ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),ঝিনাইদহ প্রতিনিধি , বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ : ঝিনাইদহের-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আখতারুজ্জামান শাহীনের বাংলোতে গভীর রাতে চোরাচালানের লেনদেন হতো নিয়মিত। পাচার হতো সোনা ও হীরার চালান। রাতে মাঝেমধ্যে শোনা যেত বাদ্যবাজনা ও গানবাজনা। পুলিশ বলছে, শাহীনের বাংলোতে এমন কোনো অপরাধ নেই যে হতো না।
Advertisement
ইতিমধ্যে বাংলোর চারপাশ ও ভেতরের অন্তত ১০টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ফুটেজে চালান পাচার ও রাজনীতিবিদ, আমলা ও পুলিশের কিছু কর্মকর্তার অবাধ যাতায়াতের তথ্য পেয়েছে পুলিশ। যারা ওইসব বাংলোতে আসা-যাওয়া করেছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলে প্রায়ই শাহীন থাকতেন বাংলোতে। তিনি আসার পর মাঝেমধ্যে গাড়িতে করে আসা-যাওয়া করত অনেকেই। বাংলোতে রয়েছে নিজস্ব বাবুর্চি। রান্না করে চলত খাওয়াদাওয়া ও ভূরিভোজ। রাতে মাঝেমধ্যে শোনা যেত বাদ্যবাজনা ও গানবাজনা।
Advertisement
গভীর রাতে বাংলোতে চোরাচালানের লেনদেন: পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, শাহীনের বাংলোতে এমন কোনো অপরাধ নেই যে হতো না। আনারকে কলকাতায় নিয়ে হত্যা করার অভিযোগ ওঠায় কিছুদিন আগে আমরা বাংলো থেকে ১০টির মতো সিসি ক্যামেরা জব্দ করি। ক্যামেরার ফুটেজে চোরাচালান পাচার ও লেনদেনের ছবি দেখা গেছে। একটি ফুটেজে দেখা গেছে, রাত ২টার দিকে ল্যান্ড ক্রুজারে করে দুই ব্যক্তি বাংলার ভেতরে প্রবেশ করছেন। তারা দ্বিতীয়তলার বারান্দায় কিছুক্ষণ বসে ড্রিংকস করেন। ওই সময় আনার ও শাহীনকে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। কালো রঙের পোঁটলা নিয়ে গেছেন ওই ব্যক্তিরা। আবার দেখা গেছে, তারা শাহীনের হাতে একটা ছোট ব্যাগ দিয়েছেন। আমাদের ধারণা, ওই ব্যাগে মোটা অঙ্কের অর্থ ছিল। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বাংলোটি অপরাধের আখড়া। সেখানে কিছু পুলিশ কর্মকর্তা, আমলা, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, নায়ক, নায়িকা, মডেল ও সাংসদ আনারের যাতায়ত ছিল নিয়মিত। ফুটেজেও তাদের আসা-যাওয়ার ছবি দেখা গেছে। আবার কিছু ছবি স্পষ্ট দেখা গেছে। যারা ওইসব বাংলোতে আসা-যাওয়া করেছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে।
Advertisement
জানা গেছে, ঝিনাইদহের গেদে সীমান্ত, জীবননগর, মহেশপুর জিন্নানগর, সামান্তা, মাটিলা, যাদবপুর, সামুন্দা বাগাডাঙ্গা, শ্যামকুড় সীমান্ত দিয়ে স্বর্ণ চোরাচালানের সাবস্টেশন হিসেবে ব্যবহার করা হয় এ বাংলো। চারদিকে কাঁটাতারবেষ্টিত বাংলো। পাচারের সোনা এনে জড়ো করা হতো এ বাড়িতেই। পরে কোটচাঁদপুরের কিছু নির্দিষ্ট লোকজন সোনার চালান নিয়ে সীমান্তে চলে যেত। শীর্ষ মাদক কারবারিরাও বাংলোতে যাতায়াত করতেন।
ইতিমধ্যে বাংলোর চারপাশ ও ভেতরের অন্তত ১০টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ফুটেজে চালান পাচার ও রাজনীতিবিদ, আমলা ও পুলিশের কিছু কর্মকর্তার অবাধ যাতায়াতের তথ্য পেয়েছে পুলিশ।