ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম,(ভিডিও),ঢাকা প্রতিনিধি ,মঙ্গলবার, ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ২৬ চৈত্র ১৪৩০ : বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় নতুন করে আলোচনায় সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ)। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে কয়েকবার সশস্ত্র সংঘাতে জড়ায় চরমপন্থি এই দল। এরপর সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় ফিরলেও কথা রাখেনি তারা। বিশ্লেষকরা বলছেন আঞ্চলিক নানা সমীকরণ আর নিজেদের শক্তি জানান দিতেই তৎপর সংগঠনটি।
Advertisement
২০২২ সালের প্রথম দিকে কেএনএফের নানা তৎপরতার খবর নজরে আসে। সংগঠনটির ফেসবুক পেজের দাবি রাঙামাটি ও বান্দরবান অঞ্চলের ছ’টি জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছে তারা। পাহাড়ের দুই জেলার ৯ উপজেলা নিয়ে আলাদা রাজ্য গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলো এই সংগঠন।
পাহাড়ের অশান্ত পরিস্থিতির পেছনে তিনটি কারণ উল্লেখ বলছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. সাহাব এনাম খান বলেন, মায়ানমারে যা হচ্ছে- তা দেখে উৎসাহ নিচ্ছে কুকি-চিন।
ভারতের আসন্ন নির্বাচন ও মিয়ানমারের বিভিন্ন গ্রুপের চলমান সংঘর্ষকেও এর কারণ বলছেন এই বিশ্লেষক।
পার্বত্য চুক্তির ফলে তৈরি হওয়া বঞ্চনা ও বৈষম্যের কারণেও কুকি-চিনের এই তৎপরতা বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, পার্বত্য চুক্তির পর অনেক জায়গা থেকে সেনা প্রহরা তুলে নেয়া হয়। একটি ছোট ক্যান্টনমেন্ট বা ব্যাটালিয়নের পক্ষে পাহাড়ের দুর্গম বিশাল এলাকায় নজরদারি চালানো সম্ভব নয়।
কেএনএফের সশস্ত্র তৎপরতার সঙ্গে ভারতের মণিপুরের কুকি এবং স্থানীয় মেইতেইদের সশস্ত্র বিরোধ, আর মিয়ানমারে অব্যাহত সংঘাতকে দূরে রাখার অবকাশ নেই বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
বান্দরবানের রুমায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের দুই ‘সদস্য’সহ মোট ৫৪ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে এ অভিযান চালিয়ে এদের আটক করা হয়।
এ সময় বেশি কিছু অস্ত্রও জব্দ করে যৌথ বাহিনী। গ্রেপ্তারদের মধ্যে লুট হওয়ার সোনালী ব্যাংকের ক্যাশিয়ারও রয়েছেন।
Advertisement
রোববার কেএনএফ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক চেওসিম বমকে আটক করে র্যাব। বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের শ্যারনপাড়ার বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়।
গত সপ্তাহে কেএনএফের সন্ত্রাসীরা রুমা ও থানচিতে সরকারি সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের তিন শাখায় হামলা চালায়। ব্যাংকে লুটপাট ছাড়াও অস্ত্রের মুখে সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে তারা।
থানচিতে তিনটি গাড়িতে চড়ে দিন দুপরে গুলি করতে করতে ব্যাংক ডাকাতি করতে আসে কেএনএফ সদস্যরা।
নগদ টাকাসহ লুট করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলি। পরে র্যারের মধ্যস্থতায় অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার করা হয়।
সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আলীকদম উপজেলায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি যৌথ তল্লাশি চৌকিতেও হামলা চালায়।
Advertisement
ডাকাতি লুটপাট ও অপহরণের বিভিন্ন ঘটনায় আটটি মামলা হয়েছে। কেএনএফকে দমন করতে সরকারের পক্ষ থেকে যৌথ অভিযান চালানোর ঘোষণা দেয়া হয়।