এবার ডিবিতে শাহজাহান ওমর, হারুনের কাছে করলেন সাইবার হেনস্তার অভিযোগ (ভিডিও)

SHARE

ওয়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),ঢাকা প্রতিনিধি,বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ : নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া শাহজাহান ওমর সাইবার হেনস্তার অভিযোগ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে। তাঁকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মোবাইল ফোনে নানা রকম হেনস্তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ দিয়েছেন।

Advertisement

আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে আসেন শাহজাহান ওমর। অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ।

হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আর দশজন মানুষের মতো শাহজাহান ওমরও আমাদের এখানে এসেছেন তাঁর কিছু ব্যক্তিগত সমস্যার ব্যাপারে অভিযোগ দিতে। তাঁকে নানা মাধ্যমে সাইবার হেনস্তা করা হচ্ছে—এই বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা তাঁর অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’

ডিবি কার্যালয়ে আসা ও অভিযোগের ব্যাপারে জানতে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘আপনারা জানেন আগে আমি বিএনপি করতাম, এরপরে ব্যক্তিগত কারণে আমি আওয়ামী লীগে জয়েন করেছি। আমি একজন সাবেক সংসদ সদস্য। আমি ইদানীং বিভিন্নভাবে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছি। বিভিন্ন মানুষ আমাকে অকথ্য ভাষায় কথা বলে। মাঝে মাঝে আমার ফোনে আমাকে না পেয়ে আমার মেয়ের ফোনে, স্ত্রীর ফোনে, ছেলে ও আমার জুনিয়র আইনজীবীর ফোনে এমনকি আমার বন্ধুবান্ধবের ফোনেও কল করে আজেবাজে কথা বলে। আমি যদি কল ব্যাক করি, আবার কেটে দেয়। এই জন্যই আমি ডিবি অফিসে হারুন সাহেবকে জানাতে আসলাম, ভাই আমি সাইবার বুলিংয়ের শিকার।’

কারা বুলিং করছে জানতে পেরেছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘এটা তো তারা (পুলিশ) খুঁজে বের করবে।’

Advertisement

ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শাহজাহান ওমর। ছবি: আজকের পত্রিকা  ডিবি কার্যালয় থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শাহজাহান ওমর। ছবি: আজকের পত্রিকাতবে শুধু ফোন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম না প্রকাশ্যেও তাঁকে হেনস্তা করা হচ্ছে, এমনকি আদালতেও কতিপয় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা তাঁকে হেনস্তা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক এই সংসদ সদস্য।

তাঁর নির্বাচনী এলাকা ঝালকাঠি-১-এ (কাঠালিয়া-রাজাপুর) তাঁকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেখা গেছে। এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘না, না এটা মিস আন্ডারস্টান্ডিং। আমি আগে বিএনপি করতাম তো। অনেক দিন পরে এলাকায় গিয়েছিলাম। বিএনপির অনেক লোক আমার সঙ্গে গেল, আওয়ামী লীগ যারা… এখন তো বিএনপি-আওয়ামী লীগ নাই আমার এলাকায়। আমরা সবাই আওয়ামী লীগ হয়ে গেছি ওখানে। আমার লাইসেন্স করা পিস্তল আছে, আপনারা জানেন হয়তোবা। সেইটা আমার সঙ্গে ছিল এবং সেইটা আমি অফিসে রেখে চলে আসছি। ইটস অ্যা মিসটেক, অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি। আমার এক লোক সেইটা হাতে নিয়া গেছে। ওখানে কোনো ফর্মাল মিটিংও ছিল না, কোনো সভাপতি ছিল না, কেউ বক্তব্যও রাখে নাই।’

ইলেকশন কমিশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে উগ্র আচরণ করার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে ওমর বলেন, ‘এটা রং ইনফরমেশন। আমি গেয়েছিলাম নির্বাচনী আচরণবিধি আমার কাছে ছিল না, সেটা আনতে। এখন দেখেন, আপনি আমার ছবি তুলতেই পারেন। কিন্তু বলতে হয় না ভাই, আপনার একটা ছবি তুলি? এটুকু তো আমি অন্তত আশা করতেই পারি। জানালার ফাঁক দিয়ে ছবি তোলে। আমি বলেছি যে আপনে এই কাম করেন কেন? আপনি সামনে আসেন। আমাকে বলেন যে ভাই আপনার একটা ছবি তুলব। অসুবিধা কী? সাংবাদিক হিসেবে আপনারা ছবি তুলতেই পারেন, কথা বলতেই পারেন কিন্তু এ রকম লুকিয়ে লুকিয়ে কেন করেন ভাই? ভাই ছবি তোলার আগে আমার পারমিশন নেন, তারপর দশবার তোলেন আমার আপত্তি নাই। ওপাশ থেকে বলা হলো আপনি ঝাড়ি দিয়ে কথা বলেন। তখন আমি বললাম ঝাড়ি দিলাম কই? আপনারা আমার সঙ্গে সৌজন্যতাবোধ দেখান, আমিও দেখাব।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণের কারণে আপনি দুঃখ প্রকাশ করবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘নো ব্রাদার সাংবাদিকদের সঙ্গে আমি কোন দুর্ব্যবহার করিনি। খুবই সদাচরণ করেছি।’

Advertisement

 

ডিবি কার্যালয়ে আসার আগে শাহজাহান ওমর সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে সাক্ষাৎ পাননি এমন খবর শোনা যাচ্ছে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়ে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘নো, বুঝছেন ৷ আমি সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। আইনজীবীদের বার কাউন্সিলে সদস্য হতে হয়। গত ১০-১২ বছর বাই মিসটেক সদস্য পদটা আমি রিনিউ করিনি। কিছু চাঁদা দিতে হয় বার কাউন্সিলে প্রতিবছর। এটা আমার জুনিয়ররাও বলে নাই, ক্লার্কও বলে নাই। এগুলো যখন করতে গেলাম তখন আমাকে বলা হলো রেজিস্ট্রার সাহেবের থেকে একটা ফর্ম আনেন। আমি রেজিস্ট্রার সাহেবের কাছে গিয়েছিলাম। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকের কাছে আমার যাওয়াটা সাজে না, তা ছাড়া পলিটিক্যাল বিষয়ে তাঁর কাছে কেন যাব?’

ডিবিতে অভিযোগ দিতে গিয়ে হারুন অর রশিদের সঙ্গে খাবার খাচ্ছেন শাহজাহান ওমর। ছবি: সংগৃহীত