ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ : উচ্চশিক্ষিত ও ধর্মের আলোয় আলোকিত মানুষ ডিপু চাকমা। মাথা ন্যাড়া, চোখে মোটা চশমা, পরনে গেরুয়া ত্রি-চীবর, পায়ে চটি আর হাতে ব্রহ্মের মালা– এ যেন সাক্ষাৎ ধর্মদূত! পৌরোহিত্য আর পোশাকের বদৌলতে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছেন তিনি। শেষমেশ ১৬ হাজার পিস ইয়াবাসহ দুই সহযোগীকে নিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন খাগড়াছড়ির পানছড়ি আদর্শ বৌদ্ধবিহারের প্রধান পুরোহিত ডিপু চাকমা। জুয়ায় সর্বস্ব হারিয়ে তিনি এ পথে এসেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Advertisement
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে ডিপু চাকমা বলেন, এই অবৈধ কাজ করে তিনি প্রতি চালানে সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা করে পেতেন। সঙ্গে যাতায়াত ভাড়া এবং খাবারের খরচও দেয়া হতো তাকে।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মগবাজারের একটি বাসা থেকে আটক করা হয় দীপু চাকমাসহ তিনজনকে।
Advertisement
এরমধ্যে আপেল বড়ুয়া, দীপু চাকমার এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। থাইল্যান্ড, মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবা, ব্যবসায়ীরা দীপু চাকমাকে বহনকারী হিসেবে কাজ করাতেন। কিন্তু, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত দীপু চাকমা কেন জড়িয়ে পড়লেন ইয়াবা পাচারে।
Advertisement
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের লালবাগ বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান বলেন, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকা মোমিন হাওলাদারের কাছেই এসব মাদকের চালান পৌঁছে দিতেন ডিপু। তাঁর কাছ থেকে মূলত দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে যেত। ধর্মগুরু ডিপু চাকমা আরেক বৌদ্ধ ভিক্ষুর শিষ্য আপেল বড়ুয়ার মাধ্যমে টাকার লোভে এ জগতে আসেন।
Advertisement
এ ছাড়া ছোটবেলা থেকেই ধূমপানে আসক্ত এই পুরোহিত খাগড়াছড়ি সদরে থাকার সময় অনলাইন জুয়ার সঙ্গে পরিচিত হন। সেখান থেকে জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন। তিনি নিয়মিত অনলাইনের চারটি সাইটে জুয়া খেলতেন। এতে বৌদ্ধ ভিক্ষু ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা খুইয়েছেন। এসব টাকার মধ্যে রয়েছে নিজের বেতন, ভক্তদের দান-দক্ষিণা, নিজের ভিটামাটি বিক্রি করা টাকা এবং মায়ের কাছ থেকে ঋণ নেয়া দেড় লাখ টাকা। জুয়ায় সর্বস্বান্ত হয়ে ইয়াবা পরিবহনের কাজে জড়ান তিনি।
Advertisement
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দীপু চাকমা ডিবি পুলিশকে জানান, তার মতো ছদ্মবেশে আছেন আরো বেশ কয়েকটি পেশার মানুষ। মশিউর রহমান বলেন, এই মানুষগুলোকে কিন্তু সমাজের অন্যরা সম্মান করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকরা বাহিনী তাদের পোষাক ও অনুশীলনের কারণে তাদের সবসময়ই সন্দেহের বাইরে রাখেন। এই জন্য তিনি (ডিপু চাকমা) বেশ কয়েকবার ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ এই মালামালগুলো এতোবার পাচার করেছে যার কারণে ধরা যায়নি।