মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন: মেয়ে-নাতিকে হারিয়ে পাগলপ্রায় ফজলুল হক (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),নেত্রকোনা প্রতিনিধি ,বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ : মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছেন নাদিরা আক্তার পপি ও তার শিশু সন্তান ইয়াসিন রহমান পিয়াস। তাদের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার সদর উপজেলার বরুনা গ্রামে। এছাড়াও এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন শহরের পৌর এলাকার নাগড়ার বাসিন্দা পৌর বিএনপির সদস্য রশিদ ঢালী। তার বাড়িতেও চলছে শোকের মাতম।

Advertisement

নিহতের খবরে স্বজনসহ এলাকাবাসী তাদের বাড়িতে দেখতে ও সমবেদনা জানাতে ভিড় করে। এ সময় স্বজনসহ সাধারণ মানুষ ঘটনার নিন্দা ও দোষীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।

নাদিরা আক্তার পপির (৩০) স্বামীর বাড়ি নেত্রকোনার সদর উপজেলার দক্ষিণবিশিউড়া বরুনা গ্রামে। মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে নেত্রকোনা থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান নাদিরা ও তার শিশু সন্তান ইয়াসিন রহমান পিয়াস।

স্থানীয়রা জানান, নাদিরা তার ব্যবসায়ী স্বামী মিজানুর রহমানের সঙ্গে রাজধানীর কাওরান বাজার এলাকায় থাকতেন। সোমবার রাতে দুই সন্তানকে নিয়ে নাদিরা তার ভাই হাবিবুর রহমানের সঙ্গে মোহনগঞ্জ ট্রেনে চড়ে ঢাকার বাসায় যাচ্ছিলেন। ট্রেনে আগুনের ঘটনার সময় হাবিবুর রহমান ভাগ্নে ফাহিমকে নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে জীবন বাঁচাতে পারলেও ট্রেনে আটক পড়ে আগুনে দগ্ধ হয়ে শিশু সন্তানসহ মারা যান নাদিরা। সকালে নাদিরার মৃত্যু সংবাদ বরুনা গ্রামে পৌঁছালে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।

Advertisement

নাদিরার বোন লিপি আক্তার, স্বজন ও এলাকাবাসী ট্রেনে যারা আগুন দিয়েছে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

নাদিরার জামাইয়ের ছোট ভাই আব্দুল কাদির মিলন বলেন, স্কুল বন্ধে ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল নাদিরাসহ তার দুই সন্তান। রাতে ওদেরকে ট্রেনে উঠিয়ে দিয়ে আসি। ঢাকার বাসায় যাচ্ছিল। পরে শুনি ট্রেনে আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছে। এখনও লাশ আসেনি। জানাজার সময় নির্ধারণ করা হয়নি। সবাইকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

পাগলপ্রায় বৃদ্ধ নাদিরার বাবা মো. ফজলুল হক বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে শেষমেষ দুইটা কথাও বলতে পারছি না। আমরার বুকে যেমন আগুন দিছে, হেরার বুকেও তেমন যেন আগুন লাগে। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চাই।

নিহত বিএনপি নেতা মো. রশিদ ঢালীর ছেলে মো. মামুন ঢালী বলেন, আমার বাবা ব্যবসার কাজে ঢাকা গেছিল ট্রেইনে। জীবনের লাইগ্যা গেছেগা। আর আইবো না।

Advertisement

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নাদিরার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার কথা জানিয়েছেন। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম বলেন, নিহতের স্বজনদের সঙ্গে ঘটনার পর থেকেই আমরা যোগাযোগ রাখছি। মরদেহ এলাকায় আসার পর সেখানে যাবো। নিহতদের পরিবারদের প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।