ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪, ২৬ আষাঢ় ১৪৩১ : প্রশ্নফাঁসের মামলায় গ্রেফতার সৈয়দ আবেদ আলী সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক তিনজন চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। পিএসসির সাবেক একজন চেয়ারম্যানও জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
Advertisement
তবে পিএসসি সূত্রের দাবি, আবেদ আলী কখনোই পিএসসির কোনো চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন না। তিনি চাকরিজীবনে তিনজন সদস্য এবং একজন যুগ্মসচিবের গাড়িচালক ছিলেন।
পিএসসির প্রশাসন শাখা থেকে তথ্য আকারে বিষয়টি দেওয়া হয়েছে। তার একটি কপি জাগো নিউজের হাতে এসেছে। যদিও এটি পিএসসির আনুষ্ঠানিক কোনো বিজ্ঞপ্তি বা বিবৃতি নয় বলে তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি।
পিএসসির দেওয়া তথ্যানুযায়ী, চাকরিজীবনে আবেদ আলী পিএসসির সদস্য মজিবুর রহমান বিশ্বাস, মোজাম্মেল হক ও মোহাম্মদ হোসেন সেরনিয়াবাতের গাড়ি চালিয়েছেন। এছাড়া একজন যুগ্মসচিবের গাড়িচালক ছিলেন তিনি।
পিএসসির প্রশাসন শাখা থেকে তথ্য আকারে বিষয়টি দেওয়া হয়েছে-ছবি জাগো নিউজ
কমিশনের দেওয়া ওই তালিকা অনুযায়ী- অধ্যাপক ড. মো. মুস্তফা চৌধুরী ১৯৯৮-২০০২ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। তার গাড়িচালক ছিলেন আলমগীর হোসেন। ২০০২-২০০৭ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে থাকা অধ্যাপক ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগমের গাড়িচালকও ছিলেন আলমগীর হোসেন।
Advertisement
২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পিএসসির চেয়ারম্যান ছিলেন ড. সা’দত হুসাইন। তার সময়েও আলমগীর হোসেনই গাড়িচালক ছিলেন। তারপর নিয়োগ পাওয়া ইকরাম আহমেদের গাড়িচালক ছিলেন আবু বক্কর সিদ্দিক। এর পরের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিকের গাড়িচালক ছিলেন মোট তিনজন। তারা হলেন আবু বক্কর সিদ্দিক, শহিদ ও অনুত্তর চাকমা।
পিএসসির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইনের গাড়িচালক হিসেবে বর্তমানে কর্মরত অনুত্তর চাকমা।
গণমাধ্যমকে যা জানান সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক
চাকরিচ্যুত গাড়িচালক আবেদ আলীকে ‘চেনেন’ ও তাকে চাকরিচ্যুত করতে ‘অনেক বেগ পোহাতে’ হয়েছিল বলে জানিয়েছেন পিএসসির ১২তম চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক। পিএসসির সাবেক এ চেয়ারম্যান বর্তমানে সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি।
বর্তমানে মোহাম্মদ সাদিক যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে মঙ্গলবার রাতে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, যোগদানের পরই আমি আবেদ আলীর নানা অনিয়ম ও প্রভাবের কথা শুনেছিলাম। অনেক কর্মকর্তাও নাকি তার সঙ্গে সখ্য বজায় রেখে চলতেন। আবেদকে অপকর্মের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করার পর, তার অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি তদন্ত করার জন্য যে কমিটি হয়েছিল, তাদেরও অনেক বেগ পোহাতে হয়েছিল।
মোহাম্মদ সাদিকের ভাষ্য, ‘ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম ও এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী যখন পিএসসি চেয়ারম্যান ছিলেন, তখন আবেদ পিএসসির চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন। ইকরাম আহমদ যখন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন, তখন আবেদ ধরা পড়েন ও সাময়িক বরখাস্ত হন। পরে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।’
তবে ড. সাদিকের ভাষ্যে যে তিনজন চেয়ারম্যানের কথা উঠে আসে, তাদের মধ্যে সাবেক দুজন চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করে জাগো নিউজের প্রতিবেদক। তারা আবেদ আলীকে চেনেন না বলে দাবি করেন।
পিএসসির দশম চেয়ারম্যান সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী বলেন, আবেদ আলী নামে কেউ আমার সময়ে চেয়ারম্যানের গাড়িচালক ছিলেন না। আমি তার সম্পর্কে কিছুই জানি না, বলতেও পারছি না।
Advertisement
২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর পিএসসির চেয়ারম্যান নিয়োগ পান ইকরাম আহমেদ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘যতদিন আমি পিএসসিতে ছিলাম, তখন আবেদ আলী নামে কেউ আমার গাড়িচালক ছিলেন না। ব্যক্তিগতভাবে আমি আবেদ আলীকে চিনি না।’
পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী-সংগৃহীত ছবি