ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(ভিডিও),চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ,শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ৩০ চৈত্র ১৪৩০ : ‘চৈত্রের শেষ দিন থেকে বান্দরবানে বর্ণাঢ্যে আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে চার দিন ব্যাপী পাহাড়িদের প্রাণের উৎসব সাংগ্রাই। শনিবার সকালে উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনে স্থানীয় রাজার মাঠ থেকে বের হয় এক বর্ণাঢ্য র্যালি।
Advertisement
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রাণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
র্যালিতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী, পৌর মেয়র মো. শামসুল ইসলামসহ বিভিন্ন দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তসহ স্থানীয়রা।
এই সময় মারমা, চাকমা-তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, ত্রিপুরা, রাখাইনসহ বান্দরবানে বসবাসরত ১১টি পাহাড়ি সম্প্রদায়ের আদিবাসী নারী-পুরুষ নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পড়ে র্যালি অংশ নেন। র্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে বয়স্ক পুজার আয়োজন করা হয়।
নতুন বছরকে বরণ এবং পুরাতন বছর বিদায়কে ঘিরে পার্বত্য এলাকার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতি স্বত্ত্বাগুলো নিজস্ব সামাজিক ঐতিহ্য নিয়ে সমন্বিতভাবে সাংগ্রাই উৎসব পালন করে থাকে।
Advertisement
মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাইং, ম্রো সম্প্রদায় চাংক্রান, খেয়াং সম্প্রদায় সাংগ্রান, চাকমা সম্প্রদায় বিজু, তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় বিষু ও ত্রিপুরা সম্প্রদায় বৈসু এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের এই উৎসবকে এক সঙ্গে বৈসাবি বলা হয়। বান্দরবানে মারমাদের সাংগ্রাইয়ের মূল আকর্ষণ জলকেলি উৎসব।
সব পাপাচার ও গ্লানী ধুয়ে মুছে নিতে তরুণ-তরুণীরা একে অপরের গায়ে পানি ছিটানো উৎসবে মেতে উঠে। পুরাতন বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণের জন্য মূলত এই উৎসব।
পুরাতন বছরের সব গ্লানী, দুঃখ, বেদনা ধুয়ে মুছে নতুন বছর যাতে সুন্দর এবং স্বাচ্ছন্দময় হয় সে জন্যই এসব প্রয়াস। এই উৎসব শুধু পাহাড়িরা নয়, বাঙালিরাও নানাভাবে পালন করে থাকে। সাংগ্রাই উৎসবটিকে দেখার জন্য বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বহু পর্যটকের আগমন ঘটে।
Advertisement
এদিকে বান্দরবানের প্রধান পাহাড়ি জাতি স্বত্ত্বা মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব উপলক্ষে চার দিন ব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তার মধ্যে রয়েছে, শনিবার মঙ্গল শোভাযাত্রা, চিত্রাঙ্কন, বয়োজোষ্ঠ পুজা, রোববার সাঙ্গু নদীতে বুদ্ধমুর্তি স্নান, সমবেত প্রার্থনা ও রাতে পিঠা উৎসব, সোমবার মৈত্রী পানি বর্ষণ (জলকেলি) ও রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মঙ্গলবার মৈত্রী পানি বর্ষণ অনুষ্ঠান, হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন এবং সম্প্রদায়গুলোর নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী নৃত্য, গানসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ।