ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি) ,ঝিনাইদহ-৪ প্রতিনিধি ,বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০২৪, ১৪ ভাদ্র ১৪৩১ :
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে জিহাদ হাওলাদার নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। এই জিহাদই এমপি আনারের মরদেহ কেটে ‘কিমা’ বানায়। পেশায় কসাই জিহাদ মুম্বইতেও বিখ্যাত কসাই বলে জানা গিয়েছে। জিহাদ হাওলাদারকে আজ, শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত আদালতে বেলা ১১টার দিকে তোলা হয়। এরপর তাকে হেফাজতে নিয়ে বাকি আসামিদের গ্রেফতার অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
Advertisement
২৪ বছর বয়সি জিহাদের বাড়ি বাংলাদেশের খুলনা জেলার দিঘলিয়া থানার বারাকপুর গ্রামে। তার বাবার নাম জয়নাল হাওলাদার। অবৈধভাবে ভারতের মুম্বইতে বাস করত সে। এমপি আনার হত্যার পরিকল্পনাকারীরা মুম্বই থেকে জিহাদকে নিয়ে আসে। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে সেখানে বসবাস করছিল জিহাদ। দুমাস আগে তাকে কলকাতায় নিয়ে আসে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আক্তারুজ্জামান শাহিন, যে এ হত্যাকাণ্ডের মূল চক্রী বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খুনের অনেক আগেই লাশ গুমের পরিকল্পনা সাজায় খুনিরা। এ জন্য তারা ট্রলি ব্যাগ, ব্লিচিং পাউডার, পলিথিনসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে রাখে। ১৩ মে কলকাতার নিউটাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাটে আনোয়ারুলকে হত্যার পর লাশ টুকরা টুকরা করে ব্যাগে ভরে সরানো হয়েছে। এর কিছু অংশ কলকাতার একটি খালে ফেলা হয়েছে। কলকাতার পুলিশ খুনিদের ভাড়া করা ফ্ল্যাটের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এবং ঢাকায় গ্রেফতার করা তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
Advertisement
একটি সূত্র বলছে, নিউটাউনের যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজিমকে খুন করা হয়েছে বলে শনাক্ত করা হয়েছে, সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, কয়েকজন ট্রলি ব্যাগ নিয়ে বেরচ্ছে। তাদের মধ্যে তিনজন ইতিমধ্যে ঢাকায় ধরা পড়েছে। কলকাতা পুলিশ মনে করছে, ওই ট্রলির ব্যাগের ভিতরে পুরে নিহত সাংসদের দেহ সরানো হয়েছে।
কলকাতায় এসে প্রথম যে বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন আনোয়ারুল আজিম, সেই গোপাল বিশ্বাস আগেই জানিয়েছিলেন যে, তাঁর বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পরে এমপি-র ফোন থেকে একাধিক মেসেজ পেয়েছিলেন তিনি। সেই মেসেজে কখনও বলা হয়েছিল যে তিনি (এমপি) সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরবেন, কখনও জানানো হয় যে তিনি বিশেষ কাজে দিল্লি চলে যাচ্ছেন। আবার দিল্লিতে যে তিনি পৌঁছেছেন এবং তাঁর সঙ্গে ‘ভিআইপি’রা আছেন, সেকথাও জানান বন্ধুকে।
Advertisement
ঢাকার গোয়েন্দা প্রধান জানিয়েছেন, মূল উদ্দেশ্য ছিল একদিকে লাশ গুম করা, পরিচয় বা অস্তিত্ব যেন কখনও না পাওয়া যায়। অন্যদিকে তদন্তকারীরা যেন কোনও ডিভাইস খুঁজে না পায়। তাছাড়া কলকাতা পুলিশের নজর যেন বাংলাদেশের দিকে না পড়ে।