দুই লাখ টাকা দাও, ৫০০ পিস ইয়াবার মামলা দেব’; অডিও ভাইরাল (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি) ,ঢাকা প্রতিনিধি,রোববার, ২৫ আগস্ট ২০২৪, ১০ ভাদ্র ১৪৩১ 

‘দুই লাখ টাকা দাও, ৫০০ পিস দিয়ে মামলা দেব।’ ‘স্যার ১০০ পিস দেন। দুই লাখ টাকাও নেবেন, আবার ৫০০ পিস দেবেন! স্যার আমার বোন লাগলে বের হয়ে এসে আপনাকে খুশি (টাকা দিয়ে) করবে। জানেন না হেয় কী রকম, আপনি চাইলে কি আপনারে দেবে না?’ ‘তোমার ১ হাজার, ওই মহিলাকে ৩০০ পিস। সঙ্গে ১০০ গ্রাম দিয়ে মামলা দেব। ওসিই প্যারা দিচ্ছে আমারে। হেয় কয় তুইয়ো অর্ধেক খা, আমি তো খামুই। এহা খামু ক্যা, টিম সবাই আছে না! এত সহজ…, ভাগ করতে করতে আমি পাব পাঁচ ভাগের এক ভাগ।’

Advertisement

 

উল্লিখিত কথোপকথনটি রাজধানীর পল্লবী থানার এসআই মো. আনোয়ারুল ইসলাম এবং চিহ্নিত মাদককারবারি ফাতেমা বেগম ওরফে ফতের দুই বোনের মধ্যকার।
তাদের কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার এসআই আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে পল্লবী থানার একটি দল অভিযান চালিয়ে স্থানীয় চিহ্নিত মাদককারবারি ফাতেমা বেগম ওরফে ফতে এবং তার সেলসম্যান হিসেবে পরিচিত রেজিয়া বেগমকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের থানাহাজতে আটক করে খবর দেওয়া হয় ফাতেমার দুই বোন হোসনেয়ারা ও পাতিয়াকে। এর পর তাদের কাছে ৪ হাজার পিস ইয়াবা ৫০০ পিস বানাতে দাবি করা হয় ৩ লাখ টাকা। পরে তারা ২ লাখ টাকায় রাজি হন। এর পর মাদককারবারি ফাতেমার বোনের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে ৫০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে মামলা দেওয়া হয়, যার মামলা নং-২০, তারিখ ১৯-১-২৪।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ অনুযায়ী, কারও কাছে ১০০ গ্রাম পর্যন্ত ইয়াবা পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। অন্যদিকে ইয়াবার পরিমাণ ৪০০ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। ৪ হাজার পিস ইয়াবার ওজন সাধারণত ৪০০ গ্রাম হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে এসআই আনোয়ারুল ইসলাম ২ লাখ টাকা আর্থিক সুবিধা নিয়ে এক চিহ্নিত মাদককারবারিকে বাঁচাতে পরিমাণ কম দেখিয়েছেন।

 

Advertisement

এ বিষয়ে মাদককারবারি ফাতেমার বোন পাতিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার আমার বোন রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। এ সময় এসআই আনোয়ার তাকে এই দিকে আয় বলে ডেকে নেয়। পরে আমার বোন যায়, আমার বোনের সঙ্গে এসআইয়ের আগে থেকেই জানাশোনা ছিল। পরে তাকে একটি বাসার রুমে ডেকে নিয়ে রুমে তল্লাশি করে ৪ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এর পর বলা হয়, এই ইয়াবা তার। তখন আমার বোন অস্বীকার করলেও তাকে জোর করে থানায় নিয়ে যায়। এর পর তারা আমাদের থানায় ডেকে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। পরে আমার বোন হোসনেয়ারা ২ লাখ টাকা দেয়।’

আপনার বোনের সঙ্গে এসআইয়ের পরিচয় কীভাবে জানতে চাইলে পাতিয়া বলেন, আসলে আমার বোন গাঁজা বেচত। যে কারণে এসআই আনোয়ার মাঝেমধ্যেই এসে টাকা নিত।

অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে এসআই আনোয়ারুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

Advertisement

এ বিষয়ে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের ডিসি জসিম উদ্দিন বলেন, এসআই আনোয়ার এর বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।