ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),নির্বাচন কমিশন প্রতিনিধি,বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের জামানত বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সেই সঙ্গে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ৭৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব জাহাংগীর আলম। পাশাপাশি সংঘাত এড়াতে মনোনয়নপত্র অনলাইনে জমাদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে ২৮তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান তিনি।
ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, কমিশন সভায় প্রস্তাবগুলো আইন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হবে। সেইগুলো ভেটিং শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Advertisement
ইসি সূত্র জানা যায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩-এর সংশোধনীতে ২৬টি এবং উপজেলা প্রদত্ত পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬-এর সংশোধনীতে ৮টি বিধান সুপারিশের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এগুলো নিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ইসির আইন ও বিধিমালা সংস্কার কমিটির সভাপতি নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানার সভাপতিত্বে একটি বৈঠক হয়। কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় পরের দিন ৮ ফেব্রুয়ারি আবারও বৈঠকে বসে এই কমিটি। খসড়া তালিকা চূড়ান্ত করে কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হলে ১৮টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
Advertisement
কমিশন সভায় যেসব সংশোধনের অনুমোদন দেওয়া হয়।
উপজেলা পরিষদ (আচরণ বিধিমালা), ২০১৬
>> পোস্টার, ব্যানার সাদা-কালো অথবা রঙিন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
>> প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে জনসংযোগ এবং ডিজিটাল মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচরণার প্রস্তাব করা হয়েছে।
>> ৫ জনের অধিক কর্মী বা সমর্থককে নিয়ে জনসংযোগ করা যাবে না।
>> প্রতি ইউনিয়নে ১টি এবং পৌরসভা প্রতি ৩টি ওয়ার্ডে একটির অধিক নির্বাচনী ক্যাম্প বা অফিস স্থাপন করা যাবে না।
>> নির্বাচনী ক্যাম্প বা অফিসের আয়তন ৬০০ বর্গফুটের অধিক হতে পারবে না।
>> নির্বাচনী প্রচারণায় একটির অধিক শব্দযন্ত্র (হর্ন) বা জনসভায় ৪টির অধিক শব্দযন্ত্র (হর্ন) ব্যবহার করা যাবে না।
>> শব্দদূষণ প্রতিরোধে শব্দ বর্ধনকারী যন্ত্রের শব্দের মান মাত্রা ৬০ ডেসিবলের অতিরিক্ত হতে পারবে না।
>> প্রচারণায় পোস্টার বা ব্যানারে পলিথিনের ব্যবহার না করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার (উপজেলা পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩
>> স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে ভোটারের সমর্থনেরযুক্ত তালিকা দাখিলের বিধান বিলুপ্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
>> অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
>> চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে জামানত ১ লাখ টাকা, ভাইস চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে ৭৫ হাজার টাকা এবং মহিলা সদস্যের ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।
>> সমভোটের ক্ষেত্রে লটারির মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
>> প্রদত্ত ভোটের শতকরা ১৫ ভাগ অপেক্ষা কম ভোট পেলে জামানত বাজেয়াপ্তের প্রস্তাব করা হয়েছে।
>> চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানের নির্বাচনী ব্যয় ২৫ লাখ টাকা এবং মহিলা সদস্যদের ১ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।
>> মনোনয়নপত্রে লিঙ্গ হিসেবে হিজড়াদের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।
>> নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত ও পুনরায় ভোটগ্রহণে কমিশনের ক্ষমতার বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে।
>> মনিটরিং কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
>> নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত হওয়ায় প্রতীক অন্তর্ভুক্তি/সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
Advertisement
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পরই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা-২০১৩ এর সংশোধনীতে ২৬টি এবং উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা-২০১৬ এ সংশোধনীর কাজে হাত দেয় ইসির আইন ও বিধিমালা সংস্কার কমিটি।
ইসির আইন ও বিধিমালা সংস্কার কমিটির সভাপতি নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানার সভাপতিত্বে সভায় প্রাথমিক খসড়ার প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়। মঙ্গলবার সেটি কমিশন সভায় উপস্থাপনের পর কিছু কাটছাঁট করে অনুমোদন দেয় কমিশন।
Advertisement
ইতোমধ্যে ইসি জানিয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চারটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপ ৪ মে ১৫৩টি, দ্বিতীয় ধাপ ১১ মে ১৬৫টি, তৃতীয় ধাপ ১৮ মে ১১১টি এবং চতুর্থ ধাপ ২৫ মে ৫২টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।