গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. খালিদ হাসান, মো. আরিফ হোসেন ও মো. মেহেদী হাসান মিরাজ। রাজধানীর মুগদা ও মানিকগঞ্জের হরিরামপুর এলাকায় গত রবিবার অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা রক্তমাখা ছুরিটিও উদ্ধার করা হয়েছে।

গত ৭ মার্চ রাতের এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় পিয়াসের বাবার দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি আমির উদ্দিন আহমেদ অনিক চোরাই মোবাইল ফোন কেনা-বেচা করত। গত ফেব্রুয়ারিতে অনিকের কাছ থেকে নিহত ভিকটিম পিয়াসের বন্ধু মাহির বাকিতে একটি চোরাই মোবাইল ফোন কিনে নেয়। মোবাইলের টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ না করায় মাহিরের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে অনিক। বিভিন্ন সময় হত্যার হুমকিও দিতে থাকে। পরবর্তীতে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় অনিক খালিদ, আরিফ, মিরাজ ও আরও কয়েকজন মিলে টাকা আদায়ের জন্য মাহিরের বাসায় যায়। তারা মাহিরকে বাসায় না পেয়ে মাহিরের মায়ের কাছে পাওনা টাকা দাবী করে এবং অশোভনীয় আচরণ করে। তখন মাহিরের মা একদিন পর টাকা পরিশোধের আশ্বাস দিলে তারা চলে যায়।’

Advertisement

পরবর্তীতে মাহির বাড়িতে এসে তার মায়ের কাছে ঘটনা জানতে পারে। বিষয়টি সমাধানের জন্য মাহির তার বন্ধু পিয়াস ও শামীমকে জানায়। এরপর এই দুজন বিষয়টি মিমাংসার জন্য দুই পক্ষকেই ডাকে। সেখানে উভয় পক্ষই বাকবিতণ্ডায় জড়ায় উল্লেখ করে এই র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘এক পর্যায়ে পিয়াস ও শামীমকে তুই তুকারি সম্বোধন করে অনিক। এতে পিয়াস বয়সে বড় হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এই বিষয়টা বিহিত করতে রাত ১০ টায় অনিককে ফোন করে একই স্থানে আসতে বলে। অনিক সেখানে পৌঁছালে পিয়াস এবং শামীম অনিকের কাছে কেন সে তাদের তুই তুকারি সম্বোধন করেছিল তার ব্যাখ্যা চায়। আগে থেকেই এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, গ্রুপিং এবং ছোট-বড় দ্বন্দ্ব থাকায় তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এসময় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে খালিদ, আরিফ, মিরাজ, অর্নব বেসবল খেলার স্টিক এবং ধারালো ছুরি দিয়ে পিয়াসের পিঠের ডান পাশে এবং শামীমের ডান কাধে আঘাত করলে তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আহতদের চিৎকারে এলাকার লোকজন এসে জড়ো হলে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। তারপর পিয়াস ও শামীমকে মুগদা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক পিয়াসকে মৃত ঘোষণা করে।

Advertisement

গ্রেপ্তার খালিদ স্থানীয় একটি স্কুল থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে। সে উত্তর মুগদা এলাকায় ‘গ্যাং স্টার রাব্বী’ গ্রুপের সদস্য হিসেবে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, অলি-গলিতে মাদক ব্যবসা, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল। সে রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় মাদক সংক্রান্ত মামলায় পনের দিন কারাভোগ করেছে। মিরাজ স্থানীয় একটি স্কুলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে। সে মামলার আসামি রাব্বীর অন্যতম সহযোগী এবং ‘গ্যাং স্টার রাব্বী’ গ্রুপের সদস্য হিসেবে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল। আরিফ এইচএসসি পাশ করে স্থানীয় এলাকায় একটি ইন্টারনেট অফিসে কাজ করতো। সে উক্ত মামলার আসামি অনিকের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতো।