ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),বরিশাল প্রতিনিধি ,সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ : ঘূর্ণিঝড় রেমাল উপকূলে আঘাত হানায় বরিশাল বিভাগের সব নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর প্রভাবে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। বেড়িবাঁধ ভেঙে শতাধিক গ্রামে ঢুকে পড়েছে পানি, তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ। ৩ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত নদীগুলোর পানি বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া অফিস।
রোববার (২৬ মে) রাতে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম।
Advertisement
প্রকৌশলী তাজুল বলেন, ‘বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ১১টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে বরিশালের বুড়িশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ঝালকাঠির বিশখালী ২৬ সেন্টিমিটার, ভোলার দৌলতখান উপজেলার সুরা-মেঘনা নদীর পানি ৬৪ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিনের মেঘনা ১ মিটার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, ভোলার তেঁতুলিয়া ১৪ সেন্টিমিটার, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার বুড়িশ্বর ৩৫ সেন্টিমিটার, বরগুনার আমতলী উপজেলার বুড়িশ্বর নদীর পানি ৩৩ সেন্টিমিটার, বরগুনা সদরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বিশখালী ৬৭ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত বিশখালী ৭২ সেন্টিমিটার, পিরোজপুরের বলেশ্বর নদী ৩৩ সেন্টিমিটার ও পিরোজপুরের কঁচা নদী ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।’
প্রকৌশলী তাজুল আরও বলেন, ‘পানি বৃদ্ধিতে বেড়িবাঁধ, মাছের ঘের, ফসলের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পানি নেমে গেলে ভাঙন দেখা দেবে। আগামী দু-একদিন এভাবে পানি থাকতে পারে।’
কলাপাড়ার খেপুপাড়া রাডার স্টেশন কেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুল জব্বার শরীফ বলেন, ‘সন্ধ্যায় উপকূলে অগ্রভাগ আছড়ে পড়েছে। বুলেটিন অনুসারে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টায় উপকূল অতিক্রম করবে। পানির উচ্চতা ইতোমধ্যে বেড়েছে। বাতাসের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে।’
বরিশাল বিভাগীয় আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ বশির আহমেদ বলেন, ‘১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ঘোষণার পরপরই নদীর পাড় ও অনিরাপদ স্থানের মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। রাত ১২টা পর্যন্ত সময় নিতে পারে উপকূল অতিক্রমে।’
Advertisement
জানা গেছে, বিভাগের ৬ জেলায় ৫ শতাধিক মেডিকেল টিম কাজ করছে। ৩২ হাজার ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছেন। বিভিন্ন সংগঠনের ২০ হাজার লোক আপদকালীন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছে। বিভাগে ৪ হাজার ২৩২টি আশ্রয়কেন্দ্র, ৬ হাজার ২৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১ হাজার ৬৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা হয়েছে। এ ছাড়া কুয়াকাটার সকল হোটেল ও পাকা স্থাপনা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নগদ অর্থ, শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভোলা, পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা, ঝালকাঠি ও পটুয়াখালীর স্থানীয় প্রশাসন বলছে, তাদের জেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১ লাখের মতো মানুষ ইতোমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।