প্রয়োজনে মিল্টনের স্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করা হবে: ডিবি প্রধান
ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ :ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, মিল্টন সামাদ্দারের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা করা হয়েছে। পুলিশের করা মামলায় আদালতে ৭ দিনের রিমান্ডে চাওয়া হবে। প্রয়োজনে তার স্ত্রীকেও গ্রেপ্তার করা হতে পারে। বৃহস্পতিবার (২ মে) ডিবি কার্যালয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
Advertisement
জানা গেছে, সকালে জাল মৃত্যু সনদ দেয়ার অভিযোগে মিরপুর মডেল থানায় জাল জালিয়াতির একটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে তার আশ্রমের টর্চার সেলে মানুষকে মারধরের অভিযোগ এবং মানবপাচারের অভিযোগে আরও দুটি মামলা করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মানস কুমার পোদ্দার বলেন, মিল্টন সমাদ্দার তার আশ্রমে মৃত ব্যক্তিদের মৃত্যু সনদ জাল করে তৈরি করতেন। এক্ষেত্রে তিনি চিকিৎসকের স্বাক্ষর ও সিল জাল করতেন। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় মামলা হয়েছে। আজই মিল্টনকে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলেও জানান তিনি।
Advertisement
এর আগে বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর মিরপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশের একটি দল।
মানবতার সেবক হিসেবে পরিচিত মিল্টন সমাদ্দার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার সেবামূলক কর্মকাণ্ডের রয়েছে ব্যাপক প্রচারণা। যেখানে দেখা যায়, অসহায়-দুস্থ মানুষের সেবায় তিনি গড়ে তুলেন ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের একটি বৃদ্ধাশ্রম। রাস্তা থেকে অসুস্থ ও ভবঘুরেদের কুড়িয়ে ওই বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় দিতেন।
তবে মানবিকতার আড়ালে মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে ওঠে প্রতারণার তীব্র অভিযোগ। বিশেষ করে তিনি অসহায় মানুষকে আশ্রয় দেয়ার নামে তাদের কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে বিক্রি করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে গত ২৫ এপ্রিল দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশ পায়।
Advertisement
প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর দক্ষিণ পাইকপাড়ায় মিল্টন সমাদ্দারের বৃদ্ধাশ্রমের কাছেই বায়তুল সালাম জামে মসজিদ। বৃদ্ধাশ্রমে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের একসময় এই মসজিদেই বিনামূল্যে গোসল করানো হতো। তার মানবিক কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষ তাকে এই সুবিধা দিয়েছিল। তবে গোসল করানোর সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রতিটি মরদেহের বিভিন্ন স্থানে কাটাছেঁড়ার দাগ শনাক্ত করেন।
মিল্টন সমাদ্দারকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন স্থানীয় একটি মাদ্রাসার পরিচালক তোফাজ্জল হোসেন। তিনি ওই গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মিল্টন এক সময় বাসা ভাড়া দিতে পারতেন না। এখন তিনি এগুলো করে কোটি কোটি টাকার মালিক। আমাদের বায়তুল সালাম মসজিদে মরদেহ ফ্রি গোসল করিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিছু মরদেহ গোসল করানোর পর দেখা যায়, সবগুলোর শরীরে কাটা দাগ। এ বিষয়ে মিল্টনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি মরদেহ পাঠানো বন্ধ করে দেন।’
Advertisement
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মানুষের কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে বিক্রির মতো ভয়ংকর অপকর্মের পাশাপাশি বহু অভিযোগ রয়েছে মিল্টনের বিরুদ্ধে। যদিও কয়েকটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন মিল্টন সমাদ্দার।
মিল্টন সমাদ্দার ও তার স্ত্রী মিতু হালদার (সংগৃহীত ছবি)