডিয়া শিল্পের প্রতি গভীরভাবে অনুরাগী ছিলেন এবং অবশেষে অল্প বয়সে একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন।[৮] তিনি চৈতা পাগলা, শুভ বিবাহ, চাঁদ ফুল ওমাবোশ, রং এবং হিজিবিজি নাথিং-এর মতো ধারাবাহিক নাটকে কাজের জন্যও সুপরিচিত।[৯] এছাড়া তিনি আরএফএল ফার্নিচার ও কোকোলা নুডুলসের টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন।[১০]

২০২২ এর কেরালার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাঁধন

Advertisement

তার অভিনীত রেহানা মরিয়ম নূর (২০২১) চলচ্চিত্রটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় এবং তার অভিনয় সমাদৃত হয়।[১১] তিনি প্রখ্যাত ভারতীয় অভিনেতা টাবু এবং আলী ফজলের সাথে বিশাল ভরদ্বাজের খুফিয়া চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করবেন।[১২]