ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),কলিকাতা প্রতিনিধি ,সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ : কলকাতায় খুন হওয়া বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের দেহাংশের খোঁজে তন্ন তন্ন করে তল্লাশি চালিয়েও তা পেতে ব্যর্থ হয়েছে কলকাতার গোয়েন্দারা।
তবে বাংলাদেশের গোয়েন্দা (বিডি) প্রধান হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে একটি দল কলাকাতায় পৌঁছানোর পর নিহত এমপির মাথার খুলি খুঁজে পাওয়ার আশা করছে দুই দেশের গোয়েন্দারা।
Advertisement
যৌথ তদন্তের অংশ হিসেবে রোববার কলকাতায় যায় হারুনের নেতৃত্বাধীন গোয়েন্দা দল। সোমবার সকালে নিউ টাউনের সঞ্জীভা গার্ডেন পরিদর্শন করেন তারা। ডুপ্লেক্স ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে আনারকে হত্যা করে মরদেহের হাড়-মাংস আলাদা করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেয়া হয়।
এরপর দুপরের আবারো সঞ্জীভা গার্ডেনে যান বাংলাদেশের গোয়েন্দারা। এবার ঘটনাস্থলে আনা হয় কসাই জিহাদ হাওলাদারকে। আনারের দেহের মাংস কিমা করা ও হাড় টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভরে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেয়ার জন্য এই জিহাদকে মুম্বাই থেকে ভাড়া করে আনা হয়।
জিহাদ নিয়ে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন ঢাকা ও কলকাতার গোয়েন্দারা। একবারে ঘটনাস্থল থেকে সূত্র মেলাতে সেখানে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বাংলাদেশের গোয়েন্দারা।
এর আগে রোববার কসাই জিহাদকে জেরা করে বেশ কিছু নতুন তথ্য পেয়েছে ডিবির প্রতিনিধিরা। তদন্তের স্বার্থে এসব তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তারা।
কলকাতায় গিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ দলটি কৃষ্ণমাটি খাল পরিদর্শন করেন। ওইখালে দেহাংশ ফেলা হয়েছে সন্দেহ কলকাতার গোয়েন্দাদের। জিহাদকে নিয়ে সেখানে কয়েকদফা অভিযানও চালিয়েছে তারা।
তবে জিহাদকে জিজ্ঞেস করে নতুন তথ্য পাওয়ার ভিত্তিতে কলকাতা ও ঢাকার গোয়েন্দারা আাবাদী হয়ে উঠেছে যে, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের দেহাংশের সব না পেলেও অন্তত মাথার খুলি পাওয়া যাবে।
গত ১২ মে ঝিনাইদহর কালীগঞ্জ থেকে কলকাতায় যাওয়ার পরেরদিন রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান তিনবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার।
বুধবার সকালের দিকে তার খুনের খবর প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ বলছে, কলকাতার উপকণ্ঠে নিউ টাউনের অভিজাত আবাসন সঞ্জীভা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে আনারকে খুন করা হয়।
খুনের আলামত মুছে ফেলতে দেহ কেটে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়। এরপর সুটকেস ও পলিথিনে ভরে ফেলে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়।
হত্যাকাণ্ডের পর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে। এরা হলেন- হত্যাকাণ্ডের মূল সংঘটক ও চরমপন্থি সংগঠন পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভুঁইয়া, শিলাস্তি রহমান ও ফয়সাল আলী ওরফে সাজি। এই তিনজনে শুক্রবার আটদিনের হেফাজতে পেয়েছে ডিবি।
Advertisement
পুলিশ বলছে, পুরো হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী বা মাস্টারমাইন্ড হলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আখতারুজ্জামান শাহিন। এমপিকে হত্যার পর মরদেহের মাংস কিমা ও হাড় টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়। কয়েকজন হত্যাকারীকে নিয়ে এ কাজে নেতৃত্ব দেন শিমুল। তিনি পরিচয় গোপন করে আমানউল্লাহ আমান নামে পাসপোর্ট করে কলকাতা যান।
মুম্বাই থেকে ভাড়া করে আনা জিহাদকে দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মরদেহ ফেলার পর বান্ধবী শিলাস্তিকে নিয়ে ঢাকায় ফেরেন শিমুল ভূঁইয়া। আখতারুজ্জামান শাহিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। শাহিন দেশ ত্যাগ করে পালিয়ে যায়।