ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি ,বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ : ঢাকায় ২৮ অক্টোবর সহিংসতা ও পুলিশ হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে যুবদল নেতা মুকিত হোসাইনকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৩ সালে বোমা বানাতে গিয়ে মুকিতের ডান হাতের কবজি উড়ে যায়। সেখানে লাগিয়েছেন প্লাস্টিকের নকল হাত। এই অবস্থাতেও তিনি বানিয়েছেন প্রায় ৪০০ বোমা। এ কারণে তিনি দলে বোমা বিশেষজ্ঞ ওরফে ‘বোমা মাওলানা’ নামে পরিচিত।
Advertisement
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে মঙ্গলবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, মুকিত আলিয়া মাদ্রাসা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। পরে মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। দলীয় আনুগত্য ও উগ্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে তাঁকে মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নাশকতা বা আগুন দেওয়ার ছবি লন্ডনে পাঠালে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের পুরস্কৃত করা হতো। এরই অংশ হিসেবে দলে বড় পদ পান মুকিত। গত সোমবার পুরান ঢাকার চকবাজার থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ডিবির লালবাগ বিভাগ।
Advertisement
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, ২৭ অক্টোবর রাতে মতিঝিল ব্যাংক কলোনিতে যুবদল নেতা সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পাঠানো ১০ কেজি গান পাউডার রবিউল ইসলাম নয়নের কাছ থেকে নেন মুকিত। এই গান পাউডার দিয়ে তিনি ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত কয়েক দফায় প্রায় চারশ হাতবোমা তৈরি করেন। সেই বোমা বিভিন্ন থানা যুবদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে সরবরাহ করা হয়। তাঁর সরবরাহ করা ২০টি হাতবোমার মধ্যে একটি সোহেল খান ও অভি আজাদ চৌধুরীর নির্দেশে মহানগর জজকোর্ট প্রাঙ্গণে বিস্ফোরণ ঘটান ওয়ারীর আব্দুল হামিদ ভূঁইয়া ও তাঁর স্ত্রী হাফসা আক্তার।
Advertisement
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে হারুন অর রশীদ বলেন, ২৮ অক্টোবর সহিংসতা এবং পরে হরতাল-অবরোধে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর কাজে মহানগর যুবদল দক্ষিণে আটটি দল গঠন করা হয়। কেন্দ্রীয় যুবদল ও মহানগর যুবদলের সঙ্গে সমন্বয় করে বিভিন্ন জায়গা থেকে গান পাউডার সংগ্রহ করে তা দিয়ে বোমা বানিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো, ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের কর্মীদের দিয়ে যানবাহনে আগুন দেওয়ার কমপক্ষে ছয়টি ঘটনার সমন্বয় করেছেন মুকিত। তিনি নেতাকর্মীর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ছাড়াও কারাগারে দেখাশোনার কিছু অংশের সমন্বয় করেন। এ ছাড়া প্রতিটি যানে আগুন দেওয়ার জন্য ১০ হাজার টাকা, বিস্ফোরণ ঘটানো ও মশাল মিছিলের জন্য পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয় মহানগর যুবদলের পক্ষ থেকে। গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ৬-৭ হাজার লোকের মিছিলে নেতৃত্ব দেন মুকিত। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সহিংসতায় জড়িত দলটির মধ্যম সারির বেশ কিছু নেতাকর্মীর নাম-পরিচয় জানা গেছে। তাদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে।
প্লাস্টিকের নকল হাত ও গ্রেপ্তার মুকিত। ছবি: সংগৃহীত