ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),বিশেষ প্রতিনিধি,রোববার, ২১ জানুয়ারি ২০২৪ : পুলিশের ফেসবুক পোস্টে নিহত ছেলের ছবি দেখে তা শনাক্ত করেন মা। সিরাজগঞ্জ থেকে ছুটে আসেন কালিয়াকৈর থানায়। কিন্তু এর আগের দিনই লাশ দাফন হয়ে গেছে বলে মা জানতে পারেন।
Advertisement
জানা যায়, খুন হওয়া যুবকের লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে পারছিল না কালিয়াকৈর থানা পুলিশ। পরে পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার ছবি পোস্ট করে। ছবিটি শুক্রবার বিকেল থেকেই ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা নিহত যুবকের মা সাবিনা বেগম দেখতে পান। তিনি শনিবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ থেকে ছুটে এসে কালিয়াকৈর থানায় ছেলের বিষয়ে যোগাযোগ করেন। কিন্তু মা থানায় আসার আগেই পুলিশ শুক্রবার সকালে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের জন্য লাশটি হস্তান্তর করে। ওইদিনই লাশটি দাফন করা হয়। এটি জানতে পেরে মা সাবিনা আহাজারি করতে থাকেন। এতে পুরো থানা এলাকায় হৃদয়বিদায়ক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
নিহতের পরিবার, পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকার ফ্লাইওভার সেতুর পূর্বপাশে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয় অজ্ঞাতনামা এক যুবক (২৪)। ওইদিন নিহত যুবকের পরিচয় শনাক্ত করতে না পেরে পুলিশ ফেসবুকে তার ছবি পোস্ট করে। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও বন্ধুরা ছবিটি দেখে যুবকের মাকে দেখান। পরে যুবকের মা ছবি দেখে ছেলেকে চিনতে পারেন।
নিহত যুবক হলেন সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার বানিয়াকৈর গ্রামের হায়দার আলী প্রামাণিকের ছেলে ইমরান হোসেন শান্ত। তিনি কালিয়াকৈরের মৌচাক এলাকার করিম গ্রুপের পূর্বাণী টেক্সটাইল লিমিটেড নামক একটি পোশাক তৈরির কারখানায় চাকরি করতেন।
Advertisement
নিহতের মা সাবিনা বেগম জানান, এক সপ্তাহ আগে তাঁর ছেলে শান্ত তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলে ও বেতন পেয়ে ২০০০ টাকা বিকাশে পাঠায়। গত বৃহস্পতিবারে তাঁর গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শান্ত বাড়িতে না যাওয়ায় তাঁরা ভেবেছেন সামনের সপ্তাহে আসবে। কিন্তু ঘটনার দু’দিন পর ফেসবুকে ছেলের ছবির পোস্ট দেখে নিহত হওয়ার খবর জানতে পারেন। ছেলের লাশ পাওয়ার আশায় কালিয়াকৈর থানায় ছুটে আসেন।
পুলিশ জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার চন্দ্রা এলাকায় শান্তকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরের দিন গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে আঞ্জমান মুফিদিনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
Advertisement
কালিয়াকৈর থানার ওসি এ এফ এম নাছিম বলেন, নিহত যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার মা ফেসবুকে ছবি দেখে থানায় এসেছেন। পরে পুলিশের কাছে ছেলের বর্ণনা দিয়ে শনাক্ত করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।