ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),রংপুর প্রতিনিধি ,রোববার, ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ : রংপুরে শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক পরিবেশে ভোট হলেও সারাদেশের পরিস্থিতি একইরকম নয় বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের।
Advertisement
রোববার রংপুর-৩ আসনের ভোট কেন্দ্র পর্যবেক্ষণের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ আসন থেকেই ভোট করছেন কাদের।
এসময় তিনি বলেন, রংপুরে ভোটারদের স্বাভাবিক উপস্থিতি রয়েছে। সামনের দিকে ভোটার সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করছি। শীতের সকালে উপস্থিতি কিছুটা কম ছিলো।
কাদের বলেন, সারাদেশের পরিস্থিতি আমাদের রংপুরের মতো না। অনেক জায়গা থেকে খুবই অস্বস্তিকর খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমরা গতকাল রাতেই খবর পেয়েছি ঢাকা-১ (দোহার নবাবগঞ্জ) এলাকায় প্রায় সব ভোট কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগের কর্মীরা ভোটারদের মধ্যে ভীতি তৈরি করার চেষ্টা করছে।
‘আমাদের এজেন্টের কাগজ-পত্র কেড়ে নেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। সেখানে ভোট ডাকাতির প্রস্তুতি পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনেই ঘটেছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। সেটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’
তিনি বলেন, কুমিল্লা-১ আসন থেকে সকালে আমাদের একজন প্রার্থীর সব পোলিং এজেন্টকে জোর করে বের করে দেওয়া হয়েছে। আমরা সেটা সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। জামালপুর-৩ থেকেও খবর পেলাম এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। পুরানা কায়দায় আওয়ামী লীগ যেভাবে কেন্দ্র দখল করে সেভাবেই এগুলো করা হচ্ছে।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, তারা আমাদের বারংবার আশ্বস্ত করেছিলো এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে না। তবে, এরইমধ্যে আমরা কয়েকটি ঘটনা শুনেছি। ভোটটা স্বাভাবিক হবে না এ ধরনের একটা আবহ তৈরি করা হয়েছে। সব জায়গার পরিবেশ সম্পর্কে এখনই বলা যাচ্ছে না।
‘আমরা এখন পর্যন্ত বলতে পারি, বেশিরভাগ জায়গায়ই ভোট স্বাভাবিক হচ্ছে। এটা দিন গড়ালে সামনের দিকে আমরা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারবো।’
Advertisement
জিএম কাদের বলেন, সবসময় আমাদের আশঙ্কা ছিলো, নির্বাচনে নিয়ে এসে আমাদের কোরবানি করা হবে। কোরবানি করলে নির্ভেজাল একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম হবে দেশে। এসব আশঙ্কা সত্যি হয় কিনা বিকেল হলেই বোঝা যাবে।
জাতীয় পার্টির শঙ্কা যদি সত্যি হয় তাহলে দলের অবস্থান কী হবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটা যখন হবে তখন বলবো। আগে থেকে কিছু বলতে চাই না। আমরা সার্বিক পরিস্থিতি দেখে দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো।
২০১৮ সালের নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে কিনা, জবাবে জিএম কাদের বলেন, এখন পর্যন্ত কিছু কিছু নমুনা দেখা যাচ্ছে। কারণ তাদের লোকবল বেশি। প্রশাসন তাদের সঙ্গে পরোক্ষভাবে আছে। অনেক জায়গায় কোথাও বাধা দিচ্ছে না, চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। এরকম তারা করে যাচ্ছে। যতদূর খবর পেয়েছি এতে আমরা উদ্বিগ্ন।
এ পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা যেহেতু ইলেকশনে এসেই গেছি, এখন তো আর বর্জন করার কোনো স্কোপ নেই। ইলেকশনের পরে ফলাফল দেখে পরবর্তী কর্মসূচি নিতে হবে।
এ সময় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগরের সভাপতি সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসীর, জেলা কমিটির সদস্য সচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাকসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রংপুর-৩ আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের দলীয় প্রতীক লাঙ্গল, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির আব্দুর রহমান রেজু একতারা, বাংলাদেশ কংগ্রেসের একরামুল হক ডাব, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সহিদুল ইসলাম মশাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির শফিউল আলম আম ও তৃতীয় লিঙ্গের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারা ইসলাম রানী ঈগল প্রতীকে লড়ছেন।
এই আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তুষার কান্তি মন্ডলকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
Advertisement
এখানে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৭৬৮ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৪৭ হাজার ২৯৪ জন ও পুরুষ ২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৭২ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ২ জন।