ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),কুমিল্লার বুড়িচং প্রতিনিধি ,শনিবার, ০১ জুন ২০২৪, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ : কুমিল্লার বুড়িচংয়ে রেল লাইনের পাশে নোটবুকে ‘প্রেমিকের’ ফোন নম্বর ও নাম-ঠিকানা লিখে স্কচট্যাপে ছবি লাগিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক কলেজ ছাত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ঘটনাটি ঘটে। রাত দেড়টার দিকে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ।
Advertisement
এদিকে, শুক্রবার (৩১ মে) দুপুর ময়নাতদন্ত শেষে ওই ছাত্রীর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কুমিল্লার রেলওয়ে ফাড়ি পুলিশের ইনচার্জ মো. মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মারা যাওয়া কলেজ ছাত্রীর নাম জান্নাত আক্তার। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার নিমবাড়ী গ্রামের আলমগীর হোসেনের মেয়ে। চারগাছ নুরুল ইসলাম ভূইয়া ডিগ্রি কলেজের মানবিক শাখার ছাত্রী ছিলেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল বিকেল থেকে ঢাকা- চট্টগ্রাম রেল পথের কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকায় মেয়েটি ঘুরাঘুরি করছিলেন। সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে মেয়েটি আত্মহত্যা করেন। স্থানীয় লোকজন দূর থেকে তাকে বারবার ডাকাডাকি করছিলেন। এমনকি, রেল লাইন থেকে তাকে সরাতে স্থানীয়রা এগিয়ে গেলেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। শঙ্কা করা হচ্ছে, প্রেমিকের কারণে তিনি ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
Advertisement
স্থানীয় কামরুল হাসান বলেন, মেয়েটি ট্রেনে ঝাঁপ দেওয়ার পর আমরা এসে দেখতে পাই দুটি নোটবুক রেল লাইনের পাশে পাথর দিয়ে চাপা দেওয়া। সেখানে একটি ছেলের নাম লেখা- হৃদয় মুন্সী. পিতা হোসেন মুন্সী, উপজেলা সাভার এবং তার ফোন নম্বর, ছবি, মেয়েটির জন্মনিবন্ধনের কাজপত্র এবং কলেজের আইডি কার্ড। হৃদয় মুন্সীর নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানানো হলে তিনি দুর্ব্যবহার করে ফোন কেটে দেন। এরপর বিষয়টি বুড়িচং থানা পুলিশ এবং রেলওয়ে পুলিশকে জানানো হয়। রাত দেড়টার দিকে রেলওয়ে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
জান্নাতের আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন তার চাচাতো ভাই রাজীব, ইয়াছিন ও আক্তার হোসেন। তারা জানান, জান্নাত কী কারণে আত্মহত্যা করছেন কিছুই বুঝতে পারছেন না। যেহেতু, তিনি জন্ম নিবন্ধনের কাগজপত্র সঙ্গে করে এনেছিলেন, মনে হয়, বিয়ে করার কথা বলে তার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। যদি, ওই ছেলেটির কারণে জান্নাত আত্মহত্যা করে থাকেন তাহলে তার বিচার দাবি করেন তারা।
Advertisement
কুমিল্লা রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মোস্তফা কামাল বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, মারা যাওয়া কলেজ ছাত্রী সকালে কোচিং করার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে তিনি ট্রেনে করে সদর রসুলপুর স্টেশন আসেন। সেখান থেকে তিনি বুড়িচং মাধবপুর এসে পৌঁছান। আমরা সব আলামত জব্দ করেছি। এঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। আমরা শঙ্কা করছি, ছেলেটি মারা যাওয়া মেয়ের প্রেমিক হতে পারে। পুলিশের তদন্ত অব্যহৃত রয়েছে। আত্মহত্যার পেছনে যারই প্ররোচণা থাকুক, দোষী প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।