স্মার্ট প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বদলে গেছে বগুড়ার মরিচ আবাদের চিত্র (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বগুড়া প্রতিনিধি,শুক্রবার,২৬ জানুয়ারি ২০২৪ : বগুড়ার চরাঞ্চলে মরিচ উৎপাদনে একসময় বাঁধ সাধত বৃষ্টি, বন্যা আর ঘন কুয়াশার মতো প্রতিকূল আবহাওয়া। তবে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি উদ্ভাবিত ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির বদৌলতে বদলে গেছে মরিচ আবাদের সেই চিত্র। কৃষকরা বলছেন, এই পদ্ধতিতে আবহাওয়া উপযোগী চারা উৎপাদন করে জমিতে রোপণ করায় ফলন বেড়েছে আগের চেয়ে চারগুণ।

Advertisement

ফলশ্রুতিতে চরের বুকে যেন শোভা পাচ্ছে বিস্তীর্ণ সবুজ গালিচা।  কারণ, নয়পাড়া চরের মাটিতে মরিচ লাগিয়েছেন এখানকার চাষিরা।  ইব্রাহিম আলী ও রানু বেগম দম্পতি তাদেরই একজন। জানান, আধুনিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত চারা রোপণ করায় ফলন পেয়েছেন চারগুণ বেশি।

এই দম্পতি বলেন, চারার মধ্যেও কম-বেশি আছে।  বিষ-কীটনাশকেও কম-বেশি আছে। স্মার্ট প্রযুক্তির ফলে তাই ফলন ভালো হয়েছে। মরিচও বেশি ধরেছে।  ইব্রাহিম আলী জানান, গতবছর তিন বিঘা জমিতে মরিচ লাগিয়েছিলেন। এবার ৮ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন।ফলন ভালো হয়েছে, মরিচও ভালো ধরেছে।

Advertisement

চরে মরিচ আবাদের নানা প্রতিকূলতা থেকে মুক্তি মিলেছে কমিউনিটি নার্সারির মাধ্যমে। যেখানে নেট হাউজ তৈরি করে কোকোপিটে উৎপাদন করা হচ্ছে আবহাওয়া উপযোগী চারা। আর এতেই বদলে গেছে এ অঞ্চলের কৃষির চিত্র। এক কৃষক বলেন, হাইব্রিডে ফলন বেশি।  দু’তিনমাস পর্যন্ত প্রতিদিন মরিচ তোলা যায়। অপর একজন বলেন, হাইব্রিড বীজে কোনো পোকা আক্রমণ করেনি, কোনো সমস্যা হয়নি।  কোনো রোগ-বালাইও হয়নি।

মরিচ চাষে কমিউনিটি নার্সারি সহযোগিতা করছে জানিয়ে এক কৃষক বলেন, কমিউনিটি নার্সারি আমাদের সহযোগিতা করছে। কোন সময়ে ওষুধ দিতে হয়, কোন সময়ে মরিচ সংগ্রহ করা যায় এসব ক্ষেত্রে আমারা সবসময় কমিউনিটি নার্সারিকে পাশে পাচ্ছি।  এ জন্য আমাদের জমির ফসল ভালো হচ্ছে।

Advertisement

পল্লী উন্নয়ন একাডেমির একদল কৃষিবিদের গবেষণালব্ধ এই প্রযুক্তি মাঠে গড়ায় নয় মাস আগে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের দাবি, চরবাসির ভাগ্য ফেরাতেই তাদের এই উদ্যোগ। বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির উপপরিচালক কৃষিবিদ মোছা. রেবেকা সুলতানা বলেন, আধুনিক যে প্রযুক্তি এসেছে সেটা চরের মানুষদের কাছে পৌঁছে দেয়ার কারণেই এই বিপ্লব ঘটছে।

বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির যুগ্ম পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুল মজিদ বলেন, সারা বাংলাদেশের যে ১০ শতাংশ চর এলাকা রয়েছে, এখানে যদি মরিচ চাষ করা হয় তাহলে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা আমাদের জিডিপিতে যোগ করা সম্ভব। আমারা খাদ্য নিরাপত্তার যে কথা বলছি, বিভিন্ন সময়ে মরিচের যে ক্রাইসিস (স্বল্পতা) হচ্ছে এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে।  এছাড়াও জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলা করে চরের কৃষি আধুনিক কৃষিতে রূপান্তর করতে কাজ করছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।

Advertisement

যমুনার ৭১টি চর ছাড়াও দেশের বিস্তৃত চরাঞ্চলে এ প্রযুক্ত ছড়িয়ে দিতে পারলে জাতীয় অর্থনীতিতে তা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মত সংশ্লিষ্টদের।