নারীদের কাজ শেখানোর লোভ দেখিয়ে অর্ধকোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা (ভিডিও)

SHARE

য়ার্ল্ড ক্রাইম নিউজ ২৪.কম (টিভি),মাদারীপুর প্রতিনিধি,শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩ : প্রথমে স্কুলে-স্কুলে শিক্ষার্থীদের মাঝে লিফলেট দিয়ে নারীদের আহ্বান। এলাকাজুড়ে করা হয় চটকদার মাইকিং। দর্জির কাজ শেখানো শেষে আগ্রহী নারীদের সেলাই মেশিন দেয়ার কথা বলে অর্ধকোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা করতোয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচয়দানকারী প্রতারকচক্র। মাদারীপুরের ওই ঘটনায় সর্বস্বান্ত অন্তত দেড় হাজার নারী। বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস পুলিশ সুপারের।

Advertisement

প্রথমে সদস্য ফি একশত টাকা ও বই কেনার জন্য পাঁচশত টাকা করে নেয় জামাল উদ্দিন সরদার ও নাহিদ নামে করতোয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচয়দানকারী দুই ব্যক্তি। এরপর কয়েকদিন কাজ শিখিয়ে সেলাই মেশিন দেয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে তিন হাজার ৮০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে নিয়ে লাপাত্তা প্রতারকচক্র। আশায় থেকে দীর্ঘদিনেও তারা টাকা পাচ্ছে না। ফলে আর্থিক ক্ষতির স্বীকার হয়েছে এসব নারী।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গত ১০ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার ঘটমাঝি, দুধখালী, মধ্য খাগদী, পাকদি, হাউসদিসহ বিভিন্ন গ্রামের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর মাঝে লিফলেট বিতরণ করে একটি চক্র। পরে মাইকিং করে বিদ্যালয়ে এলাকার নারীদের দর্জির কাজ শেখার আহ্বান জানানো হয়।

মাদারীপুর পৌর শহরের পাকদী এলাকার নুপুর আক্তার। স্বল্প দামে সেলাই মেশিন পাওয়ার আশায় প্রথমে একশত টাকা, পরে আরও ৫ হাজার টাকা দেয় প্রতারকদের কাছে। সেই টাকা তো ফেরত পায়নি। বরং প্রতারণার শিকার হন তিনি। তার মতো অন্তত দেড় হাজার নারীর একই অবস্থা।

নুপুর আক্তার বলেন, ‘পাকদী এলাকায় অন্তত ২০ জনের কাছ থেকে ৫ হাজার করে টাকা নিয়ে পালিয়েছে প্রতারকরা। পাশের ঘটমাঝি এলাকা থেকে অন্তত ৯০ থেকে ১শ জন মেয়েদের থেকেও টাকা নেয়া হয়েছে। এমন প্রতারণার জন্য দায়ীদের বিচারের আশায় সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। তবে প্রতারকদের এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমাদের দাবি, দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করা হয়।

Advertisement

প্রতারকচক্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে। এমনই একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক জানালেন প্রতারণার বিষয়। আর চরমুগরিয়া এলাকার কোহিনুর বেগমের বাসায় দুইমাস থাকলেও ভাড়া না দিয়েই চলে যায় বগুড়ার জামাল ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাহিদ নামে দুই প্রতারক।

এব্যাপারে ঘটমাঝি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক অরুণ কৃষ্ণ রায়, ‘আমাকে কিছু কাগজপত্র দেখিয়েছে তারা। সরকারি দপ্তরের অনুমতি নিয়েই দর্জির কাজ শিখাবেন। সেজন্য আমি একটি কক্ষ দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা যে প্রতারক, তা বুঝতে পারেনি। ফলে কিছু মহিলা আমাকে জানিয়েছে তারা প্রতারণার শিকার হয়েছে।’

এবিষয়ে পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘এমন ঘটনায় প্রতারকচক্রের তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তবে ঘটনার মূল হোতাদের এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে শীঘ্রই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এরা দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছে।’

Advertisement

সেলাই মেশিন প্রশিক্ষণের কার্যক্রমই নয়, বিদেশগামীদের প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে ঋণ প্রদানসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে এসব প্রাথমিক বিদ্যালয় বেছে নেয় প্রতারকচক্র। দীর্ঘদিন ধরে এমন কার্যক্রম করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে অভিযুক্তরা।